প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,১৪ এপ্রিল : পড়ে রয়েছে ’গঙ্গা অ্যাকশন প্ল্যান’-এর টাকা। তবুও কাজ শেষ হচ্ছে না।তাই গঙ্গা অ্যাকশন প্ল্যান’ এর কাজ দ্রুত শেষ করার জন্যে পূর্ব বর্ধমান জেলার সংশ্লিষ্ট ব্লকের বিডিও,পঞ্চায়েত সমিতি ও পঞ্চায়েতের কর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন জেলা প্রশাসনিক কর্তারা। ’গঙ্গা অ্যাকশন প্ল্যানের’ কাজ নিয়ে ইতিমধ্যেই জেলা প্রশাসনের তরফে ত্রিস্তরীয় পর্যালোচনা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।ওই বৈঠকে জেলাশাসক প্রিয়াঙ্কা সিংলা, অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলাপরিষদ) কাজল রায় উপস্থিত ছিলেন। কাজল রায় বলেন,’দু’তিন বছর ধরে গঙ্গা অ্যাকশন প্ল্যানের টাকা পড়ে রয়েছে। এটা ভালো কথা নয়। খুব দ্রুত কাজ শেষ করার কথাও তিনি সংশ্লিষ্ট ব্লকের কর্তাদের জানিয়ে দিয়েছেন’ । জানা গিয়েছে,’গঙ্গা অ্যাকশন প্ল্যান’ থেকে কালনা ১, কালনা ২, পূর্বস্থলী ১, পূর্বস্থলী ২, কাটোয়া ২ ও কেতুগ্রাম ২ পঞ্চায়েত সমিত ও গঙ্গা তীরবর্তী ওই সব ব্লকের ১৯টি গ্রাম পঞ্চায়েত ৩৩ কোটি টাকা পেয়েছিল। তারমধ্যে মাত্র ১০ কোটি টাকা খরচ হয়েছে ।২৩ কোটি টাকা এখনও পড়ে রয়েছে ।
এই বিষয়ে জেলা প্রশাসনের একটি রিপোর্টে সামনে এসেছে, পূর্বস্থলী ২ ব্লকে ২৬৫টি, কালনা ১ ব্লকে ১৯০টি সহ ছ’টি ব্লকে ৮৬৫টি জায়গায় নর্দমা, টিউবওয়েলের চাতাল তৈরির জন্যে ১ কোটি ৯৩ লক্ষ টাকা, ১৯ গ্রাম পঞ্চায়েত ৯৫ টি জায়গায় বৃষ্টির জল ধরে রাখার কাজের জন্যে ৩ কোটি ৯২ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়। এছাড়াও গঙ্গার তীরবর্তী এলাকায় নতুন করে শৌচালয় তৈরির জন্যে ১১৭৮টি লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছিল। কালনা ২ ও কাটোয়া ২ ব্লকে কোনও শৌচালয় তৈরির লক্ষ্যমাত্রা ছিল না। তবে কালনা ১ ব্লকে ২০৭টি, পূর্বস্থলী ১ ব্লকে ৪৯২টি, পূর্বস্থলী ২ ব্লকে ২১৬টি ও কেতুগ্রাম ২ ব্লকে ২৬৩টি শৌচাগার তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল। তারমধ্যে ৫৯৩টি শৌচালয় তৈরি হয়েছে। এ ছাড়াও গঙ্গার তীরবর্তী এলাকায় পুরনো আমলের ‘পিট’ দেওয়া একটি শৌচাগার থাকলেও আরও একটি ‘পিট’ করার সিদ্ধান্ত হয় । সেই মতো গঙ্গা তীরবর্তী এলাকায় ৩৫৩৪টি ‘পিট’ তৈরির জন্য ১ কোটি ৭৬ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। পাশাপাশি ৫৮টি ‘কমিউনিটি শৌচালয়’ তৈরির জন্যে প্রায় ১ কোটি ২২ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়। যদিও প্রশাসনের রিপোর্ট অনুযায়ী,এইসব কাজের জন্য জেলাপরিষদের কাছে অর্থ খরচের কোনও শংসাপত্র বা ইউটিলাইজ়েশন সার্টিফিকেট জমা পড়েনি।
টাকা পড়ে থাকার কারণ প্রসঙ্গে সংশ্লিষ্ট
পঞ্চায়েত সমিতির নির্বাহী বাস্তুকার ও বিডিওদের দাবি,‘গঙ্গা অ্যাকশন প্ল্যানের’ টাকা তারা খুব বেশি দিন পাননি । ওই টাকা পাওয়ার পরেই প্রতিটি কাজের দরপত্র ডাকা হয়েছে। বেশ কিছু কাজ শুরু হয়েছে। আবার অনেক কাজ শেষও হয়ে গিয়েছে।’ কালনা ২ ও পূর্বস্থলী ২ ব্লকের বিডিওদের দাবী ,তাঁরা কাজের প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছেন। কিছু দিনের মধ্যেই কাজ শেষ হয়ে যাবে।’জেলা পরিষদের জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ বাগবুল ইসলাম বলেন,’পড়ে থাকা টাকায় দ্রুত কাজ করারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ।’।