এইদিন ওয়েবডেস্ক,নদীয়া,১০ এপ্রিল : জন্মদিনে নিমন্ত্রণ করে ১৪ বছরের এক নাবালিকাকে তিন বন্ধু মিলে গনধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে এক তৃণমূল নেতার ছেলের বিরুদ্ধে । নির্যাতিতার অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে হলে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে চেয়েছিল পরিবারের লোকজন । কিন্তু তাঁদের হাসপাতালে না যেতে দিয়ে স্থানীয় এক হাতুড়ে চিকিৎসকের কাছে বাধ্য করা হয় । শেষে এক প্রকার বিনা চিকিৎসাতেই মৃত্যু হয় নির্যাতিতা কিশোরীর । তবে এখানেই শেষ নয়,প্রমান লোপাটের জন্য কিশোরীর মৃতদেহ গোপনে শ্মশানে নিয়ে গিয়ে দাহ করে দেওয়া হয় । শেষে তৃণমূলের নেতারা চিতার ছাইয়ে জল ঢেলে দেওয়ার পর বাড়ি ফিরে আসে বলে অভিযোগ । এহেন মধ্যযুগীয় বর্বরতার স্বাক্ষী রইল নদীয়ার হাঁসখালি-১ ব্লক এলাকা । উঠছে পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন । স্থানীয়দের প্রশ্ন, এত বড় ঘটনার কথা ভিলেজ পুলিশ জানলো না, ঢিল ছোড়া দূরত্বে থানার ইনচার্জের কানে গেল না তা কি করে হয় ? এদিকে তৃণমূল নেতার ছেলের এই কুকীর্তির কথা চাওড় হতেই ক্ষোভে ফুঁসছে গোটা এলাকা ।
জানা গেছে,নদীয়া জেলার হাঁসখালি-১ নম্বর ব্লকের গাজনা গ্রাম পঞ্চায়েতের শ্যামনগর গ্রামে বাড়ি নিহত কিশোরীর । একই গ্রামে বাড়ি অভিযুক্ত যুবক ব্রজগোপাল গোয়ালার । তার বাবা সমর গোয়ালা হাঁসখালি এক নম্বর পঞ্চায়েতের তৃণমূল কংগ্রেসের সদস্য । গত সোমবার ছিল ব্রজগোপালের জন্মদিন । বাড়িতে একটি ছোটখাটো পার্টির আয়োজন করা হয়েছিল । ওই পার্টিতে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল নিহত কিশোরীকে । হতদরিদ্র পরিবারের মেয়েটি যৎসামান্য উপহারও নিয়ে গিয়েছিল । পার্টিতে মোট ৫ জন পুরুষ ছিল । একজন বছর বাহান্নর প্রৌঢ়ও ছিল বলে খবর ।
নিহত কিশোরীর পরিবার সুত্রে জানা গেছে, অপরিচিত এক মহিলা রাতের অন্ধকারে কিশোরীকে বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে পালিয়ে যায় । এদিকে কিশোরীর গোপন অঙ্গ দিয়ে অনর্গল রক্তপাত হয়ে যাচ্ছে । সেই সঙ্গে তাকে প্রবল যন্ত্রণায় কাতরাতে দেখে পরিবারের লোকজন জিজ্ঞাসাবাদ করে । তখন কিশোরী জানায় ব্রজগোপাল গোয়ালাসহ ৩-৪ জন মিলে তাকে গনধর্ষণ করেছে । মেয়েটি খুব অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে পরিবারের সদস্যরা । কিন্তু হাসপাতালের পরিবর্তে তৃণমূলের লোকজন তাঁদের স্থানীয় এক হাতুড়ে চিকিৎসকের কাছে বাধ্য করে বলে বলে অভিযোগ । ফলশ্রুতি যন্ত্রণায় ছটফট করতে করতে মৃত্যু হয় ওই অভাগা কিশোরীর ।
নিহতের পরিবারের অভিযোগ,তাঁদের মেয়ের মৃত্যুর পর তৃণমূল নেতা সমর গোয়ালার দলবল মেয়েটির মৃতদেহ গোপনে স্থানীয় শ্মশানে নিয়ে গিয়ে দাহ করে দেয় । প্রমাণ লোপাটের জন্য চিতায় জল ঢেলে দেয় তারা । জানা গেছে,শনিবার খবর পেয়ে চাইল্ড লাইনের পক্ষ থেকে হাঁসখালী থানায় এনিয়ে একটি
লিখিত অভিযোগ জমা করা হয়েছে ।
যদিও অভিযুক্ত ব্রজগোপালের বাবা সমর গোয়ালার দাবি,মেয়েটির সঙ্গে তাঁর ছেলের প্রেমের সম্পর্ক ছিল । ওই দিন কোনও পার্টি হয়নি । কিভাবে ওই কিশোরীর মৃত্যু হল তা তাঁর জানা নেই । তবে ওই তৃণমূল নেতা যাই বলুন না কেন ঘটনাকে ঘিরে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে এলাকায় । হাঁসখালি থানার পুলিশকে দিয়ে কিভাবে নিরপেক্ষ তদন্ত সম্ভব তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে ।।