এইদিন ওয়েবডেস্ক,জম্মু ও কাশ্মীর,০১ এপ্রিল :হিজবুল মুজাহিদিন,জামাত-ই-ইসলামি এবং ইসলামিক স্টেটসহ বিভিন্ন কুখ্যাত সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের সাথে যোগাযোগ রেখে চলা ও তাদের সহযোগিতা করার অভিযোগে পাঁচ সরকারি কর্মচারীকে বরখাস্ত করল জম্মু ও কাশ্মীর প্রশাসন । এই তালিকায় রয়েছে জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের দু’জন কনস্টেবল, একজন শিক্ষক,একজন কম্পিউটার অপারেটর এবং রাজ্যের স্বাস্থ্য বিভাগের সাথে কাজ করা একজন নার্স । তাঁরা পুলওয়ামা,শ্রীনগর, অবন্তিপোরা, কুলগাম এবং বারামুল্লা প্রভৃতি জেলায় কর্মরত ছিলেন ।
জানা গেছে,বরখাস্ত ওই চার কর্মীর নাম তৌসিফ আহমেদ মীর(Tawseef Ahmed Mir),গোলাম হাসান প্যারে (Ghulam Hassan Parray), আরশিদ আহমেদ দাস(Arshid Ahmad Das), শহীদ হুসেন রাথার(Shahid Hussain Rather) এবং শরাফত আলী (Sharafat Ali Khan) । তাঁদের মধ্যে গোলাম হাসান প্যারে কম্পিউটার অপারেটর হিসাবে শ্রীনগরে কর্মরত ছিলেন । জামাত ই ইসলামী নেতা সৈয়দ আলী শাহ গিলানির সহায়তায় জম্মু ও কাশ্মীর প্রশাসনে নিযুক্ত করা হয়েছিল তাঁকে । তিনি জম্মু ও কাশ্মীরে ইসলামিক স্টেটকে জনপ্রিয় করতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন বলে অভিযোগ । এছাড়া তাঁর বিরুদ্ধে পারিমপোরায় একটি হিংসাত্মক বিক্ষোভ সংগঠিত করার অভিযোগে ২০০৯ সালে মামলা রজু করেছিল পুলিশ । পুলিশ কনস্টেবল শহীদ হুসেন রাথার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদীদের সেনা সরঞ্জাম সরবরাহ করার অভিযোগ রয়েছে । উরিতে তাঁর এবং তাঁর সহযোগীদের কাছ থেকে হ্যান্ড গ্রেনেড, চাইনিজ পিস্তল এবং মাদক বাজেয়াপ্ত করার পর সন্ত্রাসবাদের সাথে শহীদ হুসেনের যোগসুত্র প্রকাশ্যে আসে । দ্বিতীয় পুলিশ কনস্টেবল তৌসিফ আহমেদ মীরের বাবা আল-জিহাদ সংগঠনের একজন জঙ্গি ছিলেন । শোপিয়ানের আল-জিহাদের কমান্ডারদের রসদ সরবরাহ করত মীর । তাঁর বিরুদ্ধে দুই পুলিশ আধিকারিককে খুনের চেষ্টা এবং সন্ত্রাসী সংগঠনের জন্য তরুণদের নিয়োগ করার অভিযোগ রয়েছে ।
বরখাস্ত হওয়া বাকি দু’জনের মধ্যে স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মী শরাফত আলী খানের বিরুদ্ধে জঙ্গিদের অর্থ সরবরাহের উদ্দেশ্যে ভারতীয় নোট জাল করার অভিযোগ রয়েছে । অন্যদিকে আরশিদ আহমেদ দাস শিক্ষকতা করতেন । কিন্তু শিক্ষকতার পাশাপাশি তিনি হিজবুল মুজাহিদিনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রেখে চলতেন এবং অবন্তিপোড়ায় জামায়াতে ইসলামীর হয়ে কাজ করতেন বলে অভিযোগ ।
অন্যদিকে লস্কর-ই-তৈবার (এলইটি) ফ্রন্ট সংগঠন দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (টিআরএফ) এর চার মোস্ট ওয়ান্টেড জঙ্গি কমান্ডারদের প্রত্যেকের জন্য ১০ লক্ষ টাকা করে নগদ পুরস্কার ঘোষণা করেছে ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এনআইএ) । জম্মু কাশ্মীরসহ দেশ জুড়ে সন্ত্রাস ছড়াতে উপত্যকার যুবকদের সন্ত্রাসবাদী সংগঠনে আসতে উদ্বুদ্ধ করতে ও নিয়োগ করত ওই চার কুখ্যাত জঙ্গি । গত বছর তাদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধি এবং বেআইনি কার্যকলাপ (প্রতিরোধ) আইনের বিভিন্ন ধারায় মামলা রজু করে এনআইএ । তারপর থেকেই তারা ফেরার । জানা গেছে,ওই চার জঙ্গিরা হল, সিন্ধুর নবাব শাহের সেলিম রেহমানি ওরফে আবু সাদ(Saleem Rehmani alias Abu Saad) এবং কাসুরের শাঙ্গামাঙ্গার সাইফুল্লাহ সাজিদ জাট(Saifullah Sajid Jatt) এবং তাদের স্থানীয় দুই সহযোগী শ্রীনগরের সাজ্জাদ গুল(Sajjad Gul) এবং দক্ষিণ কাশ্মীরের কুলগাম জেলার রেদওয়ানি পায়েনের বাসিত আহমেদ দার(Ahmad Dar) । তাদের মধ্যে বাসিত আহমেদ দার কাশ্মীরেই আছেন এবং অন্যরা পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীর থেকে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে বলে পুলিশ সুত্রে খবর ।।