দিব্যেন্দু রায়,কাটোয়া(পূর্ব বর্ধমান),২৬ জুন : ঋনের ফাঁদ থেকে রেহাই পেতে চালে দেওয়ার কীটনাশক ট্যাবলেট খেয়ে নিয়েছিলেন এক গৃহবধু । ট্যাবলেটের প্রতিক্রিয়ায় বমি শুরু হতেই প্রাণে বাঁচতে চেয়ে তিনি ছুটে আসেন পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে । কিন্তু হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই রাস্তায় উলটে পড়েন তিনি । ক্রমাগত বমি চলতে থাকে । ওই অবস্থায় তিনি কোন রকমে নিজের ভাইঝিকে ফোনে ঘটনার কথা খুলে বলেন । ভাইঝি তৎক্ষনাৎ ছুটে এসে পিসিমাকে হাসপাতালে ভর্তিও করেন । কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি । কেতুগ্রাম থানার বন্দর গ্রামের বাসিন্দা কাবেরি সর্দার (৩৪) নামে ওই গৃহবধুর মৃতদেহটি রবিবার ময়নাতদন্তের পর পরিবারের হাতে তুলে দেয় পুলিশ । গৃহবধুর এই প্রকার মর্মান্তিক পরিনতিতে শোকস্তব্ধ পরিবার পরিজন । শোকের ছায়া গ্রামজুড়ে ।
জানা গেছে,কেতুগ্রাম থানার বন্দর গ্রামের বাসিন্দা কাবেরি সর্দারের স্বামী কেষ্ট সর্দার হায়দ্রাবাদে রাজমিস্ত্রীর কাজ করেন । তাঁদের ১৪ বছরের একটি কন্যাসন্তান রয়েছে । মেয়েকে নিয়ে থাকতেন কাবেরিদেবী । কাবেরিদেবী ও তাঁর ভাইঝি মিনাক্ষীদেবী মিলে কাটোয়া শহরের বেশ কয়েকটি বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করতেন । মিনাক্ষী দেবী বলেন, শনিবার বিকেল নাগাদ পিসিমা আমাকে নিজেই ফোন করে জানান তিনি চালে দেওয়া ট্যাবলেট খেয়েছেন । তারপর আমি ফোন পেয়ে ছুটে যাই । কাটোয়া হাসপাতালের সামনে কাছারি রোডে এসে দেখি পিসিমা রাস্তার পাশে শুয়ে পড়েছেন । ক্রমাগত বমি করে যাচ্ছেন উনি । আমি তাড়াতাড়ি পিসিমাকে হাসপাতালে ভর্তি করি । কিন্তু হাসপাতালে আনার কিছুক্ষণের মধ্যেই ওনার মৃত্যু হয় ।’ ঋণের বোঝা থেকে পরিত্রাণ পেতেই কাবেরিদেবী আত্মঘাতী হয়েছে বলে অনুমান তাঁর ভাইঝির ।
পরিবার সুত্রে খবর,সংসার চালাতে বেশ কয়েক জায়গায় চক্রবৃদ্ধি সুদে ঋণ করেছিলেন কাবেরিদেবী । কিন্তু পরিচারিকার কাজ করে সেই কিস্তি মেটাতে পারছিলেন না । ফলে সুদে আসলে প্রচুর টাকা হয়ে গিয়েছিল । এদিনে বেশ কিছুদিন ধরে তিনি হতাশায় ভুগছিলেন । আর তার ফলেই শেষ পর্যন্ত তিনি আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছেন বলে মনে করছেন মৃতার ভাসুর গোপাল সর্দার । পুলিশ একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে ।।