এইদিন ওয়েবডেস্ক,জম্মু ও কাশ্মীর,২৮ এপ্রিল : ক্লাস চলাকালীন স্কুলের মধ্যে বোরখা পড়া নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে কাশ্মীরের বারামুল্লা জেলার একটি সেনা পরিচালিত স্কুল । এনিয়ে একটি সার্কুলারও জারি করেছে স্কুল কর্তৃপক্ষ । তাতে বলা হয়েছে, ‘শিক্ষার্থীরা যাতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করতে পারে এবং শিক্ষকদের সাথে যোগাযোগ করতে এগিয়ে আসতে পারে তার জন্য ক্লাস চলাকালীন হিজাব নিষিদ্ধ করা হল ।’ আর স্কুলের এই সার্কুলারের পরেই রীতিমতো খেপে গেছে জম্মু কাশ্মীরের রাজনৈতিক দলগুলি । বিরোধের জেরে শেষ পর্যন্ত সার্কুলারে কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে বলে জানিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ ।
বিশেষভাবে-অক্ষম শিশুদের জন্য উত্তর কাশ্মীরের বারামুল্লায় ওই স্কুলটি স্থাপন করেছে ভারতীয় সেনা । ড্যাগার পরিবার স্কুল (Dagger Parivar School) নামে ওই স্কুলটির পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে ইন্দ্রাণী বালান ফাউন্ডেশনের(Indrani Balan Foundation) নামে পূণের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা । গত ২৫ এপ্রিল স্কুল কর্তৃপক্ষ একটি সার্কুলেশন জারি করে জানায়, ‘পরিবার স্কুল হল আবেগ ও নৈতিকভাবে শেখার এবং বেড়ে ওঠার জায়গা । স্কুলের মূল উদ্দেশ্য হল প্রতিটি শিক্ষার্থীর পূর্ণ সম্ভাব্য বিকাশের ব্যবস্থা করা । এজন্য শিক্ষার্থীদের নিরাপদ এবং সুখী বোধ করার জন্য তাদের সাথে বিশ্বাস স্থাপন করতে হবে । তাই শিক্ষার্থীরা যাতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করতে পারে এবং শিক্ষক ও স্কুল কর্মীদের সাথে যোগাযোগ সহজ করতে পারে তার জন্য কর্মীদের স্কুল চলাকালীন হিজাব এড়াতে নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে ।’
এদিকে স্কুলের এই নির্দেশের পরেই তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এবং পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টি (পিডিপি) প্রধান মেহবুবা মুফতি । বুধবার তিনি এক টুইট বার্তায় বলেছেন,’আমি হিজাব নিয়ে স্কুলের এই সার্কুলার জারি করার নিন্দা করছি । জম্মু ও কাশ্মীর বিজেপি শাসিত হতে পারে, তবে এটি অবশ্যই অন্য কোনও রাজ্যের মতো নয় যেখানে তারা সংখ্যালঘুদের বাড়ি বুলডোজ করে এবং তাদের ইচ্ছামতো পোশাক পরার স্বাধীনতা দেয় না । আমাদের মেয়েরা তাদের বেছে নেওয়ার অধিকার ছাড়বে না ।’ এদিকে সার্কুলার নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হচ্ছে দেখে তাতে পরিবর্তন করে জানানো হয়,’স্কুলের স্টাফেরা শুধুমাত্র ক্লাসরুমে নেকাব (মুখ ঢেকে রাখা) এড়াতে বলা হয়েছে ।’
উল্লেখ্য,২০১৭ সালের অক্টোবরে সেনাবাহিনীর বারামুল্লা বিভাগ বিশেষভাবে প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য ড্যাগার পরিবার স্কুলটি চালু করেছে । ইন্দ্রাণী বালান ফাউন্ডেশন ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে স্কুলটি পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে । বিশেষভাবে অক্ষম শিশুদের জন্য উপযুক্ত শিক্ষার পরিবেশ গড়তে তুলতে কোনো কসুর করেনি স্কুল কর্তৃপক্ষ । রয়েছে উন্নত পরিকাঠামো । শিশুদের বিকাশের জন্য অনেক কার্যক্রম এবং থেরাপি রয়েছে । স্কুলের পাঠ্যক্রম তৈরি করা হয়েছে শিক্ষার্থীদের অক্ষমতার ধরন এবং ডিগ্রির কথা মাথায় রেখে । বিল্ডিংটি বিশেষভাবে-অক্ষমদের জন্য বন্ধুত্বপূর্ণ শৌচাগারসহ শিক্ষার্থীদের চাহিদামত ডিজাইন করা হয়েছে । বারামুল্লা জেলার দেড় শতাধিক পরিবার উপকৃত হচ্ছে এই স্কুলটি থেকে ।।