এইদিন ওয়েবডেস্ক,মগরাহাট(দক্ষিণ ২৪ পরগণা),০৯ এপ্রিল : পাওনা টাকা দেওয়ার অছিলায় ঢেকে এনে সিভিক ভলান্টিয়ার ও তাঁর বন্ধুকে প্রথমে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে গুলি করা হয় । তারপর গলার নলি কেটে খুনের অভিযোগ উঠল এক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে । শনিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলার মগরাহাট থানার মাগুরপুকুর এলাকায় । পুলিশ জানিয়েছে নিহতদের নাম বরুণ চক্রবর্তী (৩৫) এবং মলয় মাখাল (৩১) । তাঁদের মধ্যে বরুণ চক্রবর্তী মগরাহাট থানায় সিভিক ভলান্টিয়ারের কাজ করতেন । এই নৃশংস খুনের ঘটনার পর অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে গোটা এলাকা । দুটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় উত্তেজিত জনতা । খবর পেয়ে ডায়মণ্ড হারবারের এসডিপিও মিতুনকুমার দে-র নেতৃত্বে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় বিশাল পুলিশবাহিনী । তখন পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন স্থানীয় গ্রামবাসীরা ।
পাশাপাশি কিছুক্ষণের মধ্যেই ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন ডায়মন্ড হারবারের এসপি অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় । তিনি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘দু’জন মারা গেছেন । জানে আলম বলে অভিযুক্তকে আমরা চিহ্নিতও করেছি। তার সন্ধানে তল্লাশি চলছে । খুব শীঘ্র তাকে আমরা গ্রেফতার করবো ৷ প্রাথমিকভাবে আমরা জানতে পেরেছি নিহতরা অভিযুক্তের কাছে কিছু টাকা পেতো । নিহতদের কাছ থেকে নেওয়া নির্মান সামগ্রী বাবদ সেই টাকা টাকা শোধ করছিল না অভিযুক্ত । এমনকি নির্মান সামগ্রীও ফেরত দিচ্ছিল না সে । অভিযুক্তকে বহুবার টাকা দেওয়ার জন্য বলেছিল নিহতরা । দু’পক্ষের মধ্যে তা নিয়ে বচসাও হয়েছে একাধিকবার । প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে আমরা জানতে পেরেছি, শুক্রবার অভিযুক্ত যখন মাগুরপুকুর যায় তখন টাকা ফেরত দেওয়ার কথা বলেছিল । আর সেই ভিত্তিতে সিভিক ভলান্টিয়ার বরুন ও তাঁর বন্ধু এদিন টাকা নেওয়ার জন্য এসেছিল । তখনই এই ঘটনাটি ঘটে ।’
স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে,আগের দিনের কথামত টাকা আনার জন্য শনিবার সকাল ১১টা থেকে সাড়ে ১১টা নাগাদ মাগুরপুকুরে যান বরুণ চক্রবর্তী এবং মলয় মাখাল । মাগুরপুকুর পোল এলাকায় রয়েছে অভিযুক্ত জানে আলমের একটি কারখানা । আলম অ্যান্ড কোম্পানি নামে ওই কারখানায় পশুর হাড় দিয়ে নানা জিনিসপত্র তৈরি করা হয় । এদিন সকালে ওই কারখানার ঘর থেকে বরুণ ও মলয়ের গুলিবিদ্ধ ও গলার নলি কাটা মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ ।
এদিকে নৃশংসভাবে জোড়া খুনের কথা চাওড় হতেই ক্ষিপ্ত জনতা আশপাশের কয়েকটি দোকান ও দুটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় । খবর পুলিশ গেলে পুলিশকে ঘিরে তুমুল বিক্ষোভ দেখায় গ্রামবাসীরা । তাঁদের অভিযোগ,এলাকায় দুষ্কৃতী তান্ডব এই প্রথম নয় । কিন্তু দুষ্কৃতীদের দৌরাত্ম্য রুখতে সেভাবে কোনও উদ্যোগই নেয়নি পুলিশ প্রশাসন । যদি নিত তাহলে দুটো তরতাজা যুবক এমন নৃসংশভাবে খুন হত না । সেই সঙ্গে ঘটনায় মূল অভিযুক্ত জানে আলমের বিরুদ্ধে জানে আলম আলম অ্যান্ড কোম্পানি নামে চিটফান্ডের ব্যবসা চালানোরও অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয় গ্রামবাসীরা ।।