জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী,১৩ জুন : আবার সেবার জগতে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্হাপন করলেন নরেন্দ্রপুরের রত্না ‘মারিনা’ ঘোষ এবং এযুগের অত্যন্ত জনপ্রিয় চলচ্চিত্র, সিরিয়াল ও যাত্রা শিল্পী তথা সুপরিচিত সঙ্গীত শিল্পী রেশমা ঘোষ অর্থাৎ মা-মেয়ে জুটি প্রতিষ্ঠিত ‘গ্রেস এণ্ড গ্লোরি অব গড’ চ্যারিটেবল সোসাইটি। গত ৩ রা জুন লোকনাথ ব্রহ্মচারীর তিরোধান দিবস উপলক্ষ্যে কামালগাছিতে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে একশ জন দুস্থ মানুষের হাতে তাদেরই অনুরোধে বস্ত্র তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। দুস্থদের প্রত্যেকেই অন্ধ এবং এদের মধ্যে কেউ কেউ হাঁটতে পারে না। ফলে অনুষ্ঠানে উপস্থিত হন ষাট জন মানুষ। উপস্থিত পুরুষদের হাতে তুলে দেওয়া হয় ধুতি ও লুঙ্গি এবং মহিলাদের হাতে তুলে দেওয়া হয় শাড়ি। শুধু তাই নয় এইসব দুস্থ মানুষদের জন্য দ্বিপ্রাহরিক আহারের ব্যবস্থাও করা হয়। বস্ত্র ও খাবার পেয়ে মানুষগুলি খুব খুশি। প্রসঙ্গত গত চব্বিশ বছর ধরে এই জুটি কামালগাছিতে এই বিশেষ দিনে এইভাবেই দুস্থদের পাশে থেকে আসছেন।
আয়োজন করা হয়েছিল একশ জনের জন্য । অতিরিক্ত গরম ও অন্যান্য কারণে চল্লিশ জন আসতে পারেনি। মা-মেয়ে জুটি তাদের হতাশ করেননি। বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয় বস্ত্র ও কিছু শুকনো খাবার। অবশেষে গত ১২ ই জুন বস্ত্র বিতরণের কাজ শেষ হয়।
মাদার টেরিজার স্নেহধন্যা রত্না ‘মারিনা’ ঘোষ খুব অল্প বয়সে সেবার কাজ শুরু করেন। পরে তার সেবার সঙ্গী হয়ে ওঠেন কন্যা রেশমা। মানুষের সেবার লক্ষ্যে তারা গড়ে তোলেন ‘গ্রেস এণ্ড গ্লোরি অব গড’ চ্যারিটেবল সোসাইটি। গৃহ শিক্ষকতা করে যেটুকু উপার্জন করতেন তারই একটা অংশ মানুষের সেবায় ব্যয় করে তার পথ চলা শুরু হয়। মায়ের আদর্শে বেড়ে ওঠা রেশমাও তার আয়ের একটা বড় অংশ মানুষের সেবার কাজেই বিলিয়ে দেন। পরে সহৃদয় ব্যক্তিরাও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন।
রেশমাদেবী বলেন,’যখন রঙিন আলো ও হাজার হাজার মানুষের হাততালির সামনে স্টেজ পারফরম্যান্স করি তখন তার অনুভূতি একরকম। কিন্তু খোলা আকাশের নীচে যখন অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ায় তখন এক স্বর্গীয় আনন্দ লাভ করি। মুহূর্তের মধ্যে সমস্ত ক্লান্তি দূর হয়ে যায়। এ এক অন্য অনুভূতি। সামান্য অর্থ নিয়ে শুরু করলেও যেভাবে সহৃদয় মানুষ সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন তাতে আমরা সবার কাছে কৃতজ্ঞ ।’।