এইদিন ওয়েবডেস্ক,বাঁকুড়া,২৬ ডিসেম্বর : কলকাতা পুরসভার ভোট পর্ব মিটে গেছে । হয়ে গেছে বোর্ড গঠনও । এবার রাজ্যের জেলাগুলিতে একে একে সম্পন্ন হবে পুরভোট । তার আগেই “বহিরাগত হাটাও,বিষ্ণুপুর বাঁচাও” পোস্টার ঘিরে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে বাঁকুড়া জেলায় । রবিবার সকালে বিষ্ণুপুর পুরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের অলিতে গলিতে ওই পোস্টার দেখতে পান স্থানীয় বাসিন্দারা । শুধু বিষ্ণুপুর বাঁচানোর বার্তাই নয়, কাউকে উদ্দেশ্য করে লেখা হয়েছে একরাশ দুর্নীতির পরিসংখ্যান । এদিকে এই পোস্টার কান্ডকে ঘিরে রীতিমত রাজনৈতিক তর্জা শুরু হয়ে গেছে শাসক ও বিরোধী দলগুলির মধ্যে । তৃণমূল কংগ্রেসের দাবি, এটা বিরোধীদলের চক্রান্ত । অন্যদিকে এই ঘটনাকে আদপে তৃণমূল কংগ্রেসের গোষ্ঠী কোন্দলের বহিঃপ্রকাশ বলে মনে করছে বিজেপি ।
স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে,রবিবার সকালে বিষ্ণুপুর পুরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের ঘুম ভাঙতেই দেখেন এলাকার অলিতে গলিতে সাঁটানো হয়েছে সবুজ কাগজে কালো রঙের হরফে লেখা পোস্টার । পোস্টারের শিরোনামে লেখা আছে, ‘বহিরাগত হাটাও, বিষ্ণুপুর বাঁচাও’ । সাবধান বিষ্ণুপুরবাসী ।’ তার ঠিক নিচে কাউকে উদ্দেশ্য করে লেখা হয়েছে, ‘এই বহিরাগত একটা পঞ্চায়েত লুটে , বালি খাদান লুটে, কয়লা মাফিয়া গিরি করে, তোলাবাজি করে, আজ কলকাতায় ৩ টি ফ্ল্যাট, দুর্গাপুরে ৫ টি ফ্ল্যাট, পানাগর ৯৮ বিঘা জমি, ৭৩ টি ডাম্পার, আর ৪ কেজি ৩০০ গ্রাম সোনা ও বহু হীরের গয়নার মালিক হয়েছে । এদের লক্ষ্য এবার বিষ্ণুপুর লুট । এদের লুন্ঠনের হাত থেকে বিষ্ণুপুর বাঁচানোর দায়িত্ব কিন্তু আপনাদের ।’ এরপর একেবারে নিচে লেখা মোটা হরফে “বহিরাগত হাটাও,বিষ্ণুপুর বাঁচাও ।”
এই পোস্টার প্রসঙ্গে বিজেপি বিষ্ণুপুর নগর মন্ডল সভাপতি উত্তম সরকার বলেন,’হিসাবমত বহিরাগত বলতে বিষ্ণুপুর পুরসভার বর্তমান প্রশাসক অর্চিতা বিদকেই বোঝানো হয়েছে বলে আমার মনে হয় । কারন তন্ময় ঘোষ বিগত বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির প্রার্থী ছিলেন । আর নির্বাচনের প্রচারের সময় ‘বহিরাগত’ শব্দটা তাঁকে বারবার বলতে শুনেছি । তখন তিনি মূলত বিষ্ণুপুর পুরসভার প্রশাসক তথা তৎকালীন তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী অর্চিতা বিদকেই বহিরাগত তকমা দিয়ে নিশানা করতেন । আমার মনে হয় বিষ্ণুপুর পুরসভার বর্তমান প্রশাসকের উদ্দেশ্যেই এই পোস্টার সাঁটানো হয়েছে । এটা তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের বহিঃপ্রকাশ । এর সঙ্গে বিজেপির কোনও সম্পর্ক নেই ।’
যদিও পোস্টার প্রসঙ্গে তৃণমূলের বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অলক মুখোপাধ্যায় এবং বিষ্ণুপুর পৌরসভার প্রশাসক অর্চিতা বিদের কাছে জানতে চাইলে তাঁরা কোনও মন্তব্য করতে চাননি । তবে বাঁকুড়া জেলা তৃণমূল কংগ্রেস চেয়ারপার্সন তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী শ্যামল সাঁতরা এই বিষয়ে বলেন, ‘কোথায় কি পোস্টার পড়েছে তা আমার জানা নেই । তবে শুনে মনে হচ্ছে এটা বিরোধীদের চক্রান্ত । বিরোধীরা এই ধরনের কার্যকলাপ করে মানুষের দৃষ্টি আকর্ষন করার চেষ্টা করছে । তবে এই ভাবে ভোট পাওয়া যায় না ।’।