দিব্যেন্দু রায়,আউশগ্রাম(পূর্ব বর্ধমান),২৭ মার্চ : চুরি রুখতে এক কৃষক তাঁর স্ট্রবেরি চাষ করা জমির বেড়ায় জড়িয়ে রেখেছিলেন বিদ্যুৎবাহী তার
। রাতের অন্ধকারে ওই জমির পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় ওই বিদ্যুতের তার জড়িয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মর্মান্তিকভাবে মৃত্যু হল এক কিশোরীর । ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমান জেলার আউশগ্রামের ভেদিয়ায় । বছর সতেরোর ওই কিশোরী নাম পূজা কর্মকার (১৭) । পূর্ব বর্ধমান জেলার আউশগ্রাম থানার দীপচন্দ্রপুর গ্রামের বাগানপাড়ায় তার বাড়ি । শ্যামানন্দন পাঠক নামে ওই কৃষক ও তাঁর কেয়ারটেকার লক্ষণ যাদবের বিরুদ্ধে এনিয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন মৃত কিশোরীর মা । ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ ।
জানা গেছে শ্যামানন্দন পাঠক ও তাঁর কেয়ারটেকার লক্ষণ যাদবের বাড়ি বিহারে। দীপচন্দ্রপুর গ্রামের বাগানপাড়ার পাশে অজয় নদের চরের কাছে বেশকিছুটা জমিতে স্ট্রবেরি চাষ করেছেন শ্যামানন্দনবাবু । সোমবার সকালে স্ট্রবেরি জমির পাশে পূজা কর্মকার নামে ওই কিশোরীর মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখা যায় । কিশোরীর দেহে জড়ানো ছিল বিদ্যুৎবাহী তার । কিশোরীর মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখে ব্যপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে এলাকায় । ঘটনাস্থলে লোকজন জড়ো হয়ে যায় । খবর পেয়ে পুলিশ আসে । জমির কেয়ারটেকার লক্ষণ যাদব স্বীকার করেছেন ফসল চুরি রুখতে জমির বেড়ায় বিদ্যুতের তার জড়িয়ে রাখা হয়েছিল । আর বিদ্যুৎবাহী ওই তার জড়িয়েই মৃত্যু হয়েছে পূজার ।
স্থানীয় ও পরিবার সুত্রে জানা গেছে,পূজার বাবা পরিযায়ী শ্রমিক, মা পেশায় জনমজুর । পূজারা দু’ভাইবোন । এবারে তার মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসার কথা ছিল । কিন্তু পরীক্ষা শুরুর আগেই হঠাৎ সে বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়ে যায় । ফলে এবারে তার মাধ্যমিক পরীক্ষা দেওয়া হয়নি । শেষে চলতি মাসের ১২ তারিখে নবদ্বীপ থেকে তাকে উদ্ধার করে আনে পরিবারের লোকজন । কিন্তু বাড়ি ফেরার পর থেকেই সে ফের পালানোর মতলব করছিল বলে জানা গেছে । তাই পূজার মা ও ভাইসহ প্রতিবেশীরা তার উপর সর্বদা নজর রাখছিলেন । শেষে রবিবার রাতে সবাই ঘুমিয়ে পড়লে চুপি চুপি বাড়ি থেকে বেড়িয়ে পরে পূজা । এদিন ওই স্ট্রবেরী খেতের পাশে বিদ্যুৎবাহী তার জড়ানো অবস্থায় পূজার মৃতদেহ উদ্ধার হয় । মাঠে মাঠে পালানোর সময় ওই জমির পাশ দিয়ে যেতেই গিয়ে এই ঘটনা ঘটেছে বলে অনুমান পুলিশের । পুলিশ জানিয়েছে,অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট ধারায় মামলা রজু করা হয়েছে । এদিন মৃতদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে পুলিশ ।।