এইদিন ওয়েবডেস্ক,পুরুলিয়া,০৬ এপ্রিল : পুরুলিয়ার ঝালদার কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দু খুনের প্রত্যক্ষদর্শী তথা নিহত কাউন্সিলারের ঘনিষ্ঠ বন্ধু নিরঞ্জন বৈষ্ণবের মৃত্যু ঘিরে রাজ্য জুড়ে আলোড়ন পড়ে গেছে । বুধবার সকালে নিজের ঘর থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে পুলিশ । ওই ঘর থেকেই উদ্ধার হয়েছে সুইসাইড নোট । আর তাতে ‘পুলিশের বারবার ডাক’ কথাটি উল্লেখ থাকায় স্থানীয় থানার পুলিশকেই কাঠগড়ায় তুলেছে পরিবার । এদিকে দলীয় কাউন্সিলারের খুনের প্রতিবাদে কংগ্রেসের ডাকা বনধ ঘিরে পথ অবরোধ, অবস্থান বিক্ষোভ চলছে । তারই মাঝে কংগ্রেস কাউন্সিলর খুনের প্রত্যক্ষদর্শীর অস্বাভাবিক মৃত্যুতে ব্যপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে ।
জানা গেছে,ঝালদার বৈষ্ণব পাড়ায় বাড়ি অকৃতদার নিরঞ্জন বৈষ্ণব ওরফে সেফালের । বছর বাহান্নর নিরঞ্জনবাবু কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দুর ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন । প্রায়ই সন্ধ্যায় বন্ধুর সঙ্গে হাঁটতে যেতেন । আর তাঁর সামনেই খুন হন কংগ্রেস কাউন্সিলর । এদিন নিরঞ্জনবাবুর মৃতদেহের পাশ থেকে উদ্ধার হওয়া সুইসাইড নোটে লেখা আছে, ‘যে দিন তপনের হত্যা হয় সেদিন থেকে আমি মানসিক অবসাদে ভুগছি । ওইদিন যে দৃশ্যটা দেখেছি তা মাথা থেকে কোনও রকমে বের হচ্ছে না । ফলে রাতে ঘুম হচ্ছে না,খেতে মন যাচ্ছে না । শুধু ওই ঘটনাই মনের মধ্যে ঘোরাফেরা করছে । তারপর পুলিশের বারবার ডাক । আমি জীবনে থানার চৌকাঠ পার করিনি । এই সব সহ্য করতে না পেরেই আমি এই পথ বেছে নিলাম । এতে কারোর কোন রূপ প্ররোচনা বা হাত নেই । আমি স্বেচ্ছায় আত্মত্যাগ করলাম । ইতি – নিরঞ্জন বৈষ্ণব(সেফাল) ।’
কিন্তু তিনি কাউকে দায়ি না করে গেলেও পুলিশের ‘বারবার ডাক’ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন নিহত নিরঞ্জনবাবুর পরিবার । তাঁদের দাবি, পুলিশ নানাভাবে নিরঞ্জনবাবুর উপর চাপ সৃষ্টি করছিল । তার ফলে তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন । শেষে হতাশাগ্রস্থ হয়ে তিনি আত্মহননের পথ বেছে নেন ।
পরিবার সুত্রে জানা গেছে,যে ঘর থেকে নিরঞ্জন বৈষ্ণবের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় সেটি একটি ফাঁকা ঘর । এদিন ভোর ৬টা নাগাদ ঘুম থেকে উঠে ওই ঘরে ঢুকেছিলেন । স্বাভাবিক ঘটনা মনে করে বিষয়টি গুরুত্ব দেয়নি পরিবারের লোকজন । কিন্তু দীর্ঘক্ষণ তিনি ঘর থেকে বেরুচ্ছেন না দেখে পরিবারের লোকজনের সন্দেহ হয় । শেষে তাঁরা ঘরে ঢুকতেই নিরঞ্জনবাবুকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান । পুলিশ মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে ।।