এইদিন ওয়েবডেস্ক,মালদা,০২ ডিসেম্বর : ফের পুরনো দলেই ফিরতে চলেছেন মৌসম বেনজির নুর ও আবু নাসের খান চৌধুরি ওরফে লেবু ! এমনই জল্পনা উসকে দিলেন মালদহ জেলার জাতীয় কংগ্রেস সভাপতি তথা মালদহ দক্ষিণের সাংসদ আবু হাসেম খান চৌধুরি ওরফে ডালু । তিনি বলেন, ‘বরকত গনি খান চৌধুরির বাড়ি মালদহের কোতোয়ালি ভবন হল কংগ্রেসের প্রতীক । এখান থেকে যাঁরা কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে চলে গিয়েছিলেন । ফের তাঁরা কংগ্রেসেই ফিরে আসবেন । সেটা নিয়ে পরিবারের মধ্যে আলোচনা চলছে ।’
রবিবার মালদহ জেলার কালিয়াচকের জালালপুরে কংগ্রেসের উদ্যোগে নববর্ষ উদযাপন করা হয় । সেখানে উপস্থিত হয়েছিলেন কংগ্রেস সাংসদ আবু হাসেম খান চৌধুরি, কালিয়াচকের কংগ্রেস সভাপতি মতিউর রহমান, জালালপুর এলাকার প্রবীণ কংগ্রেস নেতা খেজামুদ্দিন আহমেদ প্রমুখ । এই উপলক্ষে নতুন ইংরেজি বছরের ক্যালেন্ডার উদ্বোধন করেন সাংসদ ডালু । সেই ক্যালেন্ডার বাড়ি বাড়ি বিতরণের নির্দেশ দেন তিনি ।
এদিন ওই অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসে আবু হাসেম খান চৌধুরি সাংবাদিকদের বলেন, ‘লেবুদা সুইজারল্যান্ডে ছিলেন । ফিরে এসে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন । পরে মৌসমও তৃণমূলে গিয়েছিল । ওদের ফের ফিরে আসা নিয়ে একটা আলোচনা চলছে । মালদহ কংগ্রেসের রাশ আবার কোতোয়ালি ভবনের হাতেই থাকবে । সেই লক্ষ্যেই আমরা এগোচ্ছি ।’ তিনি দাবি করেন,’মৌসম ও লেবুদা কংগ্রেসে ফিরবেন । ফের কোতোয়ালি ভবন থেকেই মালদহ জেলায় কংগ্রেস পরিচালিত হবে ।’ তবে এটা আলোচনা পর্যায়ে রয়েছে বলে দাবি করেন বর্ষীয়ান এই কংগ্রেস নেতা ।
প্রসঙ্গত,২০১৫ সালে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেন আবু নাসের খান চৌধুরি ওরফে লেবু । এর ঠিক ৪ বছর পর তাঁর ভাগনি মৌসম বেনজির নুরও ঘাসফুল শিবিরের পথে পা বাড়ান । তৃণমূলের রাজ্যসভার টিকিটে সাংসদ হন মৌসম । তাঁকে পশ্চিমবঙ্গ মহিলা কমিশনের ভাইস চেয়ারপার্সন করা হয় । এমনকি মৌসমকে তৃণমূলের মালদা জেলার সভাপতি নির্বাচিত করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । কিন্তু সম্প্রতি জেলা সভাপতির পদ থেকে মৌসমকে সরিয়ে দেয় তৃণমূল । তারপর থেকে মৌসমকে দলের কর্মসূচিতে সেভাবে দেখা যায় না । অন্যদিকে মৌসমের লেবুমামা তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর থেকেই তাঁকে সেভাবে কখনও সক্রিয়ভাবে দেখা যায়নি । এদিকে ইদানিং কোতোয়ালি ভবনের ক্ষমতা অনেকটাই হ্রাস করে দিয়েছে শাসকদল ।
আবু হাসেম খান চৌধুরি বলেন, ‘কোতোয়ালি থেকেই মালদহ দখল করবে কংগ্রেস । ফের জেলার রাশ থাকবে কংগ্রেসের হাতে। আলোচনা চলছে । মৌসম-লেবু কংগ্রেসেই ফিরবেন । মালদহের রাজনীতি নিয়ন্ত্রিত হবে কোতোয়ালি থেকেই ।’ যদিও গনির ভাগনি তথা রাজ্যসভার সাংসদ মৌসম নুর বলেন,’এই বিষয়ে আমার সঙ্গে কারও আলোচনা হয়নি। আমার কিছু জানা নেই।’
প্রসঙ্গত,বরকত গনি খান চৌধুরির মৃত্যুর পর মালদহ জেলা কংগ্রেসে ভাঙন শুরু হয় । লেবু, শেহনাজ, মৌসমরা একে একে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন । দু’ভাগ হয়ে যায় কোতোয়ালি ভবন । আর গনি খানের পরিবার দ্বিধাবিভক্ত হতেই জেলার রাজনীতিতে কার্যত প্রাসঙ্গিকতা হারিয়ে ফেলে জাতীয় কংগ্রেস । তাই দলকে খাড়া করতে এবার পরিবারকে একত্রিত করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছেন আবু হাসেম খান চৌধুরি । এখন তিনি কতটা সফল হন সেটাই লক্ষ্যণীয় । সেই দিকেই তাকিয়ে আছে রাজ্যের রাজনৈতিক মহল ।।