এইদিন ওয়েবডেস্ক, কাটোয়া,০৬ জানুয়ারী : ‘আজ সকালে চায় পে চর্চার সময় অনেক স্থানীয় মানুষের সঙ্গে আমি কথা বলেছি । সব জায়গায় একটাই আওয়াজ উঠছে, “টিএমসি যাচ্ছে বিজেপি আসছে ।” বুধবার সকালে পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়া শহরে দলের “চায় পে চর্চা” কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে বিশুদ্ধ বাংলা ভাষায় এমনই দাবি করলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সম্পাদক অরবিন্দ মেনন ।
তিনি বলেন, ‘বলা হয়, বাংলা যেটা আজ ভাবে সেটা পরের দিন ভাবে গোটা দেশ । কিন্তু এখন সেটা নেই । আজ বাংলা শিক্ষা,স্বাস্থ্যসহ সব দিকেই পিছিয়ে পড়েছে । এর পিছনে দীর্ঘ কম্যুউনিস্ট শাসন ও পরে টিএমসি শাসনই দায়ি । ওনারা সরকারে থেকেও সাধারন মানুষের জন্য কিছুই করেননি ।’
অরবিন্দ মেননের অভিযোগ, “বাংলার কৃষক, সাধারণ মানুষদের জন্য কেন্দ্র সরকারের সুযোগ সুবিধা রাজ্য সরকারের জন্য আমজনতার কাছে আসছে না । কেন্দ্রের অনুদান থেকে কাটমানি নেওয়া হচ্ছে । অথচ বাংলার কৃষকদের ভুল বোঝানো হচ্ছে। তাই বিজেপি সারা রাজ্য জুড়ে শুরু করেছে ”শুনো চাষি ভাই” কর্মসূচি ।’ এদিন দিল্লির কৃষক আন্দোলন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘কৃষকদের ভুল বোঝানো হয়েছে । সরকারের তরফ থেকে কৃষকদের সঙ্গে প্রতিনিয়ত কথা চলছে । শ্রীঘ্রই এই সমস্যা মিটে যাবে ।’
দেখুন ভিডিও :
এরপর রাজ্যের শাসকদলকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, ‘গাড়ির ড্রাইভার ভালো না হলে সেই গাড়িতে কেউ চাপতে ভরসা পাননা। তৃণমূল কংগ্রেসের ড্রাইভার পিসি ও ভাইপো । তারা ভালো ড্রাইভার নন । তাই ওই গাড়িতে এখন কেউ চড়তে চাইছে না।’ অরবিন্দ মেনন বলেন, ‘শুভেন্দু অধিকারী, মুকুল রায়,শোভন চট্টোপাধ্যায়ের মত বড় বড় নেতারা তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে চলে এসেছেন । এটা ট্রেলার মাত্র । পরবর্তী কালে তৃণমূলের ডুবন্ত নৌকায় ২ জন লোক থাকবেন । পিসি আর ভাইপো ।’
তিনি বলেন, ‘সবাই জানে মমতা দিদির পর ভাইপো । কিন্তু আমাদের দলে ওসব নেই । অমিত শাহজীর পর জেপি নড্ডাজী হবেন কিনা আমরা কেউ নিশ্চিত নই । কারন বিজেপি কার্যকর্তা নির্ভর দল । দলের সবার সাথে আলোচনা করেই সব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।’
আগামী শনিবার ৯ জানুয়ারী কাটোয়ার মুস্থুলি গ্রামে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডার সভা রয়েছে । সেই সভার প্রস্তুতি দেখতে গত সোমবার কাটোয়ায় আসেন অরবিন্দ মেনন । ওই দিন তিনি সভাস্থল ঘুরে দেখেন । দলীয় নেতাদের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনা করেন । ফের মঙ্গলবার রাতে তিনি কাটোয়া শহরে আসে । রাতে তিনি কাটোয়ার গোয়েঙ্কা মোড়ে একটি লজে থাকেন ।এরপর এদিন সকাল ৭ টা নাগাদ গোয়ঙ্কা মোড় থেকে দলের কর্মীদের সঙ্গে হাঁটতে হাঁটতে কাছারি রোড, পৌরসভা মোড়, লেলিন সরণি হয়ে তেঁতুলতলায় আসেন । সেখানে একটি চায়ের দোকানে চায় পে চর্চা কর্মসূচিতে অংশগ্রহন করেন । অরবিন্দ মেননের সঙ্গে ছিলেন বিজেপির বর্ধমান পূর্ব (গ্রামীণ) সভাপতি কৃষ্ণ ঘোষ, সহ সভাপতি অনিল দত্ত,সাধারন সম্পাদক রানা প্রতাপ গোস্বামীসহ স্থানীয় নেতৃত্ব ।
চায়ে পে চর্চা কার্যক্রমে যোগ দিয়ে অরবিন্দ মেনন জানান, ৯ জানুয়ারি কাটোয়ার মুস্থুলি গ্রাম থেকে “শুনো চাষি ভাই” কর্মসূচিতে অংশগ্রহন করবেন দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা । ওই দিন তিনি ৮ – ১০ জন কৃষকের বাড়ি বাড়ি ঘুরে একমুঠো করে শষ্য সংগ্রহ করবেন । তাদের সঙ্গে কথা বলবেন।এছাড়া ওদিন এক কৃষকের বাড়িতে মধ্যহ্নভোজন সারবেন তিনি । পাশাপাশি তাঁর দাবি, ‘আজ পর্যন্ত যত সভা হয়েছে তার মধ্যে এটাই হবে সব থেকে বড় সভা । এই সভা ঘিরে সাধারন মানুষের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ রয়েছে ।’
এদিন চায় পে চর্চা দলীয় কর্মসূচি শেষে লজে ফিরে গিয়ে স্নান সেরে পূর্বস্থলীর উদ্দেশ্যে রওনা দেন অরবিন্দ মেনন । সেখানে পূর্বস্থলী দক্ষিণ ও মন্তেশ্বর বিধানসভা এলাকায় দলের কর্মকর্তাদের সঙ্গে তিনি বৈঠক করেন ।।