এইদিন ওয়েবডেস্ক,বাঁকুড়া,১৭ মার্চ : বোনের গলায় ছুরি চালানোর পর নিজের গলা কেটে আত্মহত্যার চেষ্টা করল মানসিকভাবে অসুস্থ যুবক । বৃহস্পতিবার চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে বাঁকুড়া শহরের অরবিন্দনগর এলাকায় । খবর পেয়ে বাঁকুড়া সদর থানার পুলিশ গিয়ে ভাই-বোন দেবদাস মিত্র ও মুনমুন মিত্রকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে । অল্পবিস্তর জখম হয়েছে তাঁদের বৃদ্ধা মা মুক্তা মিত্রও । তাঁর প্রাথমিক চিকিৎসা করা হয় ।
জানা গেছে,মুক্তা মিত্রের স্বামী বহু বছর আগে মারা গেছে । তাঁদের এক ছেলে ও এক মেয়ে । ছেলে দেবদাস বড় । অরবিন্দনগর এলাকার বাসিন্দা জনৈক কেদারনাথ চট্টোপাধ্যায় নামে এক ব্যক্তির বাড়িতে ছেলে মেয়েকে নিয়ে ভাড়া থাকেন ওই মহিলা । দেবদাস টিউশন পড়ান । অন্যদিকে বেশ কয়েক মাস আগে মুক্তাদেবীর মেয়ে মুনমুনের বিয়ে হয়েছিল কলকাতার বাসিন্দা পেশায় ইঞ্জিনিয়ার এক যুবকের সঙ্গে । কিন্তু স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বনিবনা না হওয়ায় সম্প্রতি তাঁদের ডিভোর্স হয়ে যায় । এরপর খোরপোষের মামলা করেন মুনমুনদেবী । কিন্তু দেবদাস চাননি বোন খোরপোষ নিক । আর এনিয়ে ভাইবোনের অশান্তি । মুক্তাদেবী বলেন, ‘আমার ছেলে খালি বোনের খোরপোষের মামলার কথা মাথায় ঘোরাতো । আমি মামলা তুলে নেওয়ার কথা বলে বোঝাতাম । তা সত্ত্বেও কয়েকদিন রাতে ঘুমায়নি ছেলে । তাই এদিন এক চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গিয়েছিলাম । আর ফিরে এসে এই কান্ড ঘটিয়ে দিল ।’
স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে,এদিন বাড়ি ফিরে একটি চাকু নিয়ে প্রথমে বোনের উপর চড়াও হয় দেবদাস । মুক্তাদেবী মেয়েকে বাঁচাতে গেলে তখন সে চাকুটি ঘুরিয়ে মায়ের গলায় ধরে । তিনি কোনও রকমে ছিটকে পালিয়ে এসে প্রাণ বাঁচান । তবে তাঁর ডান হাতের আঙুল কেটে যায় । অন্যদিকে বোনের গলায় ছুরি চালিয়ে দরজা লাগিয়ে দেয় দেবদাস । তারপর সে সোজা নিজের ঘরে গিয়ে দরজায় খিল দিয়ে দেয় । তারপর ওই চাকু দিয়েই গলা কেটে আত্মহত্যার চেষ্টা করে । এদিকে ছেলের এই অস্বাভাবিক আচরণ দেখে লোকজন ডাকাডাকি করেন ওই বৃদ্ধা । চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা ছুটে আসে । পরে স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ এসে ভাই বোনকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে । ঘটনা ঘিরে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে এলাকায় ।।