দিব্যেন্দু রায়,পূর্ব বর্ধমান,০১ জানুয়ারী : দীর্ঘ প্রায় দু’বছর কোভিড বিধিনিষেধ পালনের পর পুরোপুরি ছন্দে ফিরেছে জীবন । ফের শুরু হয়েছে বাস-ট্রেন চলাচল । খুলেছে স্কুল-কলেজ । শুরু হয়েছে মিটিং, মিছিল, খেলাধুলা,জমায়েত ৷ এলাকার বাজারগুলিতে স্বাভাবিক ভিড় । এদিকে ওমিক্রনের সঙ্গে এসে গেছে করোনার তৃতীয় ঢেউ । দেশ জুড়ে হঠাৎ করে বাড়তে শুরু করেছে কোভিড-১৯ আক্রান্তের সংখ্যা । পিছিয়ে নেই পূর্ব বর্ধমান জেলাও ৷ জেলা প্রশাসনের প্রকাশিত দৈনিক বুলেটিন থেকে জানা গেছে,বিগত ২৪ ঘন্টার মধ্যে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা একলাফে ৩ গুন বেড়ে গেছে । শুক্রবার বিকেল ৫ টা পর্যন্ত যেখানে নতুন কোভিড পজিটিভ রোগীর সংখ্যা ১৫ জন ছিল,সেখানে এদিন বিকেল ৫ টা পর্যন্ত সেই সংখ্যাটা এসে দাঁড়িয়েছে ৪৮-এ । এদিকে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরে আসা মানুষের মধ্যে কোভিড বিধিনিষেধ পালনে সেভাবে আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না । সামাজিক দূরত্ব তো দূর,সিংহভাগ মানুষের মুখে মাস্ক পর্যন্ত নেই । এখন এইভাবে দ্রুতহারে কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকলে প্রশাসনকে ফের কড়াকড়ির রাস্তায় হাঁটতে হতে পারে বলে মনে করেছেন বিশেষজ্ঞরা ।
পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে প্রকাশিত দৈনিক কোভিড সংক্রান্ত রিপোর্ট থেকে জানা গেছে,এদিন পূর্ব বর্ধমান জেলায় নতুন করে যে ৪৮ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন তার মধ্যে রয়েছে ভাতার ব্লকে ২ জন,বর্ধমান-১ ব্লকে ২ জন,গলসি-১ ব্লকে ২ জন,জামালপুরে ১ জন,কালনা-১ ব্লকে ২ জন,কাটোয়া-১ ব্লকে ১ জন,মন্তেশ্বরে ২ জন, মেমারি-১ ব্লকে ৩ জন,মঙ্গলকোটে ১ জন, পূর্বস্থলী-১ ও ২ ব্লকে ১ জন করে রোগীর কোভিড পজিটিভ রিপোর্ট এসেছে । এছাড়া জেলার পুর এলাকাগুলির মধ্যে শুধুমাত্র বর্ধমান পুরসভাতেই ১৭ জন আক্রান্তের সন্ধান পাওয়া গেছে । বাকিদের মধ্যে দাঁইহাট পুর এলাকায় ১ জন, কাটোয়া পুরসভায় ২ জন ও মেমারি পুরসভায় ১ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছে । মোট আক্রান্তদের মধ্যে ৪৬ জন উপসর্গবিহীন ও ২ জন উপসর্গ যুক্ত ।
এদিকে এই পরিস্থিতির মাঝেও যথারীতি স্বাভাবিক জীবনযাপন চলছে । হাটেবাজারে তিল ধারনের জায়গা নেই । কোনও প্রকার সুরক্ষা ছাড়াই ঘুরে বেড়াতে দেখা যাচ্ছে সাধারন মানুষকে । থেমে নেই রাজনৈতিক কর্মকান্ডও । চলছে মিটিং মিছিল । শনিবার রাজ্য জুড়ে মহা সমারোহে পালিত হল শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠা দিবস । এদিন সকাল থেকে প্রতিটি ব্লক জুড়ে মিছিল,সভা কিছুই বাদ গেল না । অনুষ্ঠানে নেতাদের মুখে মাস্ক থাকলেও কর্মীরা ছিলেন কার্যত মাস্কবিহীন । এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে করোনার তৃতীয় ঢেউ আটকানো অত্যন্ত কঠিন হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন সাধারন মানুষদের একাংশ । এখন কোভিডের তৃতীয় ঢেউ রুখতে প্রশাসন কি পদক্ষেপ নেয় সেই দিকেই তাঁরা তাকিয়ে আছেন ।।