জয়দীপ মৈত্র,দক্ষিণ দিনাজপুর,০৬ মে : প্রণয় ঘটিত কারণে নাবালিকার পথ আটকে হেনস্থা কিশোর প্রেমিকের । কিশোরীর চিৎকারে পাশের ক্লাব থেকে ছেলেরা ঘটনাস্থলে ছুটে এলে তাদের লক্ষ্য করে গুলি চালিয়ে দেয় গুনধর প্রেমিক । গুলিবিদ্ধ হয় আরও এক কিশোর । বৃহস্পতিবার রাতে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বুনিয়াদপুরের এই ঘটনায় হুলুস্থুল পড়ে গেছে জেলা জুড়ে । পুলিশ রাতেই অভিযুক্ত কিশোর মানিক হালদার (২২)কে গ্রেফতার করেছে । উদ্ধার হয়েছে তার ব্যবহৃত পিস্তলটিও । শুক্রবার ধৃতকে গঙ্গারামপুর মহকুমা আদালতে তুলে নিজেদের হেফাজতে চেয়ে আবেদন জানিয়েছে পুলিশ । বিচারক ধৃতের পুলিশ হেফাজত মঞ্জুর করেছেন
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার রাত্রি প্রায় ৯টা নাগাদ টিউশন পড়ে বাড়ি ফিরছিল বুনিয়াদপুর পুরসভার ১নং ওয়ার্ড খুশিপুরের এক নাবালিকা। সেই সময়ই ২ নং ওয়ার্ড শেরপুর মসজিদ সংলগ্ন এলাকায় অন্ধকার রাস্তায় এলাকার কিশোর মানিক হালদার (২২) তার পথ আটকায় তার। এরপরই নাবালিকার সাথে বচসায় জড়িয়ে পড়ে ওই কিশোর। চিৎকার-চেঁচামেচিতে পার্শ্ববর্তী ক্লাব থেকে স্থানীয় ছেলেরা ছুটে আসে ।
তারা কিশোরীকে উদ্ধার করতে গেলে মনিক তাদের লক্ষ্য করে গুলি চালায় বলে অভিযোগ । ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয় এলাকার অপর এক কিশোর রাজা দাস (২০)। তাকে তড়িঘড়ি প্রথমে রশিদপুর গ্রামীণ হাসপাতাল, পরবর্তীতে গঙ্গারামপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। যদিও অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় রাতেই গুলি বিদ্ধ কিশোরকে মালদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয় । এদিকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে এসে অভিযুক্ত মানিক হালদারকে গ্রেফতার করে বংশীহারী থানার পুলিশ। পাশাপাশি শেরপুর এলাকায় রাস্তা সংলগ্ন বাঁশঝাড় থেকে উদ্ধার হয় ঘটনায় ব্যবহৃত একটি পিস্তল।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে ওই কিশোরীর সাথে প্রেমের সম্পর্ক ছিল মানিক হালদারের। সম্পর্কের টানাপোড়নের জেরেই সে এমন ঘটনা ঘটিয়েছে বলে অনুমান । অবশ্য নাবালিকার পরিবারের দাবি প্রেম নয়, বেশ কিছুদিন ধরেই ওই অভিযুক্ত কিশোর এমনিতেই উত্ত্যক্ত করতো নাবালিকাকে।বেশ কয়েক মাস আগে দিল্লি থেকে এসে, অভিযুক্ত কিশোর নাবালিকার বাড়ির পাশেই মামার বাড়িতে থাকছিল । অভিযুক্ত কিশোরের বাড়ি কুশমন্ডি থানার ছাইতান এলাকায়। তার বাবা-মা কর্মসূত্রে দিল্লীতে থাকেন বলে জানা গেছে ।
গতকাল রাতেই এমন ঘটনা চাউর হতেই এলাকা জুড়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। পাশাপাশি রাতের অন্ধকারের শহরের বুকে এমন গুলি কাণ্ডের ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে বিভিন্ন মহলে। যুবকের কাছে কোথায় থেকে আগ্নেয় অস্ত্র এলো তা জানতে ঘটনার তদন্তে নেমেছে বংশীহারী থানার পুলিশ।
শুক্রবার সকালে এনিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করেন বংশীহারী থানার আইসি মনোজিৎ সরকার। তিনি বলেন, “খুশিপুর এলাকায় একটি ছেলে ও মেয়ের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল, সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার পরেই গতকাল রাতে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে চড়াও হয় অভিযুক্ত কিশোর, এলাকাবাসীরা বাধা দিতে এলে অভিযুক্ত এক রাউন৬গুলি চালায় । গুলিবিদ্ধ হয় এ অপর এক কিশোর রাজা দাস(২০)। ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত চলছে।’।