প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,১৭ জুন : এক সিভিক ভলান্টিয়ারের আধার কার্ড ও সই জাল করে অপরাধ চক্রের লোকজন খুলেছিল ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট।পূর্ব বর্ধমানের খণ্ডঘোষ থানায় কর্মরত সিভিক ভলেন্টিয়ারের নামে খোলা ওই অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে অবৈধ লেনদেন চালানোর অভিযোগে এক দুস্কৃতিকে গ্রেপ্তার করলো সিআইডি ।
ধৃতের নাম হাসান শেখ ওরফে ভালু । পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতার থানার ওড়গ্রামের সরকারপাড়ায় তার বাড়ি। ভাতার থানার সাহায্য নিয়ে সিআইডি বুধবার সন্ধ্যায় সবাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে । ধৃতের মোবাইল ফোনটি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। তার সঙ্গে আরও কয়েকজন জড়িত বলে ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জেনেছেন গোয়েন্দারা। বৃহস্পতিবার ধৃতকে পেশ করা হয় বর্ধমান আদালতে । তদন্তের প্রয়োজনে ধৃতকে ১৪ দিন হেফাজতে নেওয়ার জন্য আদালতে আবেদন জানান তদন্তকারী অফিসার শ্যামল শিকদার। সিজেএম ধৃতের ১০ দিনের সিআইডি হেফাজত মঞ্জুর করেছেন।
সিআইডি জানিয়েছে, যাঁর আধার কার্ড ও সই জাল করে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে তার নাম ইয়াসউদ্দিন মল্লিক । তিনি খণ্ডঘোষ থানার সিভিক ভলান্টিয়ার।গত ২১ এপ্রিল জনা চারেক লোক তার বাড়িতে যান। তাঁর অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠিয়েছে বলে তারা তাঁকে জানায়। তা শুনে আকাশ থেকে পড়েন ইয়াসউদ্দিন। বর্ধমানের কোনও ব্যাংকে তাঁর অ্যাকাউন্ট নেই বলে ইয়াসউদ্দিন তাদের জানিয়েদেন। পরেরদিন ব্যাংকে এসে ইয়াসউদ্দিন খোঁজখবর নেন। সেখানে গিয়ে তিনি জানতে পারেন, তাঁর আধার কার্ড এবং সই জাল করে অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে এবং তাতে লেনদেন করা হয়েছে। তা জানার পরই বর্ধমান থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ইয়াসউদ্দিন। বর্ধমান থানা প্রথমে তদন্ত শুরু করে। পরবর্তীকালে তদন্তভার সিআইডির হাতে যায়।
তদন্তে নেমে সিআইডি জানতে পারে, বর্ধমান থেকে অসমে লরিতে লোহা পাঠানো হচ্ছিল। মাঝপথে লোহা বোঝাই লরিটি গায়েব হয়ে যায়। লরি ভাড়া বাবদ নেওয়া টাকা ইয়াসউদ্দিনের অ্যাকাউন্টে জমা পড়ে। লোহা গায়েব করার ঘটনায় সিআইডি তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে। লোহা গায়েব করে লরির নম্বর প্লেট ও রং বদল করে দেওয়া হয়। এমনকি চেসিস নম্বরও পরিবর্তন করা হয়। লরির মালিক ও হাসান সহ কয়েকজন ঘটনায় জড়িত বলে জানতে পারেন গোয়েন্দারা। লোহা গায়েবের মামলায় ধৃত তিনজনকেই সিআইডি হেফাজতে নিয়েছে। ঘটনায় মোট ৪টি মামলা হয়েছে। সব কটি মামলারই তদন্ত করছে সিআইডি ।
সিআইডির এক অফিসার বলেন, চক্রটি পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমানের কয়েকটি জায়গায় একই কায়দায় লোহা ও অন্যান্য মালপত্র গায়েব করে দিয়েছে। মালপত্র হাতিয়ে নেওয়ার পর লরির রং ও নম্বর বদল করে তারা এতদিন কারবার চালিয়ে যাচ্ছিল। ধৃতকে হেফাজতে নিয়ে গ্যাংয়ের কারবারের বিষয়ে বিশদে জানার চেষ্টা করা হবে।।