জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী,গুসকরা(পূর্ব বর্ধমান),১৭ মে : অতীতের মত এবারও গরমের প্রকোপ বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন ব্লাড ব্যাঙ্কে দেখা দিয়েছে রক্তের ঘাটতি। পরিস্থিতি সামাল দিতে এগিয়ে এল পূর্ব বর্ধমান জেলার গুসকরা পুলিশ বিট হাউস। মূলত তাদের উদ্যোগে ১৭ ই মে গুসকরা পুলিশ বিট হাউস চত্বরে কেবলমাত্র মহিলাদের নিয়ে এক রক্তদান শিবির অনুষ্ঠিত হয়। বর্ধমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কের সহযোগিতায় শিবির থেকে ৭০ ইউনিট রক্ত সংগ্রহ করা হয়। প্রয়োজনীয় ‘কিট’-এর অভাবে অন্তত কুড়ি জন মহিলা রক্ত দিতে না পেরে বিষণ্ন মনে ফিরে গ্যাছেন। যদিও ওসি অরুণ সোম দ্রুত আরও একটি রক্তদান শিবিরের আয়োজন করার আশ্বাস দিলে তারা খুশি হন। সংগৃহীত রক্ত ব্লাড ব্যাংক শাখার হাতে তুলে দেওয়া হয়। প্রসঙ্গত এই প্রথম শুধু মহিলাদের নিয়ে কোনো রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হয় এবং শিবিরের সফলতা নিয়ে উদ্যোক্তাদের মনে আশঙ্কা ছিল প্রচুর এবং শেষ পর্যন্ত তাদের আশঙ্কাকে ভুল প্রমাণিত হয়। মুমূর্ষু সন্তানদের বাঁচানোর জন্য এগিয়ে আসেন মায়েরা ।
এতদিন যেকোনো রক্তদান শিবিরে হাতে গোনা দু’চারজন মহিলা রক্তদান করতে এগিয়ে আসতেন। সমস্ত জড়তা বা ভীতি কাটিয়ে একসঙ্গে এতজন মহিলার স্বেচ্ছায় রক্তদান করাটা ছিল যথেষ্ট অভিনব ঘটনা। সবচেয়ে বিষ্ময়ের ব্যাপার ও.সি-র অনুরোধকে কার্যত উপেক্ষা করে উপবাস সত্ত্বেও প্রায় চল্লিশ জন মহিলা রক্তদান করেছেন। উদ্যোক্তাদের আশা এই ঘটনা নজির হয়ে থাকবে এবং ভবিষ্যতে আরও বেশি সংখ্যক মহিলা স্বেচ্ছায় রক্তদান করতে এগিয়ে আসবে।
রক্তদাতাদের উৎসাহিত করার জন্য শিবিরে উপস্থিত ছিলেন স্হানীয় বিধায়ক অভেদানন্দ থান্ডার, আউসগ্রাম -১নং ব্লকের বি.ডি.ও অরিন্দম মুখোপাধ্যায় ও যুগ্ম বি.ডি.ও বিশ্বজিৎ দাস, গুসকরা পৌরসভার চেয়ারম্যান কুশল মুখার্জী ও ভাইস চেয়ারম্যান মাননীয়া বেলি বেগম সহ সমস্ত কাউন্সিলর, বিশিষ্ট সমাজসেবী মলয় পিট, সালেক রহমান, অরূপ সরকার এবং জেলা পুলিশ সুপার কামনাশীষ সেন, ডি.এস.পি (ডি এণ্ড টি) বীরেন্দ্র পাঠক, আউসগ্রাম থানার আই.সি উত্তম মণ্ডল, গুসকরা বিট হাউসের ও.সি অরুণ সোম সহ অন্যান্য পুলিশ আধিকারিকরা এবং সিভিক ভলাণ্টিয়াররা।
এই রক্তদান শিবিরের আয়োজন করার জন্য রক্তদাতাদের সঙ্গে সঙ্গে উদ্যোক্তাদের ধন্যবাদ জানিয়ে পুলিশ সুপার বলেন – যেভাবে নিজেদের দৈনন্দিন কর্তব্য পালন করে পুলিশ আধিকারিকরা এই শিবিরের আয়োজন করেছে তা সত্যিই প্রশংসনীয়। একইসঙ্গে রক্তদান করতে আসা মহিলাদের প্রশংসা করতে তিনি ভোলেননি ।
বিধায়ক বলেন,’আজ আমার এলাকার পুলিশ ও রক্তদানকারী মায়েদের জন্য গর্ব হচ্ছে। আশাকরি ভবিষ্যতেও গর্ব করার মত আরও অনেক বিষয়ের সাক্ষী থাকতে পারব ।’।