বৌদ্ধধর্ম সম্পর্কে সংস্কৃতে আমরা দুইটি শব্দ পাই : একটি—‘ধর্ম,অপরটি—‘সংঘ। ইহা খুবই বিস্ময়কর যে, শ্রীকৃষ্ণের শিষ্য ও বংশধরগণের অবলম্বিত ধর্মের কোন নাম নাই, (যদিও) বিদেশীরা ইহাকে হিন্দুধর্ম বা ব্রাহ্মণ্যধর্ম বলিয়া অভিহিত করেন। ধর্ম’ এক তবে সম্প্রদায়’ অনেক। যে মুহূর্তে তুমি ধর্মের একটি নাম দিতে যাও, ইহাকে স্বাতন্ত্র দিয়া অন্যান্য
ধর্ম হইতে পৃথক করিয়া ফেল, তখনই ইহা একটি সম্প্রদায়ে পরিণত হয়, তখন আর উহা ‘ধর্ম থাকে না; সম্প্রদায় শুধু নিজের মতটিই ( প্রচার করে ), ঘােষণা করিতে ছাড়ে না যে, ইহাই একমাত্র সত্য, অন্য কোথাও আর সত্য নাই। পক্ষান্তরে ‘ধর্ম বিশ্বাস করে যে, জগতে একটিমাত্র ধর্মই চলিয়া আসিতেছে এবং এখনও আছে। দুইটি ধর্ম কখনও ছিল না। একই ধর্ম বিভিন্ন স্থানে উহার বিভিন্ন দিক (উপস্থাপিত করিতেছে) । মানবজাতির লক্ষ্য এবং সম্ভাবনা সম্বন্ধে যথাযথ ধারণা করাই আমাদের কর্তব্য ।আমাদের দৃষ্টিকে স্বচ্ছ করিয়া উর্দ্ধে এবং সম্মুখে আগুয়ান মানবজাতিকে উদার দৃষ্টিতে দেখিতে শেখানই শ্রীকৃষ্ণের মহতী কীতি। তাহার বিশাল হৃদয়ই সর্বপ্রথম সকল মতের মধ্যে সত্যকে
দেখিতে পাইয়াছিল, তাহার মুখ হইতেই প্রত্যেক মানুষের জন্য সুন্দর সুন্দর কথা প্রথম নিঃসৃত হইয়াছিল ।