এইদিন ওয়েবডেস্ক,নয়া দিল্লি,০৫ জানুয়ারী : ক্রমবর্ধমান করোনার মাঝে ওমিক্রন নিয়ে সতর্ক করল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা(ডব্লিউএইচও) । সংস্থাটির ইউরোপ ইউনিট সতর্ক করে জানিয়েছে,বিশ্বজুড়ে ওমিক্রনের বাড়বাড়ন্ত আরও বিপজ্জনক পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে পারে । এদিকে কলকাতাসহ সারা দেশে ক্রমাগত বাড়ছে করোনা সংক্রমণ । মুম্বাই এবং দিল্লিতে করোনার দ্রুত গতির মধ্যে পশ্চিমবঙ্গেও কার্যত করোনার বিস্ফোরণ ঘটেছে । এরাজ্যে বিগত ২৪ ঘন্টায় ৯০৭৩ টি করোনার নতুন কেস রিপোর্ট করা হয়েছে । এদিকে কলকাতায় আন্তর্জাতিক বইমেলা আয়োজনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা ।
মঙ্গলবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সিনিয়র এমারজেন্সি আধিকারিক ক্যাথরিন স্মলউড বলেছেন,’এই পরিস্থিতে ওমিক্রন যত বেশি ছড়াবে, তার রূপ তত বেশি বদলে যাবে । এখন এটি মারাত্মক হয়ে উঠেছে । এটি মৃত্যুর কারণও হতে পারে ।’ ওমিক্রনের ক্রমবর্ধমান সংক্রমণের হার বিপরীত প্রভাব ফেলতে পারে বলে তিনি জানিয়েছেন । স্মলউড বলেছেন,’এটি যত বেশি ছড়াবে, তত বেশি এটি তৈরি হবে। এরই মধ্যে নতুন ভ্যারিয়েন্টের বিকাশ ঘটতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে । এখন তা মারাত্মক রূপ নিয়েছে । এর ফলে মৃত্যুও হতে পারে । তবে সেটা ডেলটার থেকে কিছু বেশি অথবা কম ।’
প্রসঙ্গত, ইউরোপেই একশ মিলিয়নেরও বেশি করোনা আক্রান্ত হয়েছে । শুধুমাত্র ২০২১ সালের শেষ সপ্তাহে ৫০ লাখেরও বেশি পজিটিভ রিপোর্ট নথিভুক্ত করা হয়েছে । এদিকে মঙ্গলবার কর্মী সংকটের মুখে পড়তে হয়েছিল যুক্তরাজ্যের হাসপাতালগুলোকে । সেখানে প্রথমবারের মতো দৈনিক করোনা রোগীর সংখ্যা ২ লাখ ছাড়িয়েছে । এরপর আরও রোগী হাসপাতালে এলে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে ।
ইউরোপের পরিস্থিতি প্রসঙ্গে স্মলউড বলেন,’আমরা খুবই বিপজ্জনক সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। পশ্চিম ইউরোপে আমরা সংক্রমণের খুব দ্রুত বিস্তার দেখতে পাচ্ছি ।’ তিনি বলেন,’ওমিক্রন সংক্রমণে আক্রান্ত ব্যক্তিদের ডেল্টার তুলনায় হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার ঝুঁকি কম, তবে সামগ্রিকভাবে এই নতুন রূপটি আরও বেশি বিপজ্জনক হতে পারে কারণ এর সংক্রমণের হার বেশি ।’ তিনি জানিয়েছেন,যখন এর রোগীর সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পায়, তখন তারা অনেক মানুষকে আক্রান্ত করতে পারে । এমনকি ওই সমস্ত আক্রান্তদের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুও হতে পারে বলে জানিয়েছেন ক্যাথরিন স্মলউড ।
বিশ্ব ও দেশের সঙ্গে এরাজ্যেও লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা । জানা গেছে, কলকাতা পুলিশের ৮৩ জন কর্মী কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়েছেন । এদের মধ্যে অনেকেই আইপিএস পদমর্যাদার অফিসারও রয়েছেন । এছাড়া কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেও হাসপাতালের চিকিৎসক ও কর্মীসহ শতাধিক মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন । উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজে চিকিৎসক ও নার্সসহ ২৫ জন মেডিক্যাল স্টাফেরও করোনা পজিটিভ রিপোর্ট এসেছে ।
এদিকে, কোভিড-১৯-এর প্রকোপ বাড়লেও ৩১ জানুয়ারি থেকে ৪৫তম কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলা আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন আয়োজকরা। গত বছর মহামারীর কারণে বইমেলা বাতিল করা হয়েছিল । পাবলিশার্স অ্যান্ড বুক সেলার্স গিল্ডের সভাপতি ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায় সংবাদ সংস্থাকে বলেন, ‘আমরা মেলা আয়োজনের জন্য উন্মুখ ৷ আমি সল্টলেকের সেন্ট্রাল পার্কের মেলার মাঠের ব্যবস্থা তদারকি করছি । আমরা প্রস্তুতি বন্ধ করিনি ।’।