এইদিন ওয়েবডেস্ক,বাঁকুড়া,০৮ ফেব্রুয়ারী : অনান্য দিনের মতই সোমবার রাতে খাওয়া দাওয়ার পর নিজের ঘরে ঘুমতে চলে গিয়েছিল বাঁকুড়ার সোনামুখী থানার পাঁচাল গ্রামের বাসিন্দা সদ্য নিট পাশ করা মেধাবী পড়ুয়া সায়ন কর্মকার । কিন্তু মঙ্গলবার অনেক বেলা পর্যন্ত দরজা না খোলায় সন্দেহ হয় পরিবারের । প্রতিবেশীদের সহায়তায় ভাঙা হয় ঘরের দরজার ছিটকিনি । তারপর ঘরে ঢুকতেই বছর উনিশের ওই যুবককে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পাওয়া যায় । হঠাৎ ওই যুবক আত্মঘাতী হওয়ায় ধন্দ্বের সৃষ্টি হয়েছে এলাকায় । যদিও মৃত যুবকের বাবা মঙ্গল দাস কর্মকারের দাবি,মারন গেমে আসক্তিই কেড়ে নিয়েছে তাঁর ছেলের প্রাণ । মারন গেম নাকি প্রেম ঘটিত কারনে ওই যুবক আত্মঘাতী হয়েছে তা জানতে মৃত যুবকের মোবাইল পরীক্ষা করে দেখছে সোনামুখী থানার পুলিশ ।
পাঁচাল গ্রামের বাসিন্দা সায়ন কর্মকার ছোট থেকেই অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র ছিল । উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করার পর চলতি বছর সর্বভারতীয় নিট পরীক্ষায় সফলভাবে উত্তীর্ণ হয়েছিল । ডাক্তারি পরীক্ষায় ৩৬৫১১ র্যাঙ্ক করেছিলেন সায়ন । মুর্শিদাবাদ,মালদা ও কোচবিহার এই তিনটি মেডিক্যাল কলেজে সে ডাক্তারি পড়ার সুযোগ পেয়েছিলেন । পরিবারের লোকজনও তাঁকে নিয়ে স্বপ্নের জাল বুনতে শুরু করে দিয়েছিলেন । কিন্তু সায়ন মেডিক্যাল কলেজের মুখ দেখার আগেই সব শেষ ।
মঙ্গল দাস কর্মকার বলেন, ‘আমার ছেলে যখন একাদশ শ্রেণীতে পড়ত তখন ছেলের হাতে কাটা দাগ পেয়েছিলাম । সেই সময় মোবাইলের বিভিন্ন মারণ গেম নিয়ে প্রচার চলছিল । এনিয়ে ছেলেকে চেপে ধরলে সে জানায় পড়ে গিয়ে হাত ছড়ে গেছে । আমরাও তার কথা বিশ্বাস করে নিয়েছিলাম । পাশাপাশি আমি ছেলেকে ওই সমস্ত গেম থেকে দুরে থাকার জন্য বলেছিলাম । তারপর সায়ন পড়াশোনায় ব্যাস্ত হয়ে পড়ে । এখন বুঝতে পারছি ওই সমস্ত মারণ গেমের নেশায় পড়ে গিয়েছিল আমার ছেলে ।’ পাশাপাশি তিনি বলেন, ‘ছেলেকে নিয়ে কত স্বপ্ন ছিল আমাদের । আমি আর সায়নের মা প্রায় দিনই গভীর রাত পর্যন্ত এনিয়ে কত পরিকল্পনা করতাম । কিন্তু এক ঝটকায় সব কিছু শেষ হয়ে গেল ।’
জানা গেছে,এদিন সকালে সায়নের ঘরের সিলিং ফ্যানের পাশের একটি হুক থেকে ওড়না জাতীয় কিছু দিয়ে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় তাঁর নিথর দেহ ঝুলতে দেখে পরিবারের লোকজন ও প্রতিবেশীরা । খবর পেয়ে সোনামুখী থানায় পুলিশ গিয়ে মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বিষ্ণুপুর জেলা হাসপাতালে পাঠায় । ওই মেধাবী পড়ুয়ার মর্মান্তিক মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে এলাকায় ।।