প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,১৬ এপ্রিল : চিকিৎসা গাফিলতিতে রোগী মৃত্যুর অভিযোগ তুলে ক্ষুব্ধ রোগী পরিজনারা হাসপাতালে চড়াও হলে তা রোখেন পুলিশ কর্মীরাই।এবার ঘটলো উলটপুরান কাণ্ড। গলব্লাডার স্টোন অপারেশনের জন্য পূর্ব বর্ধমানের বেসরকারী হাসপাতালে ভর্তি হওয়া পুলিশ কর্মীর মৃত্যুতে উঠলো চিকিৎসা গাফিলতির অভিযোগ । চিকিৎসা গাফিলতিতে এক তরুণ পুলিশ কর্মীর মৃত্যু হওয়ার ঘটনায় পুলিশ মহলেও ব্যাপক শোরগোল পড়ে গিয়েছে ।
পুলিশ জানিয়েছে ,মৃত পুলিশ কর্মীর নাম অভিষেক রায়(২৮)। রাজ্য পুলিশের চতুর্থ ব্যাটেলিয়নে কর্মরত এই পুলিশ কর্মীর বাড়ি হুগলী জেলার পাণ্ডুয়া থানার বৈঁচিগ্রামে । ঘটনার বিহিত চেয়ে মৃতর পরিবার বর্ধমানের বামচান্দাইপুর এলাকার ওই বেসকারী হাসপাতালের বিরুদ্ধে শক্তিগড় থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন । পুলিশ অভিযোগের তদন্ত শুরু করেছে । চিকিৎসা গাফিলতিতে এক তরুণ পুলিশ কর্মীর মৃত্যু হওয়ার ঘটনায় পুলিশ মহলেও ব্যাপক শোরগোল পড়ে গিয়েছে।
মৃতের দাদা অনিমেষ রায় লিখিত অভিযোগে
পুলিশকে জানিয়েছেন ,তাঁর ভাই অভিষেক রায় পেটের যন্ত্রনায় ভুগছিল।তার চিকিৎসার জন্য অভিয়েক বর্ধমানের বামচাঁন্দাইপুরের একটি বেসরকারী হাসপাতালে আসে । সেখানে ডক্তার তাঁকে জানিয়ে দেয় গলব্লাডারে স্টোন আছে । অপারেশন করতে হবে । সেই মত অভিষেক ১৫ এপ্রিল সাকালে বর্ধমানের ওই বেসকারী হাসপাতালে ভর্তি হয় ।বিকাল ৪ টেতে অপারেশন হবে বলে ওই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয়। বাড়ির লোকজন হাসপাতালে পৌছে গেলে নির্দিষ্ট সময়ে অভিষেককে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হয় । তার পর থেকে এক ঘন্টা পেরিয়ে যাবার পরেও কোন খবর না আসায় বাড়ির লোকজন অপারেশন থিয়েটারের কাছে যায় । তখন ওটি তে কর্মরত স্টাফেরা পরিবারের লোকজনকে বলেন,’অভিষেকের পালস ও হার্ট বিট নেমে গিয়েছে । হার্ট কাজ করছে না ।’এরপরেই অভিষেক মারা গিয়েছে বলে তারা জানিয়ে দেয় ।
অনিমেষ রায় বলেন,’গলব্লাডার স্টোন অপারেশন হওয়ার আগেই অভিষেক মারা গেছে শুনে তাঁরা পরিবারের সবাই হতবাক হয়ে যান । অপারেশন না হওয়ার আগেই অভিষেক কিভাবে মারা গেলেন, সেই প্রশ্ন তাঁরা বেসরকারী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও চিকিৎসকদের কাছে করেন । সেই বিষয়ে হাসপাতালের তরফে কেউ সঠিক কিছু জানাতে পারে না। অনিমেষ রায় জানিয়েছেন, এর পরেই ওইদিন রাতে তিনি তাঁর ভাইয়ের মৃত্যুর জন্য বেসরকারী হাসপাতালে বিরুদ্ধে শক্তিগড় থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন । অভিযোগে ভাইয়ের মৃত্যুর জন্য তিনি ওই বেসরকারী হাসপাতালের ডাক্তার,আনেস্থেটিক্স ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষই দায়ী করেন । এদিন বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ মর্গে মৃত পুলিশ কর্মীর দেহের ময়নাতদন্ত হয়।
বেসরকারী হাসপাতালের ম্যানেজার অনিমেষ রায় শনিফার বলেন,’রোগীর আনেস্থেসিয়া চলার সময় তিনি কার্ডিয়াক আট্যাক হয়। তার কারণেই রোগী মারা গিয়েছেন ।’ ঘটনা প্রসঙ্গে শক্তিগড় থানার আধিকারিক জানিয়েছেন, ’লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগ পত্রটি জেলায় মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। মৃতদেহের ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে আসলে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে । তার ভিত্তিতে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে ’। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রণব রায় । জানিয়েছেন,অভিযোগপত্র হাতে পেলে বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন ।।