জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী,গুসকরা(পূর্ব বর্ধমান),০২ মার্চ : প্রত্যাশা মত প্রতিটি ওয়ার্ডে কার্যত বিরোধীদের উড়িয়ে দিয়ে পূর্ব বর্ধমান জেলার গুসকরা পুরসভায় জয়লাভ করে জয়ের হ্যাটট্রিক করল তৃণমূল কংগ্রেস। ফলাফল তৃণমূলের অনুকূলে ১৬-০ । সবচেয়ে বেশি ভোট পেয়ে জয়লাভ করেছেন ১২ নং ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী সুমন্ত ঘোষ (বুবাই)। তার প্রাপ্ত ভোট ২০১৭ । বিরোধীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভোট পেয়েছেন ১৩ নং ওয়ার্ডের সিপিএম প্রার্থী দিলীপ সাহা। তার প্রাপ্ত ভোট ৫৪৪ । অনেক পেছিয়ে কোথাও সিপিএম, কোথাও বা বিজেপি দ্বিতীয় স্থানে থাকলেও সার্বিকভাবে বিজেপি দ্বিতীয় স্থান দখল করে। অথচ মাত্র কয়েক মাস আগে বিজেপি এখানে প্রথম স্থানে ছিল। একটি মাত্র আসনে প্রার্থী দিয়ে এবং প্রচারের আলোর বাইরে থাকা কংগ্রেস প্রার্থীর দ্বিতীয় স্থান দখল খুবই উল্লেখযোগ্য ঘটনা।
বৈদ্যুতিক সমস্যার জন্য নির্দিষ্ট সময়ের বেশ কিছু দেরিতে ভোট গণনা শুরু হয় । যেকোনো ধরনের অশান্তি এড়ানোর জন্য গণনা কেন্দ্রের বাইরে ও ভিতরে ছিল কড়া পুলিশি নিরাপত্তা ব্যবস্থা। তৃণমূলের সমস্ত প্রার্থী ও কাউণ্টিং এজেন্টরা গণনা কেন্দ্রে হাজির থাকলেও বিরোধীদের সেভাবে দেখা যায়নি। ভোটের ফল বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে গণনা কেন্দ্রের বাইরে থাকা তৃণমূল কর্মীরা উল্লাসে মেতে ওঠে। পরস্পরকে আবিরে ভরিয়ে দেয়। গণনা কেন্দ্র থেকে বিজয়ী প্রার্থীরা বের হলে তাদের নিয়ে কর্মীরা আর একদফা আনন্দে মেতে ওঠে ।
গুসকরা শহরে লোকসভা ও বিধানসভা ভোটে বিজেপির ফল দেখে মনে করা হয়েছিল বিজেপি হয়তো কিছুটা লড়াই দেবে। যেভাবে ভোটের প্রচারে বিজেপি শাসকদল তৃণমূলের থেকে পেছিয়ে ছিল এবং ভোটের দিন কার্যত অনুপস্থিত ছিল তাতে ভোটের ফলে তাদের ভাগ্য সেদিনই লেখা হয়ে গিয়েছিল। যদিও এব্যাপারে বিজেপি নেতৃত্ব তৃণমূলের নীরব সন্ত্রাসের দিকে আঙুল তুলেছে। তাদের অভিযোগ বহিরাগতদের দাপটে তারা কোনো রকম প্রচারই করতে বা ভোটকেন্দ্রে এজেন্ট বসাতে পারেনি ।
বিধানসভা ভোটের মত গুসকরাতেও সিপিএমকে শূন্য হাতেই ফিরতে হলো। বিজেপির মত তাদেরও অভিযোগের আঙুল বহিরাগতদের দিকে। তাদের বক্তব্য – ঠিকমত প্রচার করার সুযোগ পেলে ফল অন্য রকম হতেই পারত। যদিও সেভাবে তাদের প্রচারে দেখা যায়নি ।
বিরোধীদের সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে শহর তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি তথা ১০ নং ওয়ার্ডের প্রার্থী কুশল মুখার্জ্জী বললেন – সুখের পায়রা হলে ভোটে জেতা যায়না। আপদে-বিপদে মানুষের পাশে থাকতে হয়। লোকসভা বা বিধানসভা ভোটে পেছিয়ে থাকলেও আমরা সর্বদা মানুষের পাশেই ছিলাম। তিনি আরও বললেন- এই জয় মা-মাটি-মানুষের জয়, মমতা ব্যানার্জ্জীর উন্নয়নের জয়। যেভাবে আমাদের অভিভাবক অনুব্রত মণ্ডল ও স্হানীয় বিধায়ক অভেদানন্দ থাণ্ডার পাশে ছিলেন তাতে এই জয় ছিল খুবই স্বাভাবিক এবং প্রত্যাশিত । তৃণমূল কংগ্রেসকে দু’হাত ভরে সমর্থন করার জন্য তিনি গুসকরাবাসীদের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। অসুস্থতার জন্য আনন্দের দিনে বিধায়ক অনুপস্থিত থাকায় কুশল বাবুর একটা আক্ষেপ থেকে গেছে ।।