এইদিন ওয়েবডেস্ক,মঙ্গলকোট,০২ ডিসেম্বর : প্রথমে গাছের মগডাল থেকে মানুষের হাতের দিকে তীক্ষ্ণ নজর রাখা । তারপর পথচারী,টোটোর যাত্রী বা বাইক-সাইকেলের সওয়ারীর কাছে ফলমূল, শাক-সবজিসহ চকলেট,বিস্কুট প্রভৃতি খাদ্য সামগ্রী দেখলেই গাছ থেকে সন্তর্পনে নেমে এসে ক্ষিপ্রগতিতে ছিনিয়ে নেওয়াটাই খাদ্য সংগ্রহের সহজ উৎস হয়ে গিয়েছিল মঙ্গলকোট থানার চৈতন্যপুর গ্রামের এক বীর হনুমানের । গ্রামবাসীরা তার এই ‘উৎপাত’কে মেনেও নিয়েছিলেন ।
কিন্তু ইদানিং সে হিংস্র হয়ে উঠেছিল । ছিনতাইয়ের পাশাপাশি কামড়ে হাঁচড়ে গ্রামবাসীদের ঘায়েল করে দিচ্ছিল । ফলে আতঙ্কের পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে চৈতন্যপুর গ্রামে । হনুমানের আতঙ্কে বাচ্ছা ছেলেমেয়ে ও মহিলারা বাড়ি থেকে একপ্রকার বের হওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন । তাই শনিবার হনুমানটিকে খাঁচা বন্দি করার উদ্দেশ্যে গ্রামে আসে বনদফতরের লোকজন ৷ তাঁরা বানরটিকে ধরবার জন্য যতবার কলা, বিস্কুট প্রভৃতি টোপ দেন ততবারই সেগুলি নিয়ে চম্পট দেয় ধুর্ত হনুমানটি । এদিন বিকেল পর্যন্ত বনদপ্তরের লোকজন হনুমানটিকে খাঁচা বন্দি করতে সক্ষম হয়নি বলে স্থানীয় সুত্রে খবর ।
স্থানীয়রা জানিয়েছে, দিন দশেক আগে চৈতন্যপুর গ্রামে আবির্ভাব হয় ওই বীর হনুমানটির । মুলত তখন থেকেই বাড়ি বাড়ি ঢুকে ছিনিয়ে খেতে শুরু করে । গ্রামবাসীরা সতর্ক হয়ে গেলে বাড়িতে ঢুকে ছিনতাই বন্ধ হয়ে যায় । তারপর থেকে রাস্তার লোকজনদের হাত থেকে খাদ্য সামগ্রী কেড়ে নিতে শুরু করে হনুমানটি ।
স্থানীয় বাসিন্দা সায়ন মুখোপাধ্যায় বলেন, ” দিন পাঁচেক ধরে আক্রমনাত্মক হয়ে উঠেছে হনুমানটি ।পথ চলতি মানুষের হাত থেকে শাক শব্জিসহ খাদ্য সামগ্রী কেড়ে নেওয়ার পাশাপাশি মানুষদের উপর হামলাও চালাতে শুরু করে দিয়েছে । ইতিমধ্যে প্রায় ৮ জনকে কামড়ে আঁচড়ে আহত করেছে ওই হনুমানটি । তাঁদের মধ্যে কয়েকজনের জখম
গুরুতর ।’
জানা গেছে,ক্রমাগত এই হামলার জেরে কৈচর ফাঁড়ির পুলিশ ও বনদফতরের দ্বারস্থ হন গ্রামবাসীরা । এরপর এদিন সকালে বনদপ্তরের কর্মীরা চৈতন্যপুর গ্রামে আসেন হনুমানটিকে খাঁচা বন্দি করতে । কিন্তু তাঁদের কার্যত নাকানিচোবানি খাইয়ে দেয় ধুর্ত হনুমানটি । এদিন বিকেল পর্যন্তও হনুমানটিকে খাঁচা বন্দি করতে পারেনি বনকর্মীরা । এদিকে গ্রামবাসীরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন কখন ” মূর্তিমান আপদ বিদায়” হবে ।।