প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,২৩ জানুয়ারি : ব্যাঙ্ক থেকে কৃষি ঋণ নিতে গিয়ে প্রতারিত হয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হলেন এক চাষি । ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরে।প্রতারিত চাষি সুশান্ত সাহানা প্রতারণার ঘটনার সবিস্তার উল্লেখ করে জামালপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগ গ্রহন করে পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। এই ঘটনা উদ্বেগ বাড়িয়েছে ব্যাঙ্ক ঋণ নিয়ে চাষ করা জামালপুরের কৃষক মহলের ।
চাষি সুশান্ত সাহানা জামালপুর থানার হরগোবিন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা। লিখিত অভিযোগে পুলিশকে তিনি জানিয়েছেন,তিনি জামালপুরের শুড়েকালনা স্টেট ব্যাঙ্কের একজন গ্রাহক। প্রতি বছরের ন্যায় এবছরও আলু চাষের স্বার্থে কৃষি ঋণ পাবার জন্য তিনি নভেম্বর মাসের প্রথম দিকে ব্যাঙ্কে আবেদন করেন । ব্যাঙ্ক ম্যানেজার বিভিন্ন কাগজপত্রে তাকে দিয়ে সই করিয়ে নেওয়ার পর কয়েকদিন বাদে লোনের টাকা তুলে নেওয়ার কথা বলেন। ৮৩ হাজার টাকা লোন স্যাংশন হয়েছে বলে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ মাধ্যমে তিনি জানতে পারেন । সেই মত আবেদন করার কিছুদিন বাদে সুশান্ত বাবু লোনের টাকা ব্যাঙ্কে তুলতে যান।তখন ব্যাঙ্ক ম্যানেজার তাঁকে বলে, ’লোনের টাকা আপনি তুলেনিয়ে গিয়েছেন । আবার কিসের লোন পাবেন’।ব্যাঙ্ক ম্যানেজারের মুখ থেকে এমন কথা শুনে
মাথায় হাত পড়ে যায় চাষি সুশান্ত সাহানার ।
ফের পরেরদিন ব্যাঙ্ক ম্যানেজারের কাছে গিয়ে তিনি বলেন ,ব্যাঙ্ক লোনের টাকা তিনি তোলেন নি। তথ্য ভালোভাবে যাচাই করে দেখার জন্য
সুশান্ত বাবু ওইদিন ব্যাঙ্ক ম্যানেজারকে পুনরায় অনুরোধও করেন।কিন্তু ব্যাঙ্ক ম্যানেজার সন্ধ্যা
পর্যন্ত তাঁকে বসিয়ে রেখে জানিয়েদেন পরের সপ্তাহে এসে খোঁজ নিতে। অভিযোগ ব্যাঙ্ক ম্যানেজার এই ভাবে সুশান্ত বাবুকে দু’মাস ধরে ঘোরায় ।সুশান্তবাবু জানিয়েছেন,’এরপর ফের একদিন লোনের টাকা না পাবার কথা জানাতে তিনি ব্যাঙ্ক ম্যানেজারের কাছে যান । তখন ব্যাঙ্ক ম্যানেজার পুলিশ দিয়ে ব্যবস্থা নেবেন বলে হুমকি দিয়ে তাকে ব্যাঙ্ক থেকে একপ্রকার তাড়িয়ে দেয়’ । সুশান্তবাবু দাবি করেন ,ব্যাঙ্ক থেকে কৃষি ঋণ নিতে গিয়ে তিনি প্রতারণার শিকার হয়েছেন বুঝতে পরে রবিবার জামালপুর থানার পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন ।
এই বিষয়ে জামালপুর থানার এক পুলিশ কর্তা বলেন ,’অভিযোগ জমা পড়েছে । অভিযোগের তদন্ত শুরু হয়েছে । প্রকৃত কি ঘটনা ঘটেছে তা খতিয়ে দেখা হবে’ । স্টেট ব্যাঙ্ক শুড়েকালনা শাখার ম্যানেজার মৃত্যুঞ্জয় কুমার কে এদিন ফোন করা হলে তিনি যদিও নিশ্চিৎ ভাবে বলতে পারেন নি সুশান্ত সহানা কেসিসি লোনের টাকা ব্যাঙ্ক থেকে তুলে নিয়েছেন , না তোলেন নি । তবে তিনি বলেন , “সুশান্তবাবু ব্যাঙ্কে এসেছিলেন । ওনাকে আমি সময় দিতে পারিনি ।ব্যাঙ্কের সিসিটিভি টেকনিশিয়ান কোভিড পরিস্থিতির জন্য আসতে পারেনি বলে সিসিটিভি ফুটেজ এখনও দেখা হয়ে ওঠেনি ।নথি সহ সমস্ত কিছু খতিয়ে দেখতে হবে ।’ সঠিক কি হয়ে আছে তা খতিয়ে দেখে নিয়ে ওই গ্রাহককে ডেকে পাঠাবেন বলে ম্যানেজার জানিয়েছেন ।।