দিব্যেন্দু রায়,আউশগ্রাম(পূর্ব বর্ধমান),১৪ জুন : মা’কে মাথা থেঁতলে খুন করে রাতভর মৃতদেহের পাশে বসে রইল মানসিক ভারসাম্যহীন ছেলে । চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমান জেলার আউশগ্রাম থানার ধনকুড়া গ্রামে । মঙ্গলবার সকালে গ্রামবাসীদের কাছ থেকে খবর পেয়ে মনি পাল (৪২) নামে ওই মহিলার রক্তাক্ত মৃতদেহটি উদ্ধার করে নিয়ে যায় আউশগ্রামের ছোড়া ফাঁড়ির পুলিশ । পাশাপাশি পুলিশ গ্রেফতার করেছে ঘাতক ছেলে অমর পালকে (২০) ।
জানা গেছে,ধনকুড়া গ্রামের বাসিন্দা পরিমল পাল ও মনিদেবীর একমাত্র সন্তান অমর । সপ্তম শ্রেণীতে পড়ার সময় থেকেই অমরের মানসিক সমস্যা দেখা দেয় । সেই কারনে তার আর পড়াশোনা হয়নি । পরিমলবাবু রাঁধুনীর কাজ করে কোনো রকমে সংসার চালিয়ে ছেলের চিকিৎসার খরচ জোটান । আগে ধনকুড়া গ্রামের ভিতরেই তিনি বসবাস করতেন । কিন্তু মাস খানেক আগে গ্রামের বাইরে নতুন বাড়িতে উঠে যান পরিমলবাবুরা । জানা গেছে,দিন কয়েক আগে একটি ট্যুরিস্টের দলের সঙ্গে ভিন রাজ্যে গিয়েছেন পরিমলবাবু । বাড়িতে ছিলেন তাঁর স্ত্রী ও ছেলে ।
জানা গেছে,পরিমলবাবুর বাড়ির সীমানা প্রাচীর নেই । এদিন সকালে কয়েকজন কৃষক মাঠে যাওয়ার সময় দেখতে পান ঘরের মেঝেতে পড়ে রয়েছে মনি পালের নিথর দেহ । তাঁর ক্ষতবিক্ষত মাথা থেকে বেড়িয়ে আসছে রক্তের স্রোত । আর মৃতার মাথার কাছেই বসে রয়েছে ঘাতক ছেলে । এই দেখে গ্রামবাসীরা পুলিশকে খবর দেয় । শেষে পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায় । গ্রেফতার করা হয় খুনি ছেলেকে ।
প্রাথমিকভাবে পুলিশের অনুমান,গভীর রাতের দিকে মায়ের মাথা ঘরের মেঝেতে ঠুঁকে ঠুঁকে খুন করেছে বদ্ধ উন্মাদ ওই যুবক । তবে প্রতিবেশীদের ঘরবাড়ি অনেকটা দুরে হওয়ায় মহিলার আর্ত চিৎকার কারোর কানে যায়নি । গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন, ইতিপূর্বেও মায়ের উপর বঁটি নিয়ে হামলা চালিয়েছিল অমর পাল । তখন পরিবারটি গ্রামের ভিতরে বসবাস করায় প্রতিবেশীরা ওই মহিলার প্রাণ বাঁচিয়েছিল । কিন্তু পরিবারটি লোকলায় থেকে সরে যাওয়ার কারনে এবার আর শেষ রক্ষা হলনা ।।