এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,১৬ মে : কয়েকজন মহিলা ও শিশু রাস্তার পাশে বসে আছে। তাদের হাতে প্লাকার্ড । তাতে লেখা,’কালিয়াচক থানার আইসি আমাদের মুসলিম হতে বলছে এবং বিভিন্নভাবে চাপ দিচ্ছে যাতে আমরা মুসলিম হই । আমরা আমাদের ধর্ম পরিবর্তন করতে চাই না ।’ মহিলা ও শিশুদের পিছনের দেওয়ালে টাঙানো ব্যানারে লেখা হয়েছে ধর্মান্তকরনের জন্য আইসি ‘মারধর’ ও ‘গ্রেফতার করছে’ । সোশ্যাল মিডিয়ায় বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের পোস্ট করা ওই ছবি ঘিরে আলোড়ন পড়ে গেছে গোটা দেশ জুড়ে ।
ওই ছবির সাথে সুকান্ত মজুমদার লিখেছেন, ‘পশ্চিমবঙ্গের মালদা জেলার কালিয়াচক থানার IC সাহেব এলাকার কিছু গরীব হিন্দু পরিবারকে জোরপূর্বক ধর্ম পরিবর্তনের জন্য ক্রমাগত চাপ দিচ্ছে, এরই প্রতিবাদে ধর্ণায় বসেন উক্ত পরিবারের মহিলা এবং শিশুরা। তাদের আরো অভিযোগ তাদের পরিবারের পুরুষ সদস্যদের গ্রেফতার করে ধর্ম পরিবর্তনের চাপ দেওয়া হয়। এছাড়াও ওই এলাকায় পূর্বে দুজন হিন্দুকে বলপূর্বক ধর্মান্তরিত করা হয়েছে।
গনতান্ত্রিক দেশ ভারতবর্ষ সংবিধান অনুসারে চলে এবং সংবিধানের ২৫ নং অনুচ্ছেদ ভারতের প্রত্যেকটি নাগরিককে তার ধর্ম পালনের স্বাধীনতা দিয়েছে। সেই স্বাধীনতা রক্ষা করার দায়িত্ব রাষ্ট্রের অর্থাৎ ক্ষমতায় বসে থাকা সরকারের। সেখানে একজন সরকারি পুলিশ অফিসার যিনি থানার ইন্সপেক্টর তিনি কিভাবে ধর্মান্তরিত হবার জন্য কোনো মানুষকে চাপ দিতে পারেন? এটা পুরোপুরি শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
এরপর তিনি লেখেন, ‘পশ্চিমবঙ্গের মাটিতে চাকরি নেই, শিল্প নেই, সুশাসন নেই, বাক্ স্বাধীনতা নেই এছাড়াও নানান সমস্যা আছে তাই বলে সাধারণ মানুষের ধর্ম পালনের স্বাধীনতা টুকুও থাকবে না? এই ঘটনা চোখে আঙুল দিয়ে ভাবতে বাধ্য করছে তৃতীয়বারের ক্ষমতালাভের পর কিছু নিষিদ্ধ গোষ্ঠী ক্ষমতার অলিন্দে থেকে মুখোশের আড়ালে তাদের স্বার্থ কায়েম করতে চাইছে না তো?
সরকারকে পশ্চিমবঙ্গের হিন্দু সম্প্রদায়ের সুরক্ষা সুনিশ্চিত করতে হবে। এই পরিবার গুলোর অভিযোগ প্রশাসনকে যথাযথ গুরুত্ব সহকারে দেখতে হবে এবং দোষী প্রমাণিত হলে অভিযুক্ত পুলিশ অফিসারকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করতে হবে। না হলে আগামীদিনে বিজেপি পথে নেমে এর প্রতিবাদ করবে ।’
বিজেপির রাজ্য সভাপতির পাশাপাশি বিজেপি নেতা তথাগত রায় আরডিডবলু (রাষ্ট্র এন ধর্ম ওরিয়র)-এর একটি টুইটকে রিটুইট করেছেন । তাতে লেখা আছে, ‘কালিয়াচকে এখন মাত্র 10% হিন্দু বাকি, কতদিন থাকবে? ধর্মপরিবর্তন ইতিমধ্যেই ঘটছে এবং তার সমর্থন করছে রাজ্যের শাসকদল এবং এজেন্সিগুলি ৷ ইসলামপন্থীদের তুষ্টি এবং হিন্দু বাঙালিদের নীরবতা এবং নিষ্ক্রিয়তা বাংলার দুঃখজনক পরিণতি ডেকে আনছে। হিন্দি বাংলা নয় হিন্দু বেছে নিন ।’ পাশাপাশি আরও একটি টুইটে তথাগত রায় লিখেছেন,’যে জাতি (এক্ষেত্রে বাঙালি হিন্দু) নিজের নির্যাতনের ইতিহাস ভুলে গিয়ে বিশ্বপ্রেমের হাপু গায় তাদের কপালে এই-ই অবশ্যম্ভাবী ।’ তবে কালিয়াচক থানার অভিযুক্ত আইসির এই বিষয়ে কোনো মতামত পাওয়া যায়নি ।।