দিব্যেন্দু রায়,ভাতার(পূর্ব বর্ধমান),১৭ ডিসেম্বর : বছর সতেরোর এক কিশোরীর দাদার সঙ্গে জনৈক এক টোটোচালক যুবকের পরিচয় ছিল । সেই সুত্রে টোটোচালকের সঙ্গে কথাবার্তা হত কিশোরীর । দাদার পরিচিত হওয়ায় যুবককে বিশ্বাস করে সে নিজের ফোন নম্বরও দিয়েছিল । বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঘুরতে যাওয়ার নাম করে কিশোরীকে ফোনে ডাকে ওই যুবক । কিন্তু তার কু’মতলব বুঝতে পারেনি কিশোরী । তার উপর ভরসা করে টোটোয় চড়ে মেয়েটি ঘুরতে গিয়েছিল । আর এই বিশ্বাসের চরম মূল্য চোকাতে হল ওই কিশোরীকে । তাকে নির্জন জায়গায় নিয়ে গিয়ে গনধর্ষনের অভিযোগ উঠল টোটোচালক ও তার বন্ধুর বিরুদ্ধে । ঘটনাটি পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতার থানা এলাকার । কিশোরীর পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার দিন রাতেই টোটোচালককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ । পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতের নাম সাহিরুদ্দিন শেখ শেখ(১৯) । তার বাড়ি ভাতার থানার বলগোনা গ্রামে । শুক্রবার ধৃতকে বর্ধমান আদালতে তুলে পুলিশ ৫ দিনের জন্য নিজেদের হেফাজতে চেয়ে আবেদন জানায় । এদিকে ঘটনার পর থেকেই বেপাত্তা অপর অভিযুক্ত ফজল শেখ । পুলিশ তার সন্ধান চালাচ্ছে ।
জানা গেছে,ভাতারের পাটনা গ্রামে মামার বাড়িতে থাকে ওই কিশোরী । সে নবম শ্রেণিতে পড়াশোনা করে । বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গ্রামের মুদিখানা দোকানে গিয়েছিল মেয়েটি । তারপর হঠাৎ সে উধাও হয়ে যায় । মামার বাড়ির লোকজন খোঁজাখুজি করে তার কোনও সন্ধান পায়নি । শেষে রাতের দিকে ভাতার থানা থেকে ঘটনার কথা জানতে পারে কিশোরীর পরিবার ।
নির্যাতিতা কিশোরী জানিয়েছে,সে যখন দোকান গিয়েছিল সেই সময় তার দাদার পরিচিত টোটোচালক সাহিরুদ্দিনের ফোন আসে । সাহিরুদ্দিন তাকে টোটোয় চড়ে ঘুরতে যাওয়ার নাম করে ডাকে । তার কথায় বিশ্বাস করে সে পাটনা মোড়ে আসতেই দেখে বর্ধমান-কাটোয়া রাজ্য সড়কে টোটো নিয়ে অপেক্ষা করছে সাহিরুদ্দিন। তার সঙ্গে ফজল শেখ নামে আরও এক যুবকও ছিল বলে জানায় ওই কিশোরী । তার অভিযোগ, তারপর সাহিরুদ্দিন তাকে পাটনা মোড় থেকে প্রায় ৯ কিলোমিটার দুরে আমারুণ গ্রামের কাছে একটি নির্জন মাঠে নিয়ে যায় । সেখানে দু’জনে মিলে পাশবিক অত্যাচার চালায় বলে অভিযোগ মেয়েটির ।
জানা গেছে,গনধর্ষনের পর কিশোরীকে মাঠের মধ্যেই ফেলে পালায় টোটোচালক ও তার বন্ধু । তারপর মেয়েটি কোনও রকমে পায়ে হেঁটে ভাতার বাজারের কাছাকাছি আসে । স্থানীয় এক ব্যক্তির নজরে পড়ে গেলে তিনি জিজ্ঞসাবাদ করাতেই ঘটনার কথা খুলে বলে মেয়েটি । এরপর ওই ব্যক্তি থানায় ফোন করে ঘটনার কথা জানালে পুলিশ কিশোরীকে উদ্ধার করে নিয়ে যায় । কিশোরীকে ভাতার স্টেট জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হয় । ততক্ষণে খবর পেয়ে মেয়েটির মামার বাড়ির লোকজন থানায় চলে আসে । গনধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করা হয় । অভিযোগ পেতেই রাতের দিকে বলগোনা বাজার থেকে সাহিরুদ্দিন শেখকে গ্রেফতার করে পুলিশ ।
পুলিশ সুত্রে খবর,প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে কিশোরীকে ধর্ষণের কথা কবুল করেছে ধৃত টোটোচালক । সে জানিয়েছে,বন্ধু ফজল শেখের আবদার মেটাতেই সে কিশোরীকে ধর্ষণের পরিকল্পনা করেছিল । এদিন নির্যাতিতা কিশোরীর ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছে পুলিশ ।।