প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,১৪ ডিসেম্বর :বর্ধমানের পৌরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর নতুন চেয়ারপার্সন নিয়োগ করা হোল প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ মমতাজ সঙ্ঘমিতাকে। রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর এই নিয়োগ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি মঙ্গলবার বিকালে পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক ও বর্ধমান পুরসভায় পাঠিয়ে দেয় । বেআইনি অর্থ লগ্নিকারী সংস্থার সঙ্গে আর্থিক লেনদেনে যুক্ত থাকার অভিযোগে কিছু সিবাআই গ্রেফতার করে ৪ মাস আগে পৌর প্রশাসক পদে নিয়েগ হওয়া প্রণব চট্টোপাধ্যায়কে ।তিনি এখন জেল হেপাজতে রয়েছেন ।তাঁর জায়গায় প্রাক্তন সাংসদ মমতাজ সংঘমিতাকে চেয়ারপার্সন করা হলেও তা নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিরোধীরা ।
রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর চলতি বছরের আগষ্ট মাসে বর্ধমান পৌরসভার জন্যে পাঁচ সদস্যের প্রশাসকমণ্ডলী গঠন করে। দীর্ঘদিন রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড থেকে ‘দূরে থাকা’ প্রাক্তন কাউন্সিলর প্রণব চট্টোপাধ্যায়কে তখন প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারপার্সন করা হয়েছিল । কিন্তু চার মাস অতিক্রান্ত হতে না হতেই গত বৃহস্পতিবার সিবিআই গ্রেফতার করে চিটফান্ড মামলার চার্জশিটে নাম থাকা প্রণব চট্টোপাধ্যায়কে । এরপর গত শনিবারই প্রণবকে সরিয়ে বর্ধমান পৌরসভার নতুন চেয়ারপার্সনের নাম ঘোষণা করা হবে তৃণমূলের তরফে ঘোষনা করা হয় । কে নতুন চেয়ারপার্সন হবেন তা নিয়ে দলীয় ও বিরোধী মহলে চর্চা তুঙ্গে উঠেছিল। শেষ পর্যন্ত দল ওই পদে প্রাক্তন সাংসদ তথা তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যের সংখ্যালঘু উন্নয়নের চেয়ারপার্সন মমতাজ সঙ্ঘমিতাকেই যোগ্য মনে করলেন ।
মমতাজ সঙ্ঘমিতা এদিন বলেন,’দল আমাকে যোগ্য মনে করে যে গুরুদায়িত্ব দিয়েছে তা আমি বর্ধমানবাসীর স্বার্থে নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করবো ।’ বর্ধমান পৌরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর ভাইস চেয়ারপার্সন আইনুল হক বলেন, ‘যোগ্য ব্যক্তিকেই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে । আমরা তাঁকে স্বাগত জানিয়েছি । শহরের উন্নয়নের জন্যে একসঙ্গে কাজ করব ।’
সিপিএমের ডাকসাইটে নেতা তথা রাজ্য বিধানসভার প্রাক্তন স্পিকার মনসুর হবিবুল্লাহর মেয়ে মমতাজ সঙ্ঘমিতা । তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতীকে ভোটে লড়ে তিনি ২০১৪ সালে বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ হয়েছিলেন । গত লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি প্রার্থী সুরিন্দর সিং আলুওয়ালিয়ার কাছে খুব অল্প ব্যবধানে তিনি হেরে যান । মমতাজ সঙ্ঘমিতাকে বর্ধমান পৌরসভার চেয়ারপার্সন করা নিয়ে এদিন কটাক্ষ করেছেন শহর বর্ধমানের বিজেপি নেতৃত্ব । বিজেপির সাংগঠনিক জেলার (বর্ধমান সদর) সাধারণ সম্পাদক সৌম্যরাজ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘পুরসভা চালানোর মতো বর্ধমান শহরে কোনও তৃণমূল নেতার খোঁজ পাওয়া গেল না এটাই আশ্চর্য্যের । নবনিযুক্ত চেয়ারপার্সনের গায়ে প্রথম দিন থেকে লেগে গেল ‘বহিরাগত’ তকমা’ ।’ সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অপূর্ব চট্টোপাধ্যায় বলেন,’বাইরে থেকে এসে বর্ধমান পৌরসভার প্রশাসন চালনো কোনভাবেই সম্ভব নয় ।’।