এইদিন ওয়েবডেস্ক,০৫ মার্চ : ‘তালিবানরা আমাকে ঘৃণা করে কারণ তারা চায় না আফগানিস্তান একটি পর্ন হাব হিসেবে পরিচিত হোক । আমি শরীর দেখানোয় ওরা আমার উপর ক্ষিপ্ত । এমনকি তালিবানরা আমায় প্রাণে মেরে ফেলারও হুমকি দেখায় । তালিবানরা মনে করে নিজের শরীরের উপর আমার কোনও অধিকার নেই । ওরাই আমার শরীরে মালিক । সেই কারনে আমি আমার শরীরের সাথে যা করি এবং তা দেখানোর আমার কোন অধিকার নেই । আমার কাজের কারনে নাকি আমি সত্যিকারের আফগান হতে পারব না বলে তালিবানদের মত ।’ তালিবানদের নিয়ে এমনই বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন আফগানিস্তানের পর্ণস্টার অভিনেত্রী ইয়াসমিনা আলি ।
সম্প্রতি ব্রিটিশ পত্রিকা ডেইলি স্টারের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে ইয়াসমিনা আলি তালিবানদের প্রসঙ্গে আরও বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন । ১৯৯০ এর দশকে আফগানিস্তানে তালিবানদের প্রথম শাসনকালে কি অবর্ণনীয় যন্ত্রনায় দিন কেটেছিল ও শেষে সপরিবারে দেশত্যাগ করতে বাধ্য হতে হয়েছিল,তার সবিস্তারে বর্ণনা দিয়েছেন ইয়াসমিনা ।
ইয়াসমিনা বলেন, ‘আমি তখন খুব ছোট । ৯ বছরের কাছাকাছি বয়স হবে । সেই সময় আফগানিস্তানের দখল নেয় তালিবানরা । তার আগে আমি স্কুলে যেতাম । কিন্তু তালিবানরা আসার পর স্কুলে যাওয়া বন্ধ হয়ে যায় ।’
বছর আঠাশের বিখ্যাত এই পর্ণস্টারের কথায়, ‘
আসলে তালিবানরস নারীদের শিক্ষিত করতে চায় না । শিক্ষিত মহিলাদের ওরা খুব ভয় পায় । তালিবানের রাজত্বে সমস্ত নিয়ম শুধুমাত্র পুরুষদের সুবিধা এবং ভোগের জন্য । ঋতুস্রাবের সময় মেয়েদের অপবিত্র ও নোংরা বলে মনে করে তালিবানরা । অথচ নারী না থাকলে কোনো মানুষই থাকত না । কিন্তু সেই নারীদের নিয়েই যত সমস্যা তালিবানদের । যত বিধিনিষেধ নারীদের জন্য । তালিবানি আদর্শ হল নারীদের নিয়ন্ত্রণ করা । আমরা ভাগ্যবান ছিলাম যে দেশ ত্যাগ করে ব্রিটেনে পালিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছিলাম ।’
প্রসঙ্গত,লন্ডনেই পড়াশোনা ইয়াসমিনা আলীর । তারপর ২০১৬ সালে বাবা-মা ও ধর্ম ত্যাগ করে পর্ণ ছবিতে প্রথম পা রাখেন । অল্প দিনের মধ্যেই নাম করে ফেলেন । বর্তমানে পর্ণ ইন্ডাস্ট্রিতে খ্যাতির শীর্ষে রয়েছেন ইয়াসমিনা । এখন তিনি প্রাক্তন পর্ণতারকা মিয়া খলিফার মতো হিজাব পরা একজন প্রাপ্তবয়স্ক অভিনেত্রী হিসাবে পরিচিত । এই প্রসঙ্গে ইয়াসমিনা জানিয়েছেন, তিনি চলচ্চিত্রে উদ্দেশ্যমূলকভাবে হিজাব পরেন । কারন তিনি মুসলিম নারী ও হিজাবের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার অবসান ঘটাতে চান।
তবে পর্ণ মুভিতে অভিনয় করতে অনেক বিদ্বেষের সম্মুখীন হতে হয়েছে ও এখনও হতে হচ্ছে ইয়াসমিনা আলীকে । তিনি জানিয়েছেন,আফগান পুরুষদের কাছ থেকে তাকে অনেক সমালোচনা শুনতে হয়েছে । এখনও শুনতে হয় । তিনি বলেন, ‘আমি ব্রিটেনে থাকলেও আফগান পর্ন সার্চ করলেই আমার নাম উঠে আসে ।তালিবানরা আমার ভিডিও দেখে । মাঝে মাঝে আমায় সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রোলড করে । মৌখিকভাবে গালিগালাজ করা হয় । যদিও এসব আমি সহ্য করে নিই । কিন্তু সম্প্রতি আফগানিস্তান দখলের পর তালেবানদের কাছ থেকে আমি মৃত্যুর হুমকি পাচ্ছি । তবে তালিবানদের এই বর্বরতাকে আমি ভয় পাইনা ।’।
আফগান পর্ণস্টার ইয়াসমিনা আলী । ছবি : সৌজন্যে সোশ্যাল মিডিয়া ।