প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,২৬ জুন : বলদ গরু কিনে রাজ্য সড়কপথ দিয়ে হাঁটিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন এক পাইকের।সেই গরুটি যাতে একটু সাইড দিয়ে যায় তার জন্য সাইকেলে যেতে যেতেই বেল বাজিয়ে ছিলেন সাইকেল আরোহী । আর তাতেই মেজাজ চটে যাওয়ায় বেপরোয়া হামলা চালিয়ে সাইকেল আরোহীকে মারাত্মক ভাবে জখম করলো বলদ গরুটি। এমনটা জেনে সকলের অবাক হওয়াটাই স্বাভাবিক। কিন্তু বাস্তবেই রবিবার বেলায় এমন ঘটনা ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর মেমারি-তারকেশ্বর রাজ্য সড়কে । যে ঘটনার কথা শুনে কার্যত ভীত হয়ে পড়েছেন জামালপুরের সড়পথ যাত্রীরা ।
বলদ গরুর হামলা ও গুঁতোয় জখম ওই সাইকেল আরোহী যুবকের নাম অজয় দুর্লভ । বছর ২৩ বয়সী যুবকের বাড়ি জামালপুর ১ গ্রাম পঞ্চায়েত অধীন হাড়ালা গ্রামে ।পেশায় তিনি দিন মজুর ।অজয় জানিয়েছেন ,এদিন বেলা ১০ টা নাগাদ তিনি সাইকেলে চেপে বাড়ি থেকে বের হন।কাজের ব্যাপারে এক ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলার জন্য তিনি জামালপুর যাচ্ছিলেন।ওই সময়ে এক পাইকের বিশাল দেহী একটি বলদ গরু ও আরো একটি গরু সঙ্গে নিয়ে মেমারি-তারকেশ্বর রোড ধরে হেঁটে খানিক দূরের সেলিমাবাদ গ্রামের দিকে যাচ্ছিলেন।বলদ গরুটি এদিক ওদিক করতে করতে গোটা রাজ্য সড়ক পথ ধরে নবাবি মেজাজে যাচ্ছিল।অজয় বলেন,বলদ গরুটির পাশ কাটিয়ে তিনি যাতে হাড়ালা মোড় থেকে জামালপুরের দিকে যেতে পারেন তাই বলদ গরুটির সামনে সাইকেলের বেল বাজিয়ে ছিলেন । তাতেই মেজাজ চটে যাওয়ায় বিশাল দেহী ওই বলদ গরুটি তাঁর উপর চড়াও হয় । পথেই তাঁকে এলোপাথাড়ি গুঁতোতে শুরু করে । বলদ গরুটি গুঁতিয়ে তাকে সাইকেল থেকে সড়ক পথের উপরে ফেলে দেয় ।
তার পরেও গুঁতানো বন্ধ হয়নি । অজয় জানান ,বলদ গরুর গুঁতোয় তাঁর ডান হাত ও মাথায় গুরুতর চোট লাগে। ঘটনাস্থলে থাকা লোকজন কোনরকমে বলদ গরুটির বেপরোয়া হামলার হাতথেকে তাঁকে রক্ষা করেন। তাঁরাই রক্তাত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে জামালপুর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যান ।সেখানে তাঁর ডান হাতের ক্ষতয় ৬ টি ও মাথায় ৪ টি সেলাই করে চিকিৎসকরা রক্তক্ষরণ বন্ধ করেন। গরু পাইকের অবশ্য এই ঘটনার জন্য শুধু দুংখ প্রকাশ করেই দায় সেরেছেন ।
এই ঘটনার পর হাড়ালা গ্রামের বাসিন্দারা দাবী করেছেন,দিনের বেলায় গরুর নিয়ে পাইকেরদের সড়ক পথ ধরে যাতায়াত বন্ধ করুক প্রশাসন । নয়তো এমন ঘটনার হাত থেকে পথচারীদের রেহাই মিলবে না।এদিন সড়ক পথে বলদ গরুর হামলা সত্ত্বেও অজয় দুর্লভ বরাত জোরে প্রাণে বেচে গিয়েছেন। স্কুলের কোন বচ্চা ছেলে-মেয়ে যদি এমন বলদ গরুর হামলার শিকার হত তাহলে হয়তো তাঁকে প্রাণেই বাচানো যেত না। এই দাবীর বিষয়ে কি পদক্ষেপ নেওয়া নেওয়া যায় সেই ব্যাপারে প্রশাসনের কর্তারা ভাবনা চিন্তা শুরু করেছেন ।।