জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী,গুসকরা(পূর্ব বর্ধমান),৩০ জানুয়ারী : আশা-আশঙ্কার কালো মেঘ সরিয়ে এবং ব্যবসায়ী ও মেলা-প্রিয় ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের মুখে হাসি ফুটিয়ে অবশেষে ৩০ শে জানুয়ারী শুরু হলো রটন্তী কালী পুজো উপলক্ষ্যে আয়োজিত ও গুসকরা পুরসভা পরিচালিত মেলা তথা গুসকরা উৎসব। মেলা তথা উৎসবের শুভ উদ্বোধন করেন পূর্ব বর্ধমান জেলার এডিএম (জেনারেল) সুপ্রিয় অধিকারী । কোভিড বিধিকে মান্যতা দিয়ে একটি ছোট্ট সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে উৎসবের সূচনা করা হয়। অনুষ্ঠানে বনানী সামন্তের উদ্বোধনী ও সমাপ্তি সঙ্গীত এবং পৌলিমা বিশ্বাসের নৃত্য উপস্থিত বিশিষ্ট অতিথি ও দর্শকদের প্রভুত আনন্দ দেয়।
এডিএম ছাড়াও অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন স্হানীয় বিধায়ক অভেদানন্দ থাণ্ডার, অরূপ সরকার, অরূপ মিদ্দা, মলয় চৌধুরী, উৎপল লাহা, দেবাশীষ গোস্বামী, রণজিৎ মণ্ডল, পুর প্রশাসক মণ্ডলীর অন্যতম সদস্যা রত্না গোস্বামী ও সদস্য কশল মুখার্জ্জী, পৌরসভার বড়বাবু মধুসূদন পাল সহ কয়েকজন কর্মী এবং চোংদার বাড়ির পক্ষ থেকে শ্যামল চোংদার। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন পুর প্রশাসক মণ্ডলীর চেয়ারপার্সন গীতারাণী ঘোষ। সমগ্র অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন দেবব্রত শ্যাম। যথারীতি তার পরিচালনার গুণে অনুষ্ঠানটি অন্য মাত্রা পায়।
অনুষ্ঠানে প্রতিটি বক্তা মেলা দেখতে আসা জনগণকে কোভিড বিধি মেনে চলতে ও মুখে মাস্ক ব্যবহার করার জন্য অনুরোধ করেন। রটন্তী মায়ের পুজো দিতে আসা ভক্তদের অনেকের মুখে মাস্ক না থাকলেও অধিকাংশকেই মাস্ক পড়ে থাকতে দেখা যায়। উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে মেলার প্রবেশ পথে মেলায় আসা মানুষদের হাতে স্যানিটাইজার দিতে দেখা যায়। জানা যাচ্ছে আগামী সাতদিন ধরে মেলা চলবে। প্রতিদিন স্হানীয় শিল্পীদের নিয়ে বিভিন্ন ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে। যদিও করোনা জনিত কারণে এবার মেলার জৌলুস অনেক কম। মেলাতে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য পুলিশ আধিকারিক ও সিভিক ভলানটিয়ারদের এবং যেহেতু ব্যস্ত জাতীয় সড়ক এন.এইচ টু এর পাশে মেলা হচ্ছে তাই কোনো রকম দুর্ঘটনা যাতে না ঘটে তার জন্য ট্রাফিক গার্ডদের সচেতন থাকতে দেখা যায় ।
বক্তব্য রাখতে গিয়ে এ.ডি.এম নস্টালজিক হয়ে পড়েন। এর আগে আউসগ্রাম ১ এর বি.ডি.ও হিসাবে এলাকার মানুষের সঙ্গে তার আত্মিক যোগাযোগের কথা তিনি বলেন। গুসকরার সঙ্গে তার অন্য ধরনের অনুভূতির কথা জানান। বিধায়ক বলেন,’এই মেলাকে কেন্দ্র করে এলাকার মানুষের মধ্যে যে একটা ভাবাবেগ কাজ করে সেটা তিনি জানেন। তাই যখন মানবিক মুখ্যমন্ত্রী ছোট ছোট মেলার আয়োজন করার কথা বলেন নুন্যতম সময় নষ্ট না করে তিনি প্রশাসক মণ্ডলীর সদস্য ও পৌরসভার আধিকারিক সহ এলাকার বিশিষ্ট মানুষদের নিয়ে আলোচনায় বসেন এবং মেলার আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেন।’ চোংদার বাড়ির অন্যতম সদস্য শ্যামল চোংদার বলেন,’বাংলার আনুমানিক ১২৬৫ সালে সাধক মহাবিষ্ণু চোংদার রটন্তী পুজো এবং একইসঙ্গে এলাকার পঞ্চ ভদ্রমহোদয়ের সহযোগিতায় মেলার সূচনা করেন। সেই থেকে পুজো ও মেলা আজও চলে আসছে।’।