এইদিন ওয়েবডেস্ক,কানপুর(উত্তরপ্রদেশ),২৭ ডিসেম্বর : কানপুরের ত্রিমূর্তি প্রাইভেট লিমিটেডের মালিক পীযূষ জৈনকে রবিবার গভীর রাতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে । কানপুর এবং কনৌজ থেকে ২০০ কোটি টাকার বেশি নগদ এবং সোনা ও রূপা পাওয়ার পরে ডিজিজিআই (Directorate General of GST Intelligence)-এর দল এই পদক্ষেপ নিয়েছে । কনৌজ থেকেই পীযূষ জৈনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে খবর । পীযূষ জৈনের দুই ছেলেও তদন্তকারী দলের হেফাজতে রয়েছেন । এদিকে তাঁর বাড়ি থেকে গুপ্তধন পাওয়ার প্রক্রিয়া রবিবারও অব্যাহত ছিল । নগদ টাকা,সোনা-রুপোর পাশাপাশি বিভিন্ন নথিপত্র মিলে প্রায় ১০০০ কোটি টাকার সম্পদ বের করা হয়েছে পীযূষ জৈনের বাড়ি থেকে । আর এই বিপুল পরিমান সম্পত্তি কানপুর এবং কনৌজে তাঁর বাড়ির দেয়াল,সেলার, তাক এবং লকার ভর্তি করে রেখেছিল চতুর ওই ব্যাবসায়ী । ডিজিজিআই তদন্তকারীদের সন্দেহ বাড়ির চোহদ্দির মধ্যে গোপন কুঠুরিতে বিপুল ধনসম্পদ লুকিয়ে রাখা থাকতে পারে । সেই গুপ্তধনের সন্ধান চালাতে এক্স-রে মেশিন দিয়ে তল্লাশি চালানোর পরিকল্পনা করেছে ডিজিজিআই । এর পাশাপাশি মাটি ও দেয়ালের আড়ালে থাকা মূল্যবান জিনিসপত্র খুঁজে পেতে প্রত্নতত্ত্ব বিশেষজ্ঞ দলের সহায়তাও নেওয়া হয়েছে । সোমবার লখনউ থেকে কনৌজ পৌঁছবে এই দল । এদিকে জানা যাচ্ছে, মানুষের চোখে ধুলো দিতে কোনও দিন বিলাসবহুল গাড়ি কেনেনি পীযূষ জৈন । তার পরিবর্তে তিনি নিজে একটা স্কুটারে চড়ে ঘোরাঘুরি করতেন ।
জানা গেছে,কনৌজে পীযূষের বাড়ির দেয়ালের ভিতর থেকে সোনাদানা আর মাটির নিচে থেকে বেড়িয়ে আসছে নগদ টাকার বান্ডিল। রবিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ছিপ্পট্টিতে অবস্থিত তাঁর রহস্যময় বাড়ি থেকে ১২৫ কেজি সোনা পাওয়া গেছে । ল্যাপটপ ব্যাগের থেকে কিছুটা বড় ২০ টি ব্যাগের মধ্যে রাখা ছিল ওই সোনার বাটগুলি । এছাড়া ৯ টি বস্তা ভর্তি নগদ টাকা পাওয়া গেছে । ডিজিজিআই অফিসাররা ৫০ টিরও বেশি ব্যাগে ৩৫০ টি ফাইল এবং ২৭০০ টি নথি উদ্ধার করেছেন। পীযূষের বেডরুমের খাটের ভেতর থেকে নগদ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে । রুমের খাটের নিচে লকারের সন্ধান পাওয়া গেছে । এখনও পর্যন্ত কানপুরে চারটি, কনৌজে সাতটি, মুম্বাইতে দুটি, দিল্লিতে একটি এবং দুবাইয়ে দুটি সম্পত্তির হদিশ পেয়েছে ডিজিজিআই । এসব সম্পত্তির প্রায় সবগুলোই কেনা হয়েছে হাই প্রোফাইল এলাকায় ।
জানা গেছে,ডিজিজিআই অফিসাররা কনৌজে পীযূষের বাড়ি থেকে ৫০০ টি চাবি উদ্ধার করেছে । তালা খুলতে এক ডজন কারিগরের সাহায্য নেয় ভিজিল্যান্স টিম । তার পরেও যে সমস্ত তালা খোলা যায়নি সেগুলি কাটার দিয়ে কাটা হয় । পিযুষের একটি গোডাউনে আতর তৈরির কম্পাউন্ড পাওয়া গেছে বলে জানা গেছে । এদিকে যার বাড়ি থেকে বের হওয়া টাকার বান্ডিল গুনতে গিয়ে ঘাম ছুটছে ডিজিজিআই অফিসাদের,গুপ্তধনের হদিশ পেতে সাহায্য নিতে হচ্ছে বিভিন্ন বিভাগের বিশেষজ্ঞদের, সেই পীযূষ জৈনের বাড়িতে কোনও বিলাসহুল গাড়ির সন্ধান পাওয়া যায়নি । তদন্ত চলাকালীন ডিজিজিআই অফিসাররা যখন তাঁকে বাইকে চড়ে বাড়ি ফিরতে দেখলেন তখন তাঁরা কার্যত অবাক হয়ে যান । জানা গেছে,পীযূষের কাছে ১৫ বছরের পুরনো একটি কোয়ালিস(qualis) গাড়ি ছিল । পরিবারের চাপে পড়ে শেষে ওই কোয়ালিস বিক্রি করে সম্প্রতি ইনোভা গাড়ি কিনেছিলেন । তবে তিনি নিজে কখনও ওই গাড়িতে চড়েননি । বরঞ্চ ঘুরে বেড়িয়েছেন পুরনো একটি স্কুটারে চড়ে ।।