প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,২৬ মে : বাম আমলে খুন হওয়া তৃৃণমূল কর্মীর বৃদ্ধা মা ও দাদাকে খুনের হুমকি দেওয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তার হলেন এক ব্যক্তি। ধৃতের নাম শেখ শাহাদতুল্লাহ । তাঁর বাড়ি পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর থানার মরাবাঁধ গ্রামে । এই গ্রামের শহীদ তৃণমূল কর্মী ফেরদৌস রহমানের মা তহুরা পুরকাইতের দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে জামালপুর থানার পুলিশ বুধবার রাতে বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে । সুনির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করে পুলিশ বৃহস্পতিবার ধৃতকে পেশ করে বর্ধমান আদালতে।থানায় নিয়মিত হাজিরা দেওয়ার শর্তে বিচারক যদিও এদিন ধৃতের জামিন মঞ্জুর করেছেন । তবে শহীদ তৃণমূল কর্মীর বৃদ্ধা মা হুমকি দাতা শাহাদতুল্লাহ-র দৃষ্টান্ত মূলক সাজার দাবীতেই অনড় রয়েছেন ।
জামালপুর থানার জাড়গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রত্যন্ত গ্রাম জাড়গ্রাম।বাম আমলে ১৯৯৮ সালে সিপিএমের বাহিনীর হাতে খুন হন এই গ্রামেরই তৃণমূল কর্মী ফেরদৌস রহমান।তাঁর মা তহুরা পুরকাইত গত ২৩ মে প্রতিবেশী শেখ শাহাদতুল্লাহ-র বিরুদ্ধে জামালপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।বৃদ্ধার অভিযোগ, ওই দিন বাড়িতে তিনি একা ছিলেন ।বেলা আনুমানিক ১০ টা নাগাত তিনি তাঁর বাগানের নারকেল গাছের নারকেল পাড়াতে যান।তখন শেখ শাহাদতুল্লাহ সেখানে পৌছে গিয়ে তাঁকে কুকথা বলা শুরু করেই ধাক্কা মেরে ফেলে দেয় ।তার কারণে তিনি বুকে ও পায়ে চোট পান ।
তহুরা পুরকাইত পুলিশকে আরো জানিয়েছেন, শাহাদতুল্লাহ হুমকি দিয়ে তাঁকে বলেছে তাঁর ছেলে ফেরদৌসকে খুন করা হয়েছে ।একই ভাবে তাঁকে ও তাঁর বড় ছেলে শেখ জাহাঙ্গীর আলম কে খুন করবে বলেছে শাহাদতুল্লাহ । তা শুনে তিনি ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েন ।ওই অবস্থায় গ্রামের দুই যুবক তাঁকে উদ্ধার করে ঘরে পৌছে দেয় ।এই ঘটনার অনেকটা পর তাঁর বড় ছেলে কর্মক্ষেত্র থেকে বাড়ি ফিরলে তিনি তাঁর ছেলেকে নিয়ে জামালপুর হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা করিয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।বৃদ্ধার বক্তব্য, ’হুমকির কথা শুনে তিনি খুব ভয় ও দুশ্চিন্তার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন’। জাহাঙ্গীর বলেন , ’কর্মসূত্রে তিনি বাইরে থাকেন । তাঁর বাবাও মারা গিয়েছেন ।বৃদ্ধা মা বাড়িতে একাই থাকেন ।প্রতিবেশীর হুমকির বিষয়ে জেনে তিনিও যথেষ্টই বিচলিত হয়ে পড়েছেন ।’ ধৃত ব্যক্তি যদিও দাবী করেছেন ,’তাঁকে মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসানো হয়েছে ।
জামালপুর থানার এক পুলিশ অফিসার বলেন
’বৃদ্ধার অভিযোগের ভিত্তিতে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে ।অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে এদিনই পেশ করা হয়েছে আদালতে। বৃদ্ধার দুশ্চিন্তার করার কোন কারণ নেই । পুলিশ সতর্ক রয়েছে ।’ জামালপুর ব্লক তৃণমূলের সভাপতি মেহেমেদ খাঁন বলেন,’তৃণমূল কংগ্রেস দল প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর জামালপুরে সিপিএমের সশস্ত্র বাহিনীর হাতে প্রথম খুন হন ফেরদৌস রহমান ।শহীদ হওয়া দলের এই একনিষ্ঠ কর্মীর পরিবারের পাশে রয়েছে গোটা দল এবং দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ।এই শহীদ পরিবারের সঙ্গে কোন অন্যায় হলে বরদাস্ত করা হবে না । অন্যায়কারী যেই হোক তাকে রেয়াত করা হবে না ।’।