নীল বনিক,নন্দীগ্রাম(পূর্ব মেদিনীপুর),২৯ ডিসেম্বর ঃ মঙ্গলবার নন্দীগ্রামে ধর্মীয় মিছিলে যোগ দিতে আসা বাসে হামলা চালালো দুষ্কৃতিরা । ভাঙচুরের পাশাপাশি যাত্রীদের বেদম মারধর করা হয় বলে অভিযোগ । এই ঘটনায় প্রায় ১৫ জন গুরুতর জখম হয়েছেন বলে খবর । আহতদের নন্দীগ্রাম সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে । এদিকে এই প্রথম নন্দীগ্রামে কোনও ধর্মীয় মিছিলে যোগ দিতে আসেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী । তিনি জানান, এফআইআর করা হবে । ‘হামলাকারী জেহাদিদের’ গ্রেফতার না করলে আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি দেন শুভেন্দু অধিকারী ।
নন্দীগ্রামে বিগত কয়েক বছর ধরে ধর্মীয় মিছিলের আয়োজন করছে বজরং কমিটি । এদিন সকাল সাড়ে এগারোটা নাগাদ শুভেন্দু অধিকারীর উপস্থিতিতে নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের টেঙ্গুয়া মোড় থেকে শুরু হয়ে জানকীনাথ মন্দিরের দিকে যায় এই মিছিল । শুভেন্দু অধিকারী ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলা সভাপতি নবারুন নায়েক । মিছিলে কয়েক হাজার বিজেপি কর্মী সমর্থক ও সাধারণ মানুষ মিছিলে পা মেলান । এদিকে মিছিলে যোগ দিতে দূরদূরান্ত থেকে বাসে করে মানুষকে আসতে দেখা যায় ।
স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, সোনাচূড়ার দিক থেকে একটি বাসে চড়ে বেশ কিছু মানুষ এই মিছিলে যোগ দিতে আসছিলেন । ভুতার মোড়ের কাছে আসতেই বেশ কয়েকজন দুষ্কৃতি বাসটিকে দাঁড় করিয়ে ভাঙচুরের পাশাপাশি বাস যাত্রীদের মারধরও করে বলে অভিযোগ । পুরুষ ও মহিলাদের পাশাপাশি শিশুদেরও মারধরের অভিযোগ উঠেছে । হামলায় প্রায় ১৫ জন জখম হয় । তাঁদের নন্দীগ্রাম সুপার স্পেশালিটি হাসপাতারে ভর্তি করা হয় । এই ঘটনার প্রতিবাদে টেঙ্গুয়া মোড়ে কিছুক্ষনের জন্য পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায় বজরং কমিটি ও বিজেপির কর্মী সমর্থকরা ।
মিছিল শেষে এদিন জানকীনাথ মন্দিরের সামনে আয়োজিত সভায় শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘ভুতার মোড়ে গাড়ি ভেঙেছে, ১৫ জন আহত হয়েছেন । আমার মনটা ওইদিকেই পড়ে আছে । আহতদের চিকিৎসা শুরু হয়েছে । এটা আমার উপরে ছেড়ে দিন । দলের নেতাদের বলে দিয়েছি এফআইআর করতে। যে জেহাদিরা এই কাজ করেছে তাদের গ্রেফতার করতে হবে । তা না হলে শুভেন্দু অধিকারী মানুষকে নিয়ে আন্দোলন করতে জানে ।’
এদিন ফের অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করেন শুভেন্দু অধিকারী । তিনি বলেন, ‘কয়েকদিন আগে দেখেছেন যাদের পেটে এখনও আমার ভাত আছে, তারা আমার ছবিতে কালি দিয়েছে । ওদের অপরাধ নেই । তোলাবাজ ভাইপোর অফিস থেকে বলছে এইগুলো কর । ছবি পাঠা ।’
এরপর তিনি বলেন, ‘আমি ওদের বলে দিই, ভোটের দিন আমি প্রমাণ করে দেব আমি নন্দীগ্রামের মানুষের কাছে আছি কি না। আর এসব করে লাভ নেই । এখানে কয়েকজন লোক ধর্ম করতে এসেছিলেন। তাঁরা বিজেপি কি তৃণমূল কি সিপিএম কি কংগ্রেস আমি জানি না। তারা আক্রান্ত হয়েছেন । এই আক্রমন আমরা মেনে নেব না।’
শুভেন্দু অধিকারীর বক্তব্য শুনুন :
উল্লেখ্য,আগামী ৭ জানুয়ারি নন্দীগ্রামে মুখ্যমন্ত্রীর জন সভা হওয়ার কথা ছিল। যদিও তা বাতিল করা হয়েছে । তবে তার আগেই ৮ তারিখে পালটা সভার ডাক দিয়েছিলেন শুভেন্দু । মুখ্যমন্ত্রীর সভা বাতিলের প্রসঙ্গে এদিন মুখ্যমন্ত্রীর নাম না করে শুভেন্দু বলেন, ‘অনেকে তো কর্মসূচি ঘোষণা করে পগার পার । বলছে পরে করবো । পরে করলে আমিও আবার সভা করবো ।’ পাশাপাশি তিনি ৮ তারিখের সভায় নন্দীগ্রামের ১৭ টি অঞ্চল থেকে এক লক্ষ মানুষের জমায়েত হওয়ার আহ্বান জানান।।