এইদিন ওয়েবডেস্ক,কাটোয়া,২২ ডিসেম্বর : বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে এক বিবাহিতা যুবতীকে ডেকে এনে
খুনের মামলায় অভিযুক্তকে যাবজ্জীবন কারাদন্ডের আদেশ দিল কাটোয়া মহকুমা আদালত । অভিযুক্তের নাম হাফিজুল শেখ(৩৩) ওরফে রাজ । সেবিনা বিবি নামে ওই বিবাহিত মহিলাকে খুনের অভিযোগে তাঁকে যাবজ্জীবন কারাদন্ডের পাশাপাশি দশ হাজার টাকা জরিমানার নির্দেশ দেন কাটোয়ার এডিজে ফার্স্ট ট্রাক কোর্টের বিচারক পিনাকি মিত্র । অনাদায়ে অতিরিক্ত ৫ বছরের কারাদন্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়। পাশাপাশি মৃতার শিশুপুত্রকে এসডিএলসি থেকে ৫ হাজারা টাকা অনুদান দেওয়ার নির্দেশ দেন বিচারক।
জানা গেছে, সেবিনা বিবির বাবার বাড়ি মুর্শিদাবাদ জেলার বেলডাঙ্গা থানার বড়েঞা গ্রামে । বহরমপুরের বাসিন্দা মনিরুল ইসলামের সঙ্গে তাঁর দেখাশোনা করে বিয়ে হয়েছিল । তাঁদের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে । ২০১৪ সালের ১৬ জানুয়ারী কাটোয়ার জাজিগ্রাম রেলস্টেশনের কাছে একটি শর্ষে জমি থেকে সেবিনার মৃত দেহ উদ্ধার করে কাটোয়া থানার পুলিশ । মৃতদেহের পাশেই ছিল সেবিনার তিন বছরের শিশুপুত্র আলমগীর ওরফে মনি । সেবিনার শিশুপুত্রের জবানী ও মৃতার মোবাইল ফোনের সুত্র ধরে মঙ্গলকোট থানার দুরমুট গ্রামের বাসিন্দা হাফিজুল শেখ ওরফে রাজকে গ্রেফতার করে পুলিশ । তারপর থেকে জেলেই ছিল অভিযুক্ত । এই ঘটনার তদন্তকারী অফিসার ছিলেন তৎকালীন কাটোয়া থানার এএসআই সুদীপ দাস ।
জানা গেছে, ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ পুলিশ জানতে পারে সেবিনা বিবির সঙ্গে মোবাইল ফোনের সুত্রে পরিচয় হয় রাজের । সে সেবিনাকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দেয় । সেবিনার বাবার বাড়ির লোকজনদের সঙ্গেও সে পরিচয় করে এই বিষয়ে জানায় । তারপর ২০১৪ সালের জানুয়ারীর ১৪ তারিখের রাতে খাগড়া স্টেশনের আগে হল্ট স্টেশন থেকে থেকে সেবিনা ও তাঁর তিন বছরের শিশুপুত্রকে সঙ্গে নিয়ে কাটোয়ায় আসে রাজ । রাতে তাঁরা স্টেশনেই ছিল । পরের দিন সেবিনাকে নিয়ে কাটোয়ার বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাঘুরি করে । তারপর ওই দিন রাতে কাটোয়ার জাজিগ্রাম রেলগেটের কাছে সাবিনা ও তাঁর শিশুপুত্রকে নিয়ে যায় । সেখানে সেবিনাকে শ্বাসরোধ করে খুন করে শর্ষের জমিতে দেহটি ফেলে পালিয়ে যায় হাফিজুল ।
জানা গেছে,এই ঘটনায় মোট ৪০ জন সাক্ষী ছিল । তার মধ্যে ২৩ জনের স্বাক্ষ্য নেওয়া হয় । মুল স্বাক্ষী ছিল ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী মৃতা বধুর শিশুপুত্র আলমগীর শেখ । অবশেষে দীর্ঘ প্রায় চার বছর পর এদিন এই খুনের মামলার নিষ্পত্তি হয় ।
সরকারী আইনজীবি স্বরোজ দাস বলেন, ‘এই ঘটনার তদন্তকারী অফিসার সুদীপ দাসের তদন্ত প্রক্রিয়ায় আমি অনুপ্রানিত । তাঁকে যাতে বিশেষভাবে পুরষ্কৃত করা হয় তার জন্য পুলিশ সুপারের কাছে আমি অনুরোধ করছি ।’।