এইদিন ওয়েবডেস্ক,বারাণসী,১৯ মে : উত্তরপ্রদেশের বারাণসীর জ্ঞানবাপী শ্রিংগার গৌরী সমীক্ষা চলাকালীন শিবলিঙ্গ পাওয়ার দাবিসহ বিভিন্ন বিষয়ে শুনানি হবে আজ । বুধবার সিভিল জজ সিনিয়র ডিভিশন রবি কুমার দিবাকরের কক্ষে তিন পক্ষের যুক্তিতর্ক শোনার পর আবেদনটি গ্রহণ করে আদালত । বুধবার বারাণসী আদালতে সমস্ত আইনজীবী ধর্মঘটে ছিলেন। এই কারণে চেম্বারে বসেই সব পক্ষের মতামত শুনেছেন বিচারক । বিচারক বৃহস্পতিবার (১৯ মে) শুনানির দিন ধার্য করেন । পাশাপাশি এদিন জরিপ প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য করা হয়েছে । এদিকে মঙ্গলবার গণমাধ্যমকর্মী ও আইনজীবীদের সঙ্গে সংঘর্ষের পর দেশ-বিদেশের ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সঙ্গে যুক্ত সাংবাদিকদের প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি । আদালত চত্বরের ছিল কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা ।
এর আগে সরকারি অ্যাডভোকেট সিভিল মহেন্দ্র প্রসাদ পান্ডে জ্ঞানবাপী কমপ্লেক্সে কৃত্রিম পুকুরটি সংরক্ষণের জন্য এবং উজুস্থলের কাছে টয়লেট অপসারণের জন্য একটি আদেশ পাস করার জন্য আবেদন করেছিলেন । মঙ্গলবার বাদী পক্ষের রেখা পাঠক, মঞ্জু ব্যাস, সীতা সাহুর পক্ষে স্থানীয় আদালতে আবেদন করা হয় যে, শিবলিঙ্গের স্থানে দর্শন-পূজার পাশাপাশি উজু স্থানে প্রাপ্ত শিবলিঙ্গের নিচে ও সামনে, নন্দী মহারাজের বেসমেন্টের উত্তর দিকে এবং পূর্বের নির্বাচিত দেয়াল ভেঙ্গে জরিপ করতে হবে । বিতর্কিত এলাকার বিভিন্ন স্থানে রাখা বাঁশ, ইট ও বালির ধ্বংসাবশেষ অপসারণ করে জরিপ করারও দাবি জানানো হয় ।
এই বিষয়ে বুধবার আঞ্জুমান ইন্তেজামিয়া মসজিদ কমিটির অন্য বিবাদীদের কাছে আপত্তি জানতে চেয়েছে আদালত । এখন বৃহস্পতিবার উভয়পক্ষের সাক্ষ্য-প্রমাণ ও যুক্তিতর্কের ভিত্তিতে আদালত গুরুত্বপূর্ণ কিছু সিদ্ধান্ত নিতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে ।
অন্যদিকে জ্ঞানবাপী মসজিদে জরিপের সময় যে শিবলিঙ্গের সন্ধানের কথা বলা হচ্ছে সেটিকে আদপে একটি ঝর্ণা বলে এক পক্ষের তরফে দাবি করা হচ্ছে । যদিও এই দাবি নস্যাৎ করে দিয়েছেন বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের আইআইটি-এর ম্যাটেরিয়াল সায়েন্স অ্যান্ড কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের অধ্যাপক আরএস সিং এবং সহযোগী অধ্যাপক চন্দন উপাধ্যায় । তাঁরা জানান, এটি নিশ্চিতভাবে একটি শিবলিঙ্গ ৷ শিবলিঙ্গের উপরে সাদা সিমেন্ট দিয়ে আবৃত করে ঝর্ণার মত দেখানো হয়েছে । আর প্রাচীন কালে বিদ্যুৎ ছিল না, ঝর্ণা চালানোর মত প্রযুক্তিও আবিষ্কার হয়নি ।
অধ্যাপক আরএস সিং বলেন, ‘কেউ যদি এটাকে ঝর্ণা বলে দাবি করে তাহলে তিনি চালিয়ে দেখিয়ে দিন । তখন এটাকে ঝর্ণা বলে মেনে নেবো । আর যদি এটা ঝর্ণা না হয় তাহলে অবশ্যই এটি শিবলিঙ্গ।’
পাশাপাশি তিনি জানিয়েছেন,শিবলিঙ্গের পাথরের কোনো রাসায়নিক বিশ্লেষণ করা হয়নি,তাই এটি পান্না কিনা তা সঠিকভাবে বলা সম্ভব নয়। এর রঙ দেখে মনে হচ্ছে এটি অনেক পুরানো এবং অনেক দিন ধরে জলেতে রয়েছে । তবে এই পাথরটি কী তা বলা মুশকিল । অধ্যাপক চন্দন উপাধ্যায় বলেন,’শিবলিঙ্গটি পান্না পাথরও হতে পারে । তবে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তদন্ত না হওয়া পর্যন্ত নিশ্চিত করে কিছু বলা যাবে না ।’।