দিব্যেন্দু রায়,কেতুগ্রাম(পূর্ব বর্ধমান),০৯ জুন : পূর্ব বর্ধমান জেলার কেতুগ্রাম থানার কোজলসা গ্রামের গৃহবধু রেণু খাতুনের হাত কেটে নেওয়ার ঘটনায় আরও দু’জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ । পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতরা হল নৌসাদ সেখের ছেলে হাবিব শেখ এবং কালাম সেখের ছেলে আসরফ আলি । তাদের দু’জনেই মুর্শিদাবাদের ভরতপুর থানার তালগ্রামের বাসিন্দা । বৃহস্পতিবার ভোর প্রায় তিনটের দিকে বাড়ি থেকে তাদের পাকড়াও করে পুলিশ । ঘটনার দিন বধুর স্বামী শের মহম্মদ শেখকে ধৃতরা সাহায্য করেছিল বলে পুলিশ জানতে পেরেছে । ধৃতদের সুপারি দেওয়া হয়েছিল কিনা তা তদন্ত করে দেখছে পুলিশ ।
কেতুগ্রামের চিনিসপুর গ্রামের বাসিন্দা আজিজুল হকের পাঁচ মেয়ের ছোট রেণু । স্থানীয় কোজলসা গ্রামের বাসিন্দা সিরাজ শেখ ও মেহেরনিকা বিবির ছেলে শের মহম্মদ শেখ ওরফে সরিফুলের সঙ্গে ২০১৭ সালে রেণুর বিয়ে হয় । নার্সিং প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত রেণু খাতুন বিয়ের পর দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নার্সের চাকরিতে যোগ দেন । সম্প্রতি সরকারি হাসপাতালের নার্সের চাকরিতে তার নাম প্যানেল ভুক্ত হয় । কিন্তু বধুর স্বামী, শ্বশুর,শাশুড়ি চাইছিলেন না রেণু সরকারি চাকরি করুক । কারন তাদের সন্দেহ ছিল সরকারি চাকরিতে যোগ দেওয়ার পর আর সে স্বামীর ঘর করবে না । তাই তারা চাকরি না করার জন্য রেণুর উপর লাগাতার চাপ সৃষ্টি করে যাচ্ছিল । কিন্তু রেণুকে তারা কিছুতেই রাজি করাতে পারেনি ।
শেষে শনিবার রাতে ঘটে যায় সেই ভয়ঙ্কর ঘটনাটি । রেণু যখন শ্বশুর বাড়ির ঘরে অঘোরে ঘুমাচ্ছিল তখন তাঁর ডানহাতের কব্জিতে ধারালো অস্ত্রের কোপ বসিয়ে দিয়ে হাত কেটে নেয় স্বামী সরিফুল ।অভিযোগ এই নৃশংস কাজে সরিফুকে সঙ্গ দেয় তার বাবা মা ও দুই বন্ধু হাবিব শেখ ও আসরফ আলি । সরিফুলকে জেরা করে শেষে ওই দু’জনের হদিশ পায় পুলিশ ।
রেণু খাতুনের হাত কাটার জন্য হাবিব ও আসরফের সঙ্গে সরিফুলের কোনো আর্থিক লেনদেন হয়েছিল কিনা তা এখনও স্পষ্ট নয় । যদিও ধৃত দুই যুবক জানিয়েছে নিছক বন্ধুত্বের কারনে রেণুর হাত কাটার দিন তারা সরিফুলের সঙ্গ দিয়েছিল । তাদের এই দাবির পিছনে কতটা সত্যতা আছে তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ ।।