দিব্যেন্দু রায়,কাটোয়া(পূর্ব বর্ধমান),০২ ফ্রেব্রুয়ারী : দুই দশক আগের একটি খুনের মামলায় ৩ অভিযুক্তকে দোষী সব্যস্ত করে আমৃত্যু কারাদণ্ডের সাজা ঘোষণা করলন কাটোয়া অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালত । সেই সঙ্গে ৫ হাজার টাকা করে জরিমানারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে । জানা গেছে, সাজাপ্রাপ্তদের নাম বংশি ঘোষ, ধানু ঘোষ ও বোগা ঘোষ । তাঁরা প্রত্যেকেই কেতুগ্রামের রঘুপুর গ্রামের বাসিন্দা । বুধবার বিচারক সুকুমার সূত্রধরের এজলাসে তাঁদের সাজা ঘোষণা করা হয় ।
জানা গেছে,১৯৯৯ সালের ১৯ জুন খুন হয়েছিলেন কেতুগ্রামের রঘুপুর গ্রামের বাসিন্দা পেশায় গোপালক শ্রীদাম ঘোষ । তাঁর ঘারে পয়েন্ট ব্লাঙ্ক রেঞ্জ থেকে গুলি করা হয় । মৃতের দাদা গোপীনাথ ঘোষ এই ঘটনায় একই গ্রামের বাসিন্দা ধানু ঘোষ, ফকির ঘোষ, বোগা ঘোষ ও বংশি ঘোষের বিরুদ্ধে একটি এফআইআর দায়ের করেন । তাঁর অভিযোগ, প্রতিদিনের মত ওই দিনেও শিলুড়ী চরে দুধ বিক্রি করতে যাচ্ছিলেন তাঁর মেজোভাই শ্রীদাম । পৌনে আটটা নাগাদ তাঁর ভাই মোটরচালিত করে জুড়ানপুর ঘাটে পৌছালে তাঁর সেজভাই দিলীপ ঘোষও ওই নৌকায় ওঠে । একই সঙ্গে অস্ত্রসস্ত্র সঙ্গে নিয়ে নৌকায় ওঠে ধানু ঘোষ, ফকির ঘোষ, বোগা ঘোষ ও বংশি ঘোষ । ওই চারজন মিলে তাঁর মেজো ভাইয়ের উপর হামলা চালায় । ধানু ঘোষ একটি আগ্নেয়াস্ত্র বের করে পয়েন্ট ব্লাঙ্ক রেঞ্জ থেকে তাঁর ভাইয়ের ঘারে গুলি করে ৷ নৌকার উপরে তাঁর ভাই রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়লে ওই ৪ জন পালিয়ে যায় । ভাগীরথীর চরে জমিদখল নিয়ে বিবাদের জেরেই তাঁর ভাই শ্রীদামকে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগে জানান গোপীনাথ ঘোষ ।
জানা গেছে,অভিযোগ পেতেই বংশি ঘোষ, ধানু ঘোষ ও বোগা ঘোষকে গ্রেফতার করে পুলিশ । তবে পুলিশ চতুর্থ অভিযুক্ত ফকির ঘোষের কোনও হদিশ করতে পারেনি । এই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন নিহতের ভাই দিলীপ ঘোষ । কিন্তু তিনি ২০১৫ সালের ১৬ জুন আদালতে সাক্ষী দিয়ে বাড়ি ফেরার পর ওই রাতেই খুন হয়ে যান । তাতেও নাম জড়ায় অভিযুক্তদের । তবে দিলীপ ঘোষ খুনের মামলা বর্তমানে আদালতে বিচারাধীন । এদিন শ্রীদাম ঘোষ খুনের মামলায় অভিযুক্তদের দোষী সব্যস্ত করে সাজা ঘোষণা করা হয় ।
আদালত সুত্রে খবর,এই খুনের মামলায় ২০০২ সালের ৩১ জানুয়ারি অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে পুলিশ । ফকির ঘোষকে ফেরার দেখানো হয় । মোট ৭ জন সাক্ষ্য দেয় । দীর্ঘ বাইশ বছর পর শেষ পর্যন্ত খুনিরা সাজা পাওয়ায় খুশি মৃতের পরিবার পরিজন ।।