এইদিন ওয়েবডেস্ক,পানিহাটি ও ঝালদা,২৪ মার্চ : উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার পানিহাটি পুরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূলের নবনির্বাচিত কাউন্সিলর অনুপম দত্তকে খুনের ঘটনায় এক সুপারি কিলারকে গ্রেফতার করল খড়দা থানার পুলিস । পুলিশ জানায়, ধৃতের নাম শম্ভুনাথ পণ্ডিত । নদিয়া জেলার হরিণঘাটায় তাঁর বাড়ি । প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ জানতে পেরেছে,ঘটনার দিন শম্ভুনাথের সঙ্গে আরও তিনজন দুষ্কৃতী ছিল ৷ তৃণমূল নেতাকে খুনের সুপারি দেওয়া হয়েছিল তাদের । পুলিশ বাকি খুনিদের তল্লাশির পাশাপাশি মূল চক্রান্তকারীর নাম জানার চেষ্টা চালাচ্ছে । অন্যদিকে পুরুলিয়ার ঝালদা পুরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দুকে খুনের ঘটনায় সোমবার মৃতের দাদাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ ।
রবিবার হরিসভায় দলীয় মিটিং সেরে সন্ধ্যা নাগাদ বাড়ি ফেরার পথে কয়েকজন সশস্ত্র দুষ্কৃতী অনুপম দত্তের উপর চড়াও হয় । তারা অনুপমবাবুকে লক্ষ্য করে এলোপাথাড়ি গুলি করে পালিয়ে যায় । অনুপমবাবুর মাথায় ও কাঁধে গুলি লাগে । তাঁকে প্রথমে সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ভর্তি করা হয় । পরে বেলঘড়িয়ার এক বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয় অনুপমবাবুকে ৷ কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যে মৃত্যু হয় তাঁর ৷
এদিকে তৃণমূল নেতাকে গুলি করে খুনের পর রাতে ঘটনাস্থলের অদূরে একটা হোগলা বনের মধ্যে আত্মগোপন করে শম্ভুনাথ পণ্ডিত । কিন্তু পরে হোগলা গাছের নড়াচড়া দেখে স্থানীয় বাসিন্দারা বিষয়টি বুঝতে পারে । তাকে বন থেকে বেড়িয়ে আসার জন্য বলা হয় । কিন্তু বারবার বলা সত্ত্বেও সে বেড়িয়ে না আসায় হোগলা বনে আগুন ধরিয়ে দেয় এলাকার বাসিন্দারা । খবর পেয়ে পুলিশ এসে তাকে গ্রেফতার করে । ধৃতের কাছ থেকে তৃণমূল নেতাকে খুনে ব্যবহৃত একটি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ ।
অন্যদিকে রবিবার প্রায় একই সময়ে খুন হন পুরুলিয়ার ঝালদা পুরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডে কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দু । রবিবার বিকেল প্রায় সাড়ে ৪ টা নাগাদ তিনি ৩-৪ জন দলীয় কর্মীর সাথে ঝালদা-বাগমুণ্ডি সড়ক দিয়ে যাওয়ার সময় বাইক আরোহী দুষ্কৃতীরা পয়েন্ট ব্লাঙ্ক রেঞ্জ থেকে তাঁর মাথা লক্ষ্য করে গুলি করে পালিয়ে যায় । তাঁকে প্রথমে ঝালদা করে ১ নম্বর ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয় । পরে তাঁকে স্থানান্তরিত করা হয় রাঁচির হাসপাতালে । কিন্তু সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয় ।
প্রসঙ্গত,এবারের পুরভোটে ১২ আসন বিশিষ্ট ঝালদা পুরসভায় ৫টি তৃণমূল, ৫টি কংগ্রেস ও ২ টি আসন নির্দল পেয়েছে । পরে এক নির্দল তৃণমূলে যোগ দেয় । অপর নির্দল যোগ দেন কংগ্রেসে । ফলে ত্রিশঙ্কু হয়ে পড়ে ঝালদা পুরসভা । নিহত তপন কান্দুর ভাইপো দীপক কান্দু এ বার তৃণমূলের টিকিটে কাকার বিরুদ্ধে প্রার্থী হয়েছিলেন । কিন্তু তিনি কাকার কাছে হেরে গেছেন । ফলে এই খুনের ঘটনার পিছনে কোনও রাজনৈতিক যোগসুত্র আছে কিনা তা জানতে এদিন দীপক কান্দুর বাবাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে পুলিশ । এদিকে ঘটনার প্রতিবাদে ও দোষীদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবিতে মঙ্গলবার রাজ্য জুড়ে ১২ ঘন্টার বাংলা বনধের ডাক দিয়েছে কংগ্রেস ।।