এইদিন ওয়েবডেস্ক,চাঁদপুর(বাংলাদেশ),১৭ মে : সদ্য গত বছরে ঠাকুমা গত হয়েছেন । মন খারাপ নাতি নাতনিদের । তাই তারা দাদুকে ফের বিয়ে করার জন্য চেপে ধরে । প্রথম দিকে একটু নিমরাজি হলেও শেষ পর্যন্ত বিয়েতে সম্মতি দিয়ে দেন তাঁদের দাদু বাংলাদেশের চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি তথা পুরসভার প্রাক্তন কমিশনার ফনিভূষণ মজুমদার তাপু ৷ সোমবার (১৬ মে) রাতে উপজেলার সাচার জগন্নাথ ধাম মন্দিরে গিয়ে ছেলে,পুত্রবধু,সন্তান ও নাতি-নাতনিদের উপস্থিতিতে সাত পাকে বাঁধা পড়েন তিনি । বছর সত্তরের বৃদ্ধ ফনিভূষণ মজুমদারের সঙ্গে কুমিল্লা শহরের বাসিন্দা বছর চল্লিশের শিউলী রানীর বিয়ে ঘিরে এলাকাবাসীর কৌতুহলের অন্ত ছিল না । বিয়ে দেখতে শতাধিক মহিলা-পুরুষ জগন্নাথ ধাম মন্দিরে গিয়ে ভিড় জমিয়েছিলেন । বিশেষ করে অল্প বয়সী ছেলেমেয়েদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মত ।
কচুয়া পৌরসভার কড়ইয়া গ্রামে বাড়ি ফনি ভূষণ মজুমদার তাপু নামে ওই বৃদ্ধের । তাঁর দুই ছেলে ও এক মেয়ে । সকলের বিয়ে হয়ে গেছে । এমনকি বিবাহ উপযোগী হয়ে গেছেন নাতি নাতনিরাও । ফনিভূষণবাবুর ছেলে ও বউমারা পেশায় চিকিৎসক । গত বছর করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় তাঁর স্ত্রী আলো রানীর ।
ফনি ভূষণবাবুর নাতি অর্ঘ মজুমদার বলেন, ‘আমাদের বাবা-মা চিকিৎসক হওয়ায় সর্বদা নিজের কাজে ব্যস্ত থাকেন তাঁরা । ফলে ঠাকুমা মারা যাওয়ার পর দাদু ও আমরা খুব একা হয়ে পড়েছিলাম । তাই দাদুকে ফের বিয়ে করার জন্য চেপে ধরেছিলাম । প্রথম দিকে দাদু রাজি হননি । কিন্তু পরে সম্মতি দেন ।’
জানা গেছে,ফনিভূষণবাবু সম্মতি দেওয়ার পর তাঁর নাতি নাতনিরা যোগ্য পাত্রীর সন্ধান শুরু করে দেয় । শেষে তাঁরা কুমিল্লা শহরের বাসিন্দা শিউলি রানীর কথা জানতে পারেন । তারপর শিউলিদেবীর সম্মতি নিয়ে তাঁর ছবি দেখানো হয় ফনিভূষণবাবুকে । ছবি দেখেই তাঁর পছন্দ হয়ে যায় । সোমবার কচুয়া পৌরসভার কড়ইয়া গ্রাম থেকে একাধিক গাড়িতে ছেলে,পুত্রবধু,নাতিনাতনি ও তাঁদের বন্ধুবান্ধবদের নিয়ে জগন্নাথ ধাম মন্দিরে গিয়ে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন । বিয়েতে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল রাজনৈতিক সামাজিক ব্যাক্তিত্ব, সাংবাদিক ও আত্মীয় স্বজনদের । হিন্দু রীতি অনুযায়ী বিয়ের পর বরকনে বাড়ি ফিরে আসেন । রাতে প্রীতি ভোজের আয়োজন করা হয় । ফনিভূষণবাবু বলেন, ‘স্ত্রী মারা যাওয়ার পর খুব একা হয়ে গিয়েছিলাম । তাই নাতিনাতনিরা বিয়ে করার প্রস্তাব দিলে তাতে সম্মত হই ।’।