এইদিন ওয়েবডেস্ক,নয়া দিল্লি,১৬ ডিসেম্বর : ২০১৬ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রাশিয়া হস্তক্ষেপ করেছিল বলে অভিযোগ তুলেছিল আমেরিকা । তাই রাশিয়াকে শাস্তি দেওয়ার জন্য ঠিক তার পরের বছর কাউন্টারিং আমেরিকাস অ্যাভারসারিজ থ্রু সাংশন অ্যাক্ট (CAATSA) পাস করা হয়েছিল । ওই আইন অনুযায়ী যে দেশ রাশিয়ার কাছ থেকে এস-৪০০ মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেম কিনবে তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার কথা । এই ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা কেনার জন্য ২০২০ সালের ডিসেম্বরে রাশিয়ার সঙ্গে একটি চুক্তি করায় তুরস্কের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল ট্রাম্প প্রশাসন । এদিকে একই ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা কেনার জন্য রাশিয়ার সাথে ৫.৫ বিলিয়ন ডলারের চুক্তি করেছে ভারত । তাই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে,তাহলে কি এবারে ভারতের পালা ? নাকি আমেরিকা তার কৌশলগত স্বার্থ বিবেচনা করে ভারতকে ছাড় দেবে ? অবশ্য দ্বিতীয় বিকল্পটির সম্ভাবনা প্রবল বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞ মহল । তাঁদের মতে দক্ষিণ এশিয়া, দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া ও পারস্পরিক স্বার্থ রয়েছে এমন সব অঞ্চলে চীনকে রুখতে ভারতকে একান্ত প্রয়োজন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের । তাই রাশিয়ার কাছ থেকে ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা কেনার জন্য ভারতের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অবনতি হোক এটা কখনই চাইবে না বাইডেন প্রশাসন ।
রাশিয়ার এস-৪০০ মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেমকে সবচেয়ে উন্নত ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা । এটিকে আমেরিকার সেরা এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম প্যাট্রিয়ট মিসাইলের সাথে তুলনা করা হয় । রাশিয়ার এই ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা কেনার জন্য অনেক আগেই চুক্তি স্বক্ষর করেছে ভারত । ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা গত সপ্তাহে জানিয়েছেন,এই মাস থেকেই এস-৪০০ সরবরাহ শুরু হবে ।
যদিও রাশিয়ার সঙ্গে চুক্তির আগেই তৎকালীন ট্রাম্প প্রশাসন ভারতকে এই বিষয়ে সতর্ক করেছিল । কিন্তু ভারত তার সার্বভৌমত্বের কথা বলে তা উপেক্ষা করে । ভারতের বিশিষ্ট কূটনীতিক বিজয় নাম্বিয়াকে এনিয়ে এক আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থার তরফ থেকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘রাশিয়ার সাথে ভারতের প্রতিরক্ষা সম্পর্ক নতুন কিছু নয় । আমি মনে করি না যে ভারত এ ব্যাপারে কোনো বিদেশি দেশের শর্ত মেনে নেবে । এই চুক্তি ভারতের স্বার্থে । আমেরিকা যদি ব্যবস্থা নেয় তাহলে তার মোকাবিলা করতে প্রস্তুত ভারত । তবে ভারতের আশা এমন কিছু হবে না ।’
এদিকে গত সোমবার রাশিয়ার উপ-প্রধানমন্ত্রী ইউরি বোরিসভের স্পুটনিক নিউজে একটি বিবৃতি প্রকাশ করে জানিয়েছেন,’ভারত ইচ্ছা প্রকাশ করলে রাশিয়ান বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এস-৫০০ কেনার ক্ষেত্রে প্রথম দেশ হতে পারে ।’ অন্যদিকে গত মঙ্গলবার ভারতে নতুন মার্কিন রাষ্ট্রদূতের জন্য মনোনীত এরিক গারসেটি জানিয়েছেন,তিনি ভারতের সাথে সম্পর্ক জোরদার করার চেষ্টা করবেন । তবে এস-৪০০ কেনা নিয়ে ভারতের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে তিনি স্পষ্ট করে কিছু বলেননি । তিনি বলেন, ‘এক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা বা ছাড় দেওয়ার বিষয়ে আগাম অনুমান করা সম্ভব নয় ।’।