এইদিন ওয়েবডেস্ক,কক্সবাজার,২২ ফেব্রুয়ারী : টানা ১৪ দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে মারা গেলেন বাংলাদেশের কক্সবাজারের চকরিয়ার মালুমঘাটে পিক-আপ ভ্যানের ধাক্কায় আহত রক্তিম শীল । মঙ্গলবার সকাল ১০ টা নাগাদ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন । এনিয়ে ওই পরিবারের ৭ ভাইয়ের মধ্যে ৬ ভাইয়ের মৃত্যু হল । দূর্ঘটনার পর অভিযোগ উঠেছিল শীল বাড়িতে দূর্গামন্দির তৈরি করার জন্যই পরিকল্পিতভাবে তাঁদের খুন করা হয়েছে । আশঙ্কা প্রকাশ করা হচ্ছিল বিষয়টি নিছক দূর্ঘটনা বলে চলিয়ে দেবে বাংলাদেশ পুলিশ । অবশেষে সেই আশঙ্কাই সত্যি হল ।
ঘটনার তিন দিনের মাথায় ঘাতক পিকআপ ভ্যানের চালক সাহিদুল ইসলাম ওরফে সাইফুলকে গ্রেফতার করা হয় । আর জেরায় নাকি সাইফুল জানিয়েছিল ওই দিন ঘন কুয়াশা ছিল । ফলে দৃশ্যমানতা কম থাকায় সে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা ব্যক্তিদের দেখতে পায়নি । যার ফলে দূর্ঘটনাটি ঘটে যায় । অবশেষে ঘাতক গাড়ির চালকের দাবিকেই সত্যি বলে মেনে নিল ঘটনার তদন্তের দায়িত্বে থাকা র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন (র্যাব) । এদিকে ঘটনার দিন ঘাতক গাড়িতেই ছিল গাড়ির মালিক । তারপর থেকে সে বেপাত্তা হয়ে যায় । এদিন পর্যন্ত ঘাতক পিক-আপ ভ্যানের মালিকের টিকি পর্যন্ত ছুঁতে পারেনি র্যাবের পোড় খাওয়া আধিকারিকরা ।
ফলে ওই তদন্তকারী সংস্থার নিরপেক্ষতা নিয়েই এখন প্রশ্ন উঠছে ।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি ভোরে বেপরোয়া পিকআপ ভ্যানের ধাক্কায় পাঁচ ভাই অনুপম শীল (৪৬), নিরুপম শীল (৪০), দীপক শীল (৩৫), চম্পক শীল (৩০) ও স্মরণ শীল (২৯) নিহত হন । ঘটনার ১০ দিন আগে তাদের বাবা সুরেশ চন্দ্রের মৃত্যু হয় । বাবার শ্রাদ্ধানুষ্ঠানে যোগ দিতে তাঁরা বাড়িতে সমবেত হয়েছিলেন । স্থানীয় একটি মন্দিরে ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান শেষে একসঙ্গে ৯ ভাই-বোন (৭ ভাই ও ২ বোন) হেঁটে বাড়িতে আসার জন্য সড়কের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। সেই সময় পিকআপের ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই একসঙ্গে চার জনের মৃত্যু হয় । ওইদিন বিকেলে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান আরেক ভাই স্মরণ শীল।
এ ঘটনায় অক্ষত অবস্থায় বেঁচে যান সুরেশ চন্দ্র শীলের মেয়ে মুন্নী শীল। আহত হন আরও দুই ছেলে ও এক মেয়ে। নিহতদের বোন হীরা শীল মালুমঘাট খ্রিষ্টান হাসপাতালে চিকিৎসাধীন । তাঁর একটি পা কেটে বাদ দিতে হয়েছে । রক্তিমকে ওই দিনই চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল । কিন্তু এদিন চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয় । নিহতের শ্যালক অনুপম শর্মা বলেন,’পুরো পরিবারটা শেষ হয়ে গেল । আমার বোন ভাগ্নেসহ পরিবারে ছোটো ছোটো ছেলেমেয়ে আর বিধবা মহিলারা এখন চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়লো ।’।