এইদিন ওয়েবডেস্ক,মানিকচক(মালদা),০৩ এপ্রিল : সাড়ে চার বছরের শিশুকন্যাকে জোর করে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ উঠল প্রতিবেশী নাবালকের বিরুদ্ধে । ঘটনাটি ঘটেছে মালদা জেলার মানিকচক থানার নারায়নপুর কলোনী এলাকায় । রবিবার এনিয়ে মানিকচক থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন নির্যাতিতা শিশুর মা । পাশাপাশি হরিশ্চন্দ্রপুর থানার রশিদাবাদ গ্রাম পঞ্চায়েতের শালদহ এলাকায় উরুষের মেলা দেখতে যাওয়া ১৩ বছরের কিশোরীকে গনধর্ষণের ঘটনায় ২ ধর্ষককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ । পলাতক আরও ৩ জন । নির্যাতিতা কিশোরীর বাড়ি একই থানা এলাকার চণ্ডীপুর গ্রামে বলে জানা গেছে । এভাবে লাগাতার ধর্ষণের ঘটনা ঘটায় ব্যপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে মালদা জেলা জুড়ে ।
জানা গেছে,মানিকচকের নারায়নপুর কলোনী এলাকার বাসিন্দা সাড়ে চার বছরের শিশুর বাবা পরিযায়ী শ্রমিক । কর্মসুত্রে তাঁকে অধিকাংশ সময় ভিন রাজ্যে থাকতে হয় । নির্যাতিতা শিশুরা দু’ভাই বোন । সে বড় । ঘটনাটি ঘটে গত ২৭ মার্চ ।
নির্যাতিতার মা বলেন, ‘ওইদিন আমি বাড়ির পাশে গৃহস্থালির কাজ করছিলাম । কিছুটা পাশেই রয়েছে একটি আমবাগান । সেখানে খেলা করছিল আমার মেয়ে । কিন্তু হঠাৎ সেখান থেকে সে উধাও হয়ে যায় । অনেকক্ষণ পরে মেয়ে ফিরে এসে বলে তার পেটে লাগছে । দেখি মেয়ের সারা শরীরে তেল মাখানো । আমি জিজ্ঞাসা করলে তখন মেয়ে কাঁদতে কাঁদতে জানায় প্রতিবেশী এক কিশোর তাকে জোর করে আমবাগান থেকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল । তাকে বাড়িতে নিয়ে গিয়ে প্রথমে নগ্ন করে তেল মাখায় ওই কিশোর । তারপর সে আমার মেয়েকে ধর্ষণ করে ।’ এর আগেও একবার ওই কিশোর তার মেয়েকে জোর করে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করেছিল বলে অভিযোগ নির্যাতিতার মায়ের ।
কিন্তু ঘটনার এতদিন পরে কেন অভিযোগ দায়ের ? এই বিষয়ে নির্যাতিতার মা বলেন, ‘আমার স্বামী ভিন রাজ্যে থাকেন । দুই শিশুকে নিয়ে আমি একাই থাকি বাড়িতে । তাই ভয়ে থানায় অভিযোগ জানাতে পারিনি । পরে শ্বশুরবাড়ির লোকজনদের ঘটনার কথা বলি । শেষে তাঁদের পরামর্শে থানায় অভিযোগ দায়েরের সিদ্ধান্ত নিয়েছি ।’
অন্যদিকে জানা গেছে,মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকার রশিদাবাদ গ্রাম পঞ্চায়েতের চণ্ডীপুর গ্রামের বাসিন্দা ১৩ বছরের ওই কিশোরী এলাকার একটি মাদ্রাসার অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী । চণ্ডীপুরের পাশের গ্রাম উত্তর শালদহ গ্রামে উরুষের মেলা চলছে । পরিবারের সঙ্গে সেখানে মেলা দেখতে গিয়েছিল ওই কিশোরী । রাত প্রায় বারোটা নাগাদ সে শৌচকর্ম সারতে একটু পাশে ফাঁকা মাঠে গিয়েছিল । কিন্তু ৫ যুবককে তাকে নজর রাখছে তা ঘুনাক্ষরেও টের পায়নি মেয়েটি । সে মাঠে যেতেই ওই ৫ জন মিলে তার মুখ চেপে ধরে জোর করে তুলে নিয়ে যায় । তারপর বাইকে চাপিয়ে কয়েক কিলোমিটার দূরে চণ্ডীপুর হাই স্কুলের পিছনে একটি পরিত্যক্ত স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ছাদে নিয়ে যায় । সেখানে তারা মেয়েটিকে উপর্যুপরি ধর্ষণ করে । ৫ নরপশুর পাশবিক অত্যাচারে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে মেয়েটি ।
জানা গেছে,পরে পরিবারের লোকজন খোঁজ শুরু করলে ওই পরিত্যক্ত স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ছাদে কিশোরীকে অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে । তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় । পরে নির্যাতিতার মা এনিয়ে ৫ জনের বিরুদ্ধে হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করলে ২ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ ৷ পুলিশ জানিয়েছে,বাকি ৩ জনের সন্ধানে তল্লাশি চলছে ৷।