এইদিন ওয়েবডেস্ক,ভাতার(পূর্ব বর্ধমান),০৬ মে : ত্রিকোন প্রেমের জেরে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হলেন পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতারের এক কলেজ ছাত্র । আত্মহত্যার আগে তিন পাতার সুইসাইড নোট ফেসবুকে পোস্ট করেন ওই যুবক । পুলিশ জানিয়েছে,মৃতের নাম শুভজিৎ দাস(২১) । তাঁর বাড়ি ভাতার থানার ওড়গ্রামের হাটতলায় । বৃহস্পতিবার গভীর রাতে বাড়িতে শোবার ঘরে ওই যুবককে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পায় পরিবারের লোকজন । ফাঁস কেটে নামিয়ে তড়িঘড়ি তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় । কিন্তু চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন । মৃতদেহের পাশ থেকে ৩ পাতার সুইসাইড নোট উদ্ধার হয়েছে । তাতে আত্মঘাতী হওয়ার পিছনে প্রেম ঘটিত কারন উল্লেখ রয়েছে । শুক্রবার মৃতদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ ।
শুভজিতের মেসোমশাই সীতারাম নাগ বলেন, ‘ওড়গ্রামের একটি তরুনীর সঙ্গে ভালোবাসার সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল শুভজিতের । কিন্তু সম্প্রতি অন্য এক যুবকের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন ওই তরুনী । বিষয়টি বুঝতে পেরে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিল শুভজিৎ । আমরা শুভজিৎকে অনেক বুঝিয়েছি । কিন্তু শেষ পর্যন্ত এমন একটা ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটিয়ে ফেলবে বুঝতে পারিনি আমরা ।’
পরিবার সুত্রে জানা গেছে,বুধবার রাতে যথারীতি খাবার খেয়ে নিজের ঘরে শুতে চলে যায় শুভজিৎ । রাত্রি প্রায় পৌনে একটা নাগাদ জানতে পেরে পরিবারের লোকজন ও প্রতিবেশীরা এসে ঘরের দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকে তাঁকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পায় । মৃতের সম্পর্কীয় দাদা অভিজিৎ দাস বলেন, ‘আত্মহত্যার আগে ৩ পাতার সুইসাইড নোট ফেসবুকে পোস্ট করেছিল শুভজিৎ । তার কোনও বন্ধুর নজরে পড়ে যায় ওই পোস্টটি । সঙ্গে সঙ্গে সে আমায় ফোন করে বিষয়টি জানায় । তারপর আমরা ছুটে শুভজিতের বাড়িতে যাই । কিন্তু তার আগে সব শেষ ।’
জানা গেছে,গুসকরা কলেজের স্নাতক পড়ুয়া ছিলেন শুভজিৎ দাস । তাঁরা এক ভাই ও এক বোন । দিদি সপ্তমিতা দাস এবছর স্নাতক পাশ করার পর স্থানীয় একটি এনজিওর অধীনে কাজ করছেন । ওড়গ্রামের হাটতলায় একটি মিষ্টান্নের দোকান চালাতেন তাঁদের বাবা সমীর দাস । কিন্তু ২০১৫ সালে সেরিব্রাল স্ট্রোকে মৃত্যু হয় সমীরবাবু । বর্তমানে মিষ্টান্নের দোকানটি তুলে দিয়ে সেখানে চায়ের দোকান চালিয়ে অতিকষ্টে সংসার চালান সমীরবাবুর স্ত্রী । হতদরিদ্র সংসার । আর এর মাঝে মর্মান্তিক এই ঘটনায় ভেঙে পড়েছেন পরিবারের লোকজন । শোকস্তব্ধ গ্রামবাসী ।।