অভিষেক চৌধুরী,কালনা,২৬ ডিসেম্বর : মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে গবেষনা করে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করলেন কালনার হাতিপোতা গ্রামের বাসিন্দা রেজাউল ইসলাম মোল্লা ওরফে রানার । মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জীবন, নেতৃত্বগুন ও সাফল্যের শিখরে ওঠার রহস্য মুলত এই ছিল তাঁর গবেষনার বিষয়বস্তু । আর তাতেই মিলেছে সাফল্য । কালনার এক অজপাড়া গাঁয়ের এক কৃষকের ছেলের এহেন নজিরবিহীন গবেষনায় সাড়া ফেলে দিয়েছে এলাকায় । তাঁর এই সাফল্যে খুশি পরিবারের লোকজন । খুশি প্রতিবেশীরাও ।
পূর্ব বর্ধমানের কালনার হাতিপোতা গ্রামের বাসিন্দা প্রান্তিক কৃষক শাহনওয়াজ মোল্লার সন্তান রেজাউল ইসলাম মোল্লা । মা মাহিনূর বিবি গৃহবধু । মাহিনূর বিবি জানিয়েছেন, ছোট থেকেই ছেলের পড়াশোনার প্রতি অসম্ভব আগ্রহ ছিল । জীবনের সমস্ত পরীক্ষাতেই সে সফলভাবে উত্তীর্ন হয়েছে ।
রেজাউল জানিয়েছেন, ২০০৭-০৮ সালে যখন তিনি ম্যানেজমেন্ট কোর্স (বিবিএ ) করছিলেন তখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে বাংলায় কৃষক আন্দোলন চলছিল । কৃষকদের স্বার্থে নিজের জীবন বিপন্ন করে ওই সময়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সংগ্রাম চালিয়ে গিয়েছিলেন । ইতিমধ্যে তিনি বিবিএ ও এমবিএ শেষ করে ফেলেন ।
রেজাউল বলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে বাংলায় কৃষক আন্দোলন ,নন্দীগ্রাম আন্দোলন ভারতসহ গোটা বিশ্বের মানুষ দেখেছিলেন । এই আন্দোলনে আমাকে ভীষনভাবে অনুপ্রাণিত করে । ম্যানেজমেন্টের কোর্স করার পরেই আমি ঠিক করেছিলাম এই লড়াকু নেত্রীর ‘লিডার শিপ ’ নিয়ে আমি রিসার্চ করব । এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর থেকেই আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করতে শুরু করি । তাঁর লেখা সমস্ত বই আমি খুঁটিয়ে পড়ে ফেলি । যা আমার গবেষনার কাজে অনেকাংশে সাহায্য করেছিল ।’
তিনি বলেন , ‘গবেষনা শুরু করে দেখতে পাই লড়াই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এক অতি সাধারণ ঘরের মেয়ে কিভাবে মুখ্যমন্ত্রী হয়ে উঠলেন । মুখ্যমন্ত্রী পদে আসীন হওয়ার পর তিনি একের পর এক জনমুখী প্রকল্প চালু করলেন ।’
রেজাউলের কথায়, ‘ রিসার্চের প্রয়োজনে আমি ভারতের অন্য সব মহিলা নেত্রীদের সন্মন্ধেও বিস্তর খোঁজখবর নিয়েছিলাম । সব কিছু যাচাই করে আমি নিশ্চিৎ হই ক্যারিস্মাটিক মাস লিড়ার হিসাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সবার থেকে কতটা আলাদা।’ রেজাউল জানিয়েছেন,তাঁর গবেষণার বিষয়বস্তু ছিলো ‘জননেত্রী মমতার ক্যারিশ্মা ও নেতৃগুণ৷’ শুধু রাজনীতি নয়, সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাফল্য ও খ্যাতির শীর্ষে ওঠা ‘নেত্রীদের’ নিয়ে পর্যালোচনাও তাঁর গবেষণার মধ্যে রয়েছে । মমতার সঙ্গে জয়ললিতা, মায়াবতী, সুষমা স্বরাজদের মতো নেত্রীদের তুলনামূলক আলোচনাও রয়েছে তাঁর গবেষনায় ।
জানা গেছে,বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের কাছ থেকে সবুজ সঙ্কেত পাওয়ার পরেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে গবেষণার কাজে লেগে পড়েন তরুন এই গবেষক । সাড়ে পাঁচ বছরের গবেষনা শেষে মেলে পিএইচডি ডিগ্রি । তারপরেই ছোটেন কালীঘাটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে । তবে ওইদিন থিসিস পেপারের কপি তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে তুলে দিতে পারেননি । থিসিস পেপার মুখ্যমন্ত্রীর হাতে তুলে দেওয়ার পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গ সহ সারা দেশের মানুষ যাতে মুখ্যমন্ত্রীর জীবন সম্পর্কে সবিস্তারে জানতে পারেন তার জন্য রিসার্চের বিষয়বস্তু প্রকাশ্যে আনবেন বলে জানিয়েছেন এই তরুন গবেষক ।।
রেজাউল ইসলাম মোল্লার মুখে শুনুন :