এইদিন ওয়েবডেস্ক,চাঁচল(মালদা),২৯ জানুয়ারি : মালদা জেলার চাঁচলের নার্সিংহোমে সদ্যজাত শিশু বদলের অভিযোগ ঘিরে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়াল এলাকায় । প্রসূতির পরিবারে দাবি, অস্ত্রোপচার করে সন্তান প্রসবের পর কন্যসন্তান দেখানো হয় । কিন্তু শিশুর জন্মের শংসাপত্রে ‘বয় বেবি’ লেখা হয়েছে । এরপর শিশু বদলের অভিযোগ তুলে প্রসুতির পরিবার পরিজনেরা শনিবার দুপুরে নার্সিংহোমের গেটে তালা ঝুলিয়ে দেন । খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে চাঁচল থানার পুলিশ । আসেন চাঁচলের মহকুমা শাসক কল্লোল রায় ও মহকুমা স্বাস্থ্য আধিকারিক জয়ন্ত বিশ্বাস । মহকুমা স্বাস্থ্য আধিকারিককে বলেন, ‘ওই নার্সিংহোম স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছে কিনা তা দেখতেই এদিন পরিদর্শনে গিয়েছিলাম । তখন ঘটনার কথা শুনতে পাই । তবে এখনও এনিয়ে কেউ লিখিতভাবে অভিযোগ জানাননি । অভিযোগ পেলে খতিয়ে দেখা হবে ।’
জানা গিয়েছে,চাঁচল-আশাপুর রাজ্য সড়কের পাশে রায়পাড়ায় রয়েছে ওই নার্সিংহোমটি । গত ২৬ জানুয়ারি সন্তান প্রসবের জন্য হরিশ্চন্দ্রপুরের বাসিন্দা রাজেশ আগরওয়াল তাঁর স্ত্রী রেশমীদেবীকে নার্সিংহোম ভর্তি করেন । রাজেশবাবু বলেন, ‘চিকিৎসক শ্রীকান্ত মাজির অধীনে চিকিৎসা চলছিল আমার স্ত্রীর । ভর্তির দিনেই অস্ত্রপচার করে সন্তান প্রসব করানো হয় । তখন আমাদের একটি সদ্যোজাত কন্যাসন্তান দেখানো হয়েছিল । এদিন আমার স্ত্রীকে নার্সিংহোম থেকে ছুটি দেওয়ার কথা । তাই কাগজপত্র তৈরি করা হচ্ছিল । তখন আমরা শিশুর জন্মের শংসাপত্রে দেখি তাতে লেখা হয়েছে পুত্রসন্তান বা ‘বয় বেবি’ । ওই শংসাপত্রের নীচে চিকিৎসক শ্রীকান্ত মাজির সইও রয়েছে । বিষয়টি চিকিৎসককে জানালে উনি আমাদের সঙ্গে দুর্ব্যাবহার করেন । আমাদের সন্দেহ নবজাতক বদলে ফেলা হয়েছে ।’
জানা গেছে,খবর পেতেই এদিন দুপুর নাগাদ নার্সিংহোম প্রসুতির পরিবারের বেশ কিছু লোকজন জড়ো হয়ে যায় । তাঁরা নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে শিশুবদলের অভিযোগ তুলে তুমুল বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন । শেষে তাঁরা ক্ষিপ্ত হয়ে নার্সিংহোমের গেটে তালা ঝুলিয়ে দেন । ঘটনা ঘিরে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এলাকায় । খবর পেয়ে আসে চাঁচল থানার পুলিশ । এদিকে ওই পরিস্থিতির মাঝেই নার্সিংহোমে পৌঁছে যান মহকুমা শাসক ও মহকুমা স্বাস্থ্য আধিকারিক । তাঁদের কাছে নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন প্রসুতির পরিবারের লোকজন ।
এদিকে অভিযোগ প্রসঙ্গে চিকিৎসক শ্রীকান্ত মাজি বলেন, ‘সন্তান কি হয়েছে আমি জানি না। নার্সরা জানেন । ওরাই বলতে পারবেন ।’ সেই সঙ্গে তিনি দাবি করেন ‘বয় বেবি’ লেখা শংসাপত্রে সই তাঁর নয় । তবে নার্সিংহোমের মালিকপক্ষের তরফ থেকে মামুনুর রশিদ বলেন, ‘নবজাতকের শংসাপত্রটি নার্সরা লিখেছেন । চিকিৎসক তাতে সই করেছেন । ভুল বশত হয়ে গেছে । বিষয়টা আমরা খতিয়ে দেখছি ।’।