এইদিন ওয়েবডেস্ক,চাঁচল(মালদা),০৬ জানুয়ারি : ঘরের দেওয়ালে লেখা ‘আমার মৃত্যুর জন্য আমার স্ত্রী দায়ী’৷ লেখা হয়েছে স্ত্রীর নামও । অন্য দেওয়ালে লেখা, ‘আমার দুই মেয়ের খেয়াল রেখো’ । ওই ঘরেই সিলিং ফ্যান থেকে ঝুলছে যুবকের মৃতদেহ । মৃতের হাঁটুদুটি মোড়া অবস্থায় ঠেকে রয়েছে ঘরের মেঝেতে । বৃহস্পতিবার সকালে মালদহের চাঁচলের রাজীব মোড়ের একটি ঘর থেকে ছোটন কর্মকার (৩৮) নামে ওই যুবকের দেহ উদ্ধার ঘিরে রহস্য দাঁনা বেঁধেছে । খুন নাকি আত্মহত্যা এনিয়ে ধন্দ্বে পুলিশ । যুবকের স্ত্রী সপ্তমী কর্মকারকে এনিয়ে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করছে ।
পুলিশ স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে,পেশায় কাঠমিস্ত্রি ছোটন কর্মকারের বাড়ি চাঁচলের জেলেপাড়ায় । সপ্তমীদেবীর সঙ্গে তাঁর প্রেমের সম্পর্ক ছিল । বছর দশেক আগে তাঁরা বিয়ে করেন । তাঁদের দুই নাবালিকা কন্যাসন্তান রয়েছে । স্ত্রী ও দুই মেয়েকে নিয়ে চাঁচলের রাজীব মোড়ের একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন ওই যুবক । এদিন সকালে আশপাশের লোকজন জানালা দেখেন সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলছে ওই যুবকের মৃতদেহ ৷ পরে খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে দরজার খিল ভেঙে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায় । সেই সঙ্গে ঘরের দেওয়ালে ইঁট বা পাথর জাতীয় কোনও বস্তু দিয়ে মৃত্যুকালীন জবানবন্দি নজরে পড়ে পুলিশের । পুলিশ জানিয়েছে,ওই লেখা আদপেই মৃতের হাতের লেখা কিনা তা জানতে বিশেষজ্ঞের সাহায্য নেওয়া হবে ।
মৃতের ভাই গৌরাঙ্গ কর্মকার বলেন,’এদিন সকালে শুনলাম দাদার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়েছে । তারপর ঘরে ঢুকে দেখি সিলিং ফ্যানের সঙ্গে দাদার মৃতদেহ ঝুলছে। ঘরের দেওয়ালে লেখা,মৃত্যুর জন্য দায়ী বৌদি । এছাড়া দুই মেয়ের খেয়াল রাখার জন্য আবেদন জানিয়েও দেওয়ালে লেখা হয়েছিল । আমরা এর সঠিক তদন্ত ও বিচারের জন্য চাঁচল থানায় লিখিত অভিযোগ জানাবো ।’
অন্যদিকে মৃত যুবকের স্ত্রী সপ্তমী কর্মকার জানান,তাঁর স্বামী প্রতিনিয়ত মদ্যপ অবস্থায় বাড়িতে আসতেন । সংসারের খরচখরচা দিতেন না । খরচের জন্য টাকা চাইলেই অশান্তি করতেন । সেই কারনে তিন দিন ধরে তিনি বাবার বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলেন । তিনি বলেন, ‘এত কিছু অশান্তির মাঝেও স্বামীর প্রতি আমার ভালোবাসা অটুট ছিল । কিন্তু উনি যে এমন করে আমাদের ছেড়ে চলে যাবে ভাবতে পারিনি । যাবার আগে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা বদনাম দিয়ে গেল । এখন আমি ছোট ছোট দুই মেয়েকে কোথায় যাবো,কি করব জানি না ।’।