প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,১১ জুন : বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ডিরেক্টরকে অপহরণ করে মোটা টাকা মুক্তিপণ দাবি করার অভিযোগে গ্রেপ্তার হল দুই যুবক । ধৃতদের নাম তরিকত হোসেন মণ্ডল ওরফে রাহুল ও শওকত হোসেন মণ্ডল। তাঁদের বাড়ি পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রামের পুবারের শান্তিপাড়ায়।বর্ধমান থানার পুলিশ শুক্রবার সকালে আউশগ্রাম থানার গুসকরা বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে দুই অপহরণকারীকে গ্রেপ্তার করে । পুলিশ এদিনই দুই ধৃতকে পেশ করে বর্ধমান আদালতে।অপহরণকারী চক্রের বাকিদের হদিশ পেতে ও ধৃতদের বিষয়ে বিশদে জানতে তদন্তকারী অফিসার ধৃতদের ৭ দিন নিজেদের হেফাজতে নিতে চেয়ে আদালতে আবেদন জানান। সিজেএম ধৃতদের ৩ দিনের পুলিশি হেফাজত মঞ্জুর করেছেন ।
পুলিশ জানিয়েছে, কলকাতার বেহালার সরশুনা থানার সরকারহাট লেনের বাসিন্দা তরুণ কুমার দাস । তিনি একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ডিরেক্টর।বর্ধমান শহরের বিএল হাটি রোডেও সংস্থাটির অফিস রয়েছে । তরুণ দাস গত ৮ জুন বিএল হাটি রোডের অফিসে আসেন। অভিযোগ সেই সময়েই কয়েকজন তাঁকে অপহরণ করে নিয়ে চলে যায়। এরপর অপহরণকারীরা তাঁর বাড়িতে ফোন করে ৬০ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ চায়। টাকা না দিলে কোনও ভাবেই তরুণ দাসকে ছাড়া হবে না বলেও তার পরিবারের লোকজনকে অপরণকারীরা জানিয়ে দেয়।কিন্তু পরিবারের লোকজন টাকা না দেওয়ায় শুরু হয় তাঁর উপর অত্যাচার ।কয়েকবার ফোন করে তরুণবাবুর উপর চলা অত্যাচারের কথা তাঁর বাড়িতেও জানায় অপহরণকারীরা । এরপরই অপহৃতের দিদি গৌরী দে গোটা ঘটনার কথা জানিয়ে বর্ধমান থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগ পেয়ে মামলা রুজু করে তদন্তে নামে বর্ধমান থানা। শেষে মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে পুলিশ জানতে পারে, অপহৃতকে নিয়ে দুষ্কৃতিরা বীরভূমের বোলপুরে রয়েছে। সেখানে পুলিশ হানা দিলেও তাদের শূন্য হাতে ফিরতে হয় । পুলিশ পৌঁছানোর আগেই অপহরণকারীরা শান্তিনিকেতনে চলে আসে। সেখানেও পুলিশ যায়। তারই মধ্যে অপহরণকারীরা সেখান থেকে গুসকরা বাসস্ট্যান্ডে চলে আসে।অপহৃতকে নিয়ে ঝাড়খণ্ডে পালানোর পরিকল্পনা ছিল অপহরণকারীদের। তবে হাল ছেড়ে না দিয়ে পুলিশ গুসকরা বাসস্ট্যান্ডে পৌছে গিয়ে সেখান থেকেই দুই অপহরণকারী তরিকত হোসেন ও শওকত হোসেন মণ্ডলকে পাকড়াও করে । তাঁদের কাছ থেকে উদ্ধার হয় অপহৃত।
এদিকে এই অপহরণের ঘটনার তদন্ত চালাতে
গিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে পুলিশ। তাঁরা জানতে পেরেছেন, বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি মোটা টাকা কোর্স ফি নিয়ে ছাত্র ভর্তি করে। তারা কোর্স শেষে নিশ্চিত চাকরির আশ্বাস দিয়ে ছাত্র ভর্তি করতো।কিন্তু বহু ছেলেমেয়ে সংস্থা থেকে কোর্স সম্পূর্ণ করেও চাকরি পায়নি। ডিরেক্টরকে অপহরণের পিছনে এটি একটি কারণ হতে পারে বলে প্রাথমিক তদন্তে মনে করছে পুলিশ ।।