এইদিন ওয়েবডেস্ক,পুনে(মহারাষ্ট্র),০৯ ফেব্রুয়ারী : নিজের শিশুসন্তানকে ১ লাখ টাকায় বিক্রি করে অপহরণের অভিযোগ রজু করলেন মহিলা । তারপর বিভিন্ন জায়গায় হাত বদল হয় সাড়ে চার বছরের ওই শিশুটি । ঘটনাটি ঘটেছে মহারাষ্ট্রের পুনে জেলার কোথরাদ (Kothrad) থানা এলাকায় । শেষে বছর চব্বিশের ওই মহিলার অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশের নয়টি দল মিলে ঘটনার তদন্তে নেমে শিশুটিকে উদ্ধার করে তার বাবার হাতে তুলে দেয় । সেই সঙ্গে শিশুটিকে বিক্রি ও কেনার অভিযোগে শিশুর মা’সহ ৭ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ । পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের নাম প্রিয়াঙ্কা পাওয়ার, জান্নাত বশির শেখ, ভানুদাস মালি, চন্দ্রকলা মালি, দীপক মাহাত্রে, সীতাবাই মাহাত্রে, তুকারাম নিম্বালে ও রেশমা সুতার । ধৃতদের মধ্যে প্রিয়াঙ্কা পাওয়ার হল নীল নামে ওই শিশুটির মা । ধৃতদের আদালতে তোলা হলে পুলিশ হেফাজতে পাঠানো হয় ।
পুলিশ সুত্রে জানা গেছে,কোথারাদ থানা এলাকার বাসিন্দা প্রিয়াঙ্কা পাওয়ারের দুই ছেলে । বড় ছেলের বয়স ৯ বছর । ছোট নীল । স্বামীর সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় বেশ কিছুদিন ধরে দুই সন্তানকে নিয়ে আলাদা থাকছিলেন প্রিয়াঙ্কাদেবী । গত ৪ ফেব্রুয়ারী বিকেল ৫ টা নাগাদ তিনি কোথরাদ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন । কিছু অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তি তাঁর ছোট ছেলে নীলকে অপহরণ করেছে বলে অভিযোগে জানান ওই মহিলা । পুনের ডেপুটি পুলিশ কমিশনার পূর্ণিমা গাইকোয়াড় বলেন, ‘ঘটনার তদন্তের জন্য কোথরাদ,বাজরে এবং উত্তমনগর থেকে নয়টি পুলিশ দল গঠন করা হয়েছিল । প্রথম থেকেই মহিলা ও তাঁর প্রতিবেশীদের প্রতি আমাদের নজর ছিল । তাই প্রথমে অভিযোগকারিনীকে জিজ্ঞাসাবাদ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় । এ ছাড়া সিসিটিভি ফুটেজ ও সোর্স মারফত খবরাখবর নিতে শুরু করেন তদন্তকারী আধিকারিকরা । তখন শিশুটিকে বিক্রির বিষয়টি সামনে আসে । আর এই ঘটনায় জান্নাত শেখ ও শিশুটির মা জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায় ।’
পুলিশ সুত্রে খবর,তদন্তে পুলিশ জানতে পারে দুই শিশু সন্তানকে নিয়ে ৩ জনের সংসারের খরচ চালাতে পারছিলেন না প্রিয়াঙ্কা পাওয়ার । তাই তিনি নীলকে বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন । তারপর তিনি জান্নাত ও রেশমা সুতারকে তিনি রাজি করিয়ে ফেলেন । তখন ওই দু’জন ভানুদাস ও চন্দ্রকলা মালির সঙ্গে কথা বলেন । তাঁরা শিশুটি কিনতে রাজি হয়ে যান । রফা হয় এক লাখ টাকা । পরে ভানুদাসরা শিশুটিকে নিঃসন্তান দম্পতি দীপক ও সীতাবাই মাহাত্রেকে ১ লাখ ৬ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেন ।
পুলিশ জানিয়েছে,ধৃত প্রিয়াঙ্কা পাওয়ারের কাছ থেকে সন্তান বিক্রি বাবদ পাওয়া এক লাখ টাকার মধ্যে ৮১,০০০ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে । ধৃতরা শিশু পাচারের সঙ্গে জড়িত কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ । যদিও ধৃত মাহাত্রে দম্পতি জানিয়েছেন,সন্তান না থাকার কারনেই তাঁরা শিশুটিকে কিনেছিলেন ।।