দিব্যেন্দু রায়,আউশগ্রাম(পূর্ব বর্ধমান),২৭ এপ্রিল : পেশা ছিল জনমজুরি এবং শাক শব্জির হকারি করা । কিন্তু উপপ্রধান হওয়ার পর জনমজুরির কাজ বন্ধ করে দিতে হয়েছে । তবে পরিবারের অন্ন সংস্থানের জন্য আজও সাইকেলে শব্জির ঝাঁকা নিয়ে গ্রামে গ্রামে ফেরি করতে হয় । ব্যাবসা শেষে পঞ্চায়েত অফিসে গিয়ে সারতে হয় অফিসের কাজকর্ম । পূর্ব বর্ধমান জেলার আউশগ্রাম ১ ব্লকের বেরেণ্ডা পঞ্চায়েতের উপপ্রধান বিশ্বনাথ সিংয়ের এই কঠিন জীবন সংগ্রাম আজ দৃষ্টান্তের সৃষ্টি করেছে এলাকায় ।
আউশগ্রাম ১ ব্লকের মাজেরগ্রামে বাড়ি বিশ্বনাথ সিংয়ের ৷ স্ত্রী মানবীদেবী এবং দুই ছেলেকে নিয়ে সংসার । বড় ছেলে রাণা প্রতিবন্ধী । ছোট ছেলে সায়ন নবম শ্রেণীতে পড়াশোনা করে । মাটির দেওয়াল আ্যসবেসটসের ছাউনি দেওয়া এক কামরার ঘরে অতিকষ্টে বসবাস করেন বিশ্বনাথবাবুরা । তিনি ২০১৮ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর ভোটে জিতে পঞ্চায়েতের উপপ্রধান হিসাবে দায়িত্ব পেয়েছেন ।
বিশ্বনাথবাবুর স্ত্রী মানবী সিং বলেন,’আগে আমার স্বামী জনমজুরির পাশাপাশি শব্জি বিক্রি করতেন । কিন্তু উপপ্রধান হওয়ার পর উনি শুধু শব্জি বিক্রি করেন । সংসার চালাতে আমাকে এখন মাঝে মধ্যে জনমজুরির কাজ করতে যেতে হয় ।’
পরিবার সুত্রে জানা গেছে,অনেক ভোরে ঘুম থেকে উঠতে হয় বিশ্বনাথবাবুকে । তারপর সাইকেল নিয়ে ছুটতে হয় গুসকরা শহরের শব্জির পাইকারি বাজারে । শব্জি কিনে ঝাঁকা ভর্তি করার পর তা সাইকেলের ক্যারিয়ারে লাগিয়ে গ্রামে গ্রামে ফেরি করেন বিশ্বনাথবাবু । ব্যবসা শেষে দুপুর নাগাদ তিনি বাড়ি ফেরেন । তারপর স্নান খাওয়া সেরে ফের ছোটেন প্রায় ১৪ কিমি দূরে পঞ্চায়েত কার্যালয়ে । আর তাঁর এই কঠোর জীবন সংগ্রাম এলাকায় নজির সৃষ্টি করেছে ৷ তৃণমূল কংগ্রেসের আউশগ্রাম ১ ব্লকের কার্যকরী সভাপতি প্রশান্ত গোস্বামীও বিশ্বনাথ সিংয়ের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়েছেন ।
কিন্তু স্থানীয় বাসিন্দারা প্রশ্ন তুলেছেন বিশ্বনাথবাবুর মাটির বাড়ি নিয়ে । স্থানীয়দের কথায়,পঞ্চায়েতের উপপ্রধানকেই যদি এক কামরার মাটির বাড়িতে অতিকষ্টে বসবাস করতে হয় তাহলে সাধারণ নাগরিকের কি পরিনতি হবে ?